সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডের স্বীকৃতি দিয়ে আপিল বিভাগের রায়

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন) ১০ম গ্রেডে বেতন পাবেন বলে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করে এই রায় দেন।
শিক্ষকদের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার সালাহ উদ্দিন দোলন। তিনি জানান, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ থেকে প্রধান শিক্ষকরা দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদায় এই গ্রেডের সকল সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন বলেন, বর্তমানে প্রধান শিক্ষক পদটি দ্বিতীয় শ্রেণির হলেও তারা এতদিন ১১ ও ১২তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছিলেন, যেখানে দ্বিতীয় শ্রেণির অন্যসব চাকরিজীবী ১০ম গ্রেডে বেতন পান। বিসিএস থেকে প্রধান শিক্ষক পদে যারা আসেন, তারাও ১২তম গ্রেড পেতেন। এটি ছিল সীমাহীন অন্যায়। এটি সংবিধানের ২৯ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন ছিল। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর শিক্ষকরা তাদের ন্যায্য অধিকার পেলেন।
রিটকারী ছাড়া বাকিরা এ স্ট্যাট্যাস পাবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'খালি পদ হলো ৩২ হাজার। কর্মরত ৩০ হাজার। যেহেতু আপিল বিভাগের রায় বাধ্যকর। আমি মনে করি, সরকার এ বেনিফিটটা সবাইকে দেবে। যারা পিটিশনার হয়েছে তাদেরও, যারা পিটিশনার হতে পারেনি তারাও বেনিফিটটা পাবেন। আমরা আশা করতে পারি, সবাই ২০১৪ সালের ৯ মার্চ থেকে বেনিফিট দুটি পাবেন'।
তবে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত, প্রধান শিক্ষকরা নতুন কোনো দাবি উত্থাপন করবেন না বলে আপিল বিভাগে আন্ডারটেকেন দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি রিয়াজ পারভেজসহ ৪৫ জন প্রধান শিক্ষক হাইকোর্টে রিট করেন। তাদের আইনজীবী জানান, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদায় উন্নীত করার ঘোষণা দেন। সেই অনুযায়ী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করলেও পরবর্তীতে প্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১১তম এবং অপ্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করা হয়।
হাইকোর্ট ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এই বিষয়ে রায় দেন। তখন আদালত প্রধান শিক্ষকদের (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন) দশম গ্রেডে উন্নীত করার নির্দেশ দেন। তবে সরকার পক্ষ এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা বৃহস্পতিবার চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে।