বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্রিজ ব্যাংক’ পরিকল্পনায় সম্মত ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক

পাঁচটি দুর্বল ব্যাংক একীভূত করে গঠিত হতে যাওয়া 'ব্রিজ ব্যাংক'-এর পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠকের পর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের আব্দুল মান্নান বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যাংক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার সঙ্গে আমরা একমত। আমানতকারীদের সুরক্ষার বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেখবে।'
'ব্রিজ ব্যাংক' হলো একটি অস্থায়ী আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যেটি এক বা একাধিক ব্যর্থ ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গঠন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আবদুল মান্নান জানান, তিনটি পৃথক অডিটে নিশ্চিত হয়েছে যে এস আলম গ্রুপ বেনামি হিসাবে ৩৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, কারণ তারা নিজেদের নামে ঋণ নিতে পারেনি। তিনি বলেন, 'এই ঋণ আদায় না হওয়ায় ব্যাংকটি মারাত্মক সংকটে পড়েছে।'
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকটি ছিল পাঁচ ব্যাংকের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে অনুষ্ঠিতব্য পূর্বনির্ধারিত আলোচনার অংশ। এর আগে এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গভর্নরের অসুস্থতার কারণে তা স্থগিত হয়।
ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে যথক্রমে ২ ও ৩ সেপ্টেম্বর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকের নতুন তারিখ পরে জানানো হবে।
৬৫০ কোটি টাকার ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড-এর ঘোষণা দিল সিটি ব্যাংক
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে এক আলাদা আলোচনার পর দেশের স্টার্টআপ খাতকে সহায়তা করতে ৬৫০ কোটি টাকার ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ডের ঘোষণা দেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মাশরুর আরেফিন।
বাংলাদেশে স্টার্টআপ অর্থায়নে বড় পরিবর্তন আনতে এই ফান্ড থেকে ঋণের বদলে ইকুইটি আকারে বিনিয়োগ দেওয়া হবে।
আরেফিন বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য স্টার্টআপদের স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করা। ঋণের চাপ নয়, আমরা বিনিয়োগ করব।' তিনি আরও জানান, শুরুতে ফান্ডটি বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই বিভাগ তদারকি করবে, পরে এটি পরিচালনার জন্য ব্যাংকারদের নিয়ে একটি নতুন বোর্ড গঠন করা হবে।
তিনি বলেন, ব্যাংকারদের মনোনীত করবে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি)। আরেফিনের ধারণা, ফান্ডটি পুরোপুরি চালু হতে তিন থেকে চার মাস সময় লাগতে পারে, যদিও প্রস্তুতির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।
সিটি ব্যাংকের সিইও নতুন ফান্ড নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, 'আমাদের দেশের স্টার্টআপ উদ্যোক্তাদের মাথায় অসংখ্য নতুন ধারণা আছে। ১০০টির মধ্যে যদি মাত্র একটি সফলও হয়, আমাদের বিনিয়োগ ফেরত আসবে। মনে রাখতে হবে, আমরা বিনিয়োগ করছি, ঋণ দিচ্ছি না।'
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, আলাদা করে ৫০০ কোটি টাকার একটি রিফাইন্যান্স ফান্ড তৈরি করা হয়েছে। এ স্কিমে ব্যাংকগুলো শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ সুদে অর্থ নিতে পারবে এবং তা স্টার্টআপদের ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দিতে পারবে।