এনআইডি কার্যক্রম ইসির অধীনে রাখার দাবিতে ‘স্ট্যান্ড ফর এনআইডি’

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা নিজেদের অধীনে রাখতে 'স্ট্যান্ড ফর এনআইডি' কর্মসূচির অংশ হিসেবে মানববন্ধন করেছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে সকাল ১১টা থেকে এ মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু হয়।
মানববন্ধনে নির্বাচন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপসচিব মনির হোসেন বলেন, 'আগামী ১৮ তারিখের (মঙ্গলবার) মধ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩ বাতিল করে এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের অধীনে পুনর্বহাল করতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, '১৮ তারিখের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে ১৯ তারিখ (বুধবার) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠ পর্যায়ের সকল কার্যালয়ে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে।'
গতকাল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তারা ঘোষণা দেন, আজ সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তারা দুই ঘণ্টার জন্য কর্মবিরতি পালন করবেন এবং ইসি ভবনের সামনে মানববন্ধন গঠন করবেন। তাদের এই কর্মসূচির মূল দাবি—জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংক্রান্ত সেবা যেন ইসির অধীনেই বহাল থাকে।
উপসচিব মনির গতকাল ইসি ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, 'ভোটার তালিকা ও এনআইডি সেবা অবশ্যই একই প্রতিষ্ঠানের অধীনে থাকা উচিত। ইসিও চায় ভোটার তালিকা ইসির অধীনে থাকুক। কিন্তু আমরা দেখেছি, সরকার এনআইডি সেবার জন্য আলাদা একটি কমিশন গঠন করেছে।'
মনির আরও বলেন, 'এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছি এবং ইসিও সরকারের কাছে বিষয়টি অবহিত করেছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর ফলাফল দেখতে পাইনি। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামীকাল বুধবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ইসি ভবনের সামনে "এনআইডির জন্য দাঁড়াও" কর্মসূচি পালন করব।'

এর আগে, গত ৬ মার্চ এনআইডি সেবা কার্যক্রম ইসির অধীনে রাখার দাবিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কক্ষের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
পরবর্তীতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেন তারা।
সরকার জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন ও জন্মনিবন্ধনসহ নাগরিকদের সকল নিবন্ধন সেবা একটি পৃথক কমিশনের অধীনে নিতে 'সিভিল রেজিস্ট্রেশন কমিশন' নামক একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়।
বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে পরিচালিত হচ্ছে, আর জন্মনিবন্ধন সেবা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতায় রয়েছে।
নতুন নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু করতে সরকার 'সিভিল রেজিস্ট্রেশন (কমিশন) অধ্যাদেশ, ২০২৫' নামে একটি খসড়া আইন প্রস্তুত করেছে। এই খসড়া পর্যালোচনার জন্য গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রথম সভা ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আইন অনুবিভাগ) এই সভার সভাপতিত্ব করেন।