পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে অ্যাসেট রিকভারি এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করবে সরকার

ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও অন্যান্য উপায়ে দেশ থেকে পাচার হওয়া কোটি কোটি টাকা ফিরিয়ে আনতে সরকার অ্যাসেট রিকভারি এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করবে সরকার।
এছাড়াও এসব অর্থ উদ্ধারের প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে শিগগিরই একটি বিশেষ আইন প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধার, গৃহীত পদক্ষেপ ও চ্যালেঞ্জ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের সভা শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এ কথা জানান শফিকুল আলম।
বর্তমানে সংসদ না থাকায় আইনটি কীভাবে প্রণয়ন করা হবে, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি নির্ধারিত পদ্ধতি হিসেবে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে এটি করা হবে।
সভায় আর্থিকখাতে জালিয়াতি, দুর্নীতিসহ সরকারি চুক্তিতে অনিয়মের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে কমপক্ষে ৭৫ বিলিয়ন থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার চুরি হয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, এসব অর্থ প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকংসহ অন্যান্য ট্যাক্সহেভেন অফশোর দেশগুলোতে পাচার হয়েছে।
এসব অর্থ ফেরত আনতে অগ্রাধিকারভিত্তিতে ১১টি কেস নিষ্পত্তি করতে আন্তর্জাতিক ল' ফার্মস ও ফান্ডারস নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব কেসের মধ্যে শেখ হাসিনা ও তার পরিবার, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপসহ বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের নাম রয়েছে।
সভায় উপস্থাপন করা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের মধ্যে এই ১১টি কেসের সঙ্গে সম্পৃক্ত সম্পদ ফ্রিজ (অবরুদ্ধ) করা হবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এসব কেসের কমপক্ষে অর্ধেক নিষ্পত্তি করাসহ অ্যাসেট রিকভারি এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করবে সরকার।
শফিকুল আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যেকোনো মূল্যে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে চায়। সরকার ইতোমধ্যে প্রায় ২০০ আইনি সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছে এবং প্রক্রিয়াটি সহজতর করার জন্য ৩০টি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করতে পারে।
এ সময় এক ব্যক্তির টিউশন ফি বাবদ ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা বিদেশে পাঠানের উদাহরণ দেন প্রেস সচিব।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টাকে আরও ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সরকার এজন্য সহায়তা দিতে একটি বিশেষ আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা করছে।