২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক ও বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি ১৩ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত

বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দিয়ে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি ১৩ আগস্ট পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের আপিল বেঞ্চে তৃতীয় দিনের শুনানি শেষে এই মুলতবি আদেশ দেওয়া হয়।
শুনানিতে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, আপিল বিভাগ কি ২১ আগস্ট হামলা মামলার বিষয়ে ইন্টারপোলের তদন্ত প্রতিবেদন দেখতে পারে কিনা। তিনি আরও জানতে চান, মামলার দ্বিতীয় চার্জশিট বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের অবস্থান কী।
প্রধান বিচারপতি বলেন, 'সব কিছু পড়ার প্রয়োজন নেই। তাহলে দিনের পর দিন লেগে যাবে, কিন্তু মামলাটি শেষ হবে না।' এ সময় তিনি রাষ্ট্রপক্ষকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো চিহ্নিত করে উপস্থাপনের নির্দেশ দেন।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা জানতে চাই, কেন ইন্টারপোলের তদন্ত রিপোর্ট বিচারিক আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি।'
জবাবে রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, ইন্টারপোল কর্মকর্তা ফ্রেডি ব্রেড ফোর্ডের নাম সাক্ষী তালিকায় থাকলেও তিনি সাক্ষ্য দিতে আসেননি। সে কারণে প্রতিবেদনটি উপেক্ষিত ছিল।
এর আগে গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ২১ আগস্ট হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের পৃথক মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দেন। হাইকোর্ট ডেথ রেফারেন্স নাকচ করে এবং আসামিদের করা আপিল মঞ্জুর করে ওই রায় দেন।
ওই রায়ে বলা হয়, শুধু স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে অন্য আসামিদের সাজা দেওয়া যায় না। স্বীকারোক্তির ওপর ভিত্তি করে ষড়যন্ত্রও প্রমাণ করা যায় না। দ্বিতীয় চার্জশিট আমলে নেওয়া যায় না, কারণ এতে ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ১৯১বি প্রযোজ্য হয়নি। এটি শুধুমাত্র মুফতি হান্নানের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছিল, যা আইনের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়।
হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ মাসুদ।
আসামিপক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।