৫ আগস্ট গাজীপুরে শিক্ষার্থীর পিঠে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করা সেই কনস্টেবলকে জিজ্ঞাসাবাদ ১১ মার্চ

গত ৫ আগস্ট গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে আন্দোলরত কলেজশিক্ষার্থী হৃদয় হোসেনের পিঠে রাইফেল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যার আলোচিত ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল আকরাম হোসেনকে একদিনের জন্য জিজ্ঞাসাবদের অনুমতি পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থা। বুধবার (৫ মার্চ) এই মামলার আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এই মামলার আসামিরা হলেন- আকরাম হোসেন (কনস্টেবল), এম আশরাফ উদ্দিন, (সাবেক ওসি কাপাসিয়া), মো. শফিকুল ইসলাম, (পুলিশ পরিদর্শক), মো. ফাহিম হাসান (কনস্টেবল) ও মো. মাহমুদুল হাসানকে (কনস্টেবল)
ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, 'প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আকরাম হোসেনকে ট্রাইব্যুনাল আগামী ১১ মার্চ জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে।'
তাজুল ইসলাম বলেন, 'জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে তাকে রাইফেল দিয়ে গুলি করার হুকুম কে দিয়েছিল, তার সঙ্গে কারা কারা ছিল, তার হুকুমদাতাদের চিহ্নিত ও তার লাশটি কোথায় নিয়ে ফেলা হয়েছে বা কি করা হয়েছে, সব জানা যাবে।'
তিনি আরও বলেন, 'কনস্টেবল আকরাম হোসেন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ট্রাইব্যুনালের কাছে আমরা একদিনের অনুমতি চাইলে আগামী ১১ মার্চ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়। আমাদের তদন্ত সংস্থাও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।'
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, 'গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে গত ৫ আগস্ট একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড হয়। তারা একজন বিক্ষোভকারীকে ধরে নিয়ে নানাভাবে অত্যাচার করে। বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাকে ঘিরে ধরে রাস্তার মাঝখানে নিয়ে যায়। ঠান্ডা মাথায় তাকে পেছন থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর আরেকজন পুলিশ সদস্য এসে তাকে টেনে গলির মধ্যে নিয়ে যায়। আজ পর্যন্ত তার স্বজনরা জানে না, লাশ কোথায় আছে।'
তিনি বলেন, 'আমাদের তদন্ত সংস্থা এই বিষয়ে তদন্ত করছে। এই মামলার আসামি কনস্টেবল আকরাম পিঠে রাইফেল ঠেকিয়ে সেই বিক্ষোভকারী হৃদয় হোসেনকে গুলি করে। আজ এই মামলার পাঁচ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। মামলায় এক আসামি এখনও পলাতক।'
বিচারে চাপ না দেওয়ার আহ্বান
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে চাপ না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
বুধবার ট্রাইব্যুনালে করা এক ব্রিফিংয়ে এ আহ্বান জানান তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, 'মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা কঠিন প্রক্রিয়া, কেউ বাড়তি চাপ দেবেন না। '
এর আগে বিচার প্রক্রিয়ায় সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্টের সাবেক দুই কূটনীতিক। 'রাইট টু ফ্রিডম'- নামের মার্কিন থিংকট্যাংক-এর পক্ষ থেকে সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শন করেন তারা।
সকালে ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শন করেন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম বি মাইলাম ও কূটনৈতিক জন ড্যানিলোভিজ। পরে তারা তাজুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তারা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের বর্তমান অগ্রগতি ও সার্বিক খোঁজখবর নেন।
জুলাই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং গত ১৫ বছরে যারা গুম-খুনের শিকার তারা যেন ন্যায়বিচার পান এবং ভবিষ্যতে আর কেউ যেন বিগত সরকারের মতো অপরাধ না করতে পারে সে ব্যাপারে তারা তথ্য দিয়ে এবং পরামর্শমূলক সহযোগিতা করতে চান বলেও জানান চিফ প্রসিকিউটর।