ব্যাংকের ঋণ অবলোপনের ৩০ কার্যদিবস আগে নোটিশ দিতে হবে গ্রাহককে

ব্যাংকগুলোর মন্দমানে শ্রেণিকৃত খেলাপি ঋণ ব্যালান্স শিট থেকে বাদ দিতে হলে তা রাইট অফ বা অবলোপন করতে হয়। এখন থেকে কোনো গ্রাহকের ঋণ অবলোপন করার কমপক্ষে ত্রিশ কর্মদিবস পূর্বে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে নোটিশ দিতে হবে।
আজ রোববার (১৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করেছে, যেখানে সকল তফসীলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের এ নির্দেশনা অবিলম্বে পরিপালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলো তাদের নিজস্ব নীতিমালা অনুযায়ী অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নগদ প্রণোদনা দিতে পারবে। তবে কোনো ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নীতিমালা না থাকলে, তা পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে প্রণয়ন করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী, কোনো গ্রাহকের ঋণ একাধারে দুই বছর মন্দ ও ক্ষতিজনক শ্রেণিতে অবস্থান করলে, সেটি অবলোপন করার সুযোগ রয়েছে। তবে অধিকতর পুরনো ঋণগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অবলোপন করতে হবে।
সার্কুলারে আরও বলা হয়, অবলোপন করা হলেও ঋণগ্রহীতা তাঁর ঋণের সম্পূর্ণ দায় পরিশোধ না করা পর্যন্ত যথানিয়মে খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত থাকবেন। তাই কোনো ঋণ অবলোপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে অবহিত করার আবশ্যকতা থাকায় এ সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
বাংলাদেশের ব্যাংকের ২০২৪ সালের আর্থিক স্থিতিশীলতার প্রতিবেদন অনুযায়ী, অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ৬২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্লাসিফায়েড লোন রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মার্চ শেষে ব্যাংকখাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪.২০ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে মন্দ ও ক্ষতিজনক মানের ঋণ রয়েছে ৩.৪২ লাখ কোটি টাকা, যা মোট খেলাপি ঋণের ৮১.৩৭ শতাংশ।
অর্থাৎ ব্যাংক খাতে বর্তমানে যে মন্দ মানের ঋণ রয়েছে, তার মধ্যে যেসব ঋণ দুই বছরের বেশি সময় ধরে শ্রেণিকৃত রয়েছে, সেগুলো ব্যাংক চাইলে অবলোপন করতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো মন্দ শ্রেণিভুক্ত ঋণগুলো অবলোপন করতে পারবে, যদি ঐ ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন রাখা থাকে।
সেক্ষেত্রে কোনো ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ঋণের ক্ষেত্রে প্রভিশনে ঘাটতি থাকলে তা চলতি বছরের আয় (ইনকাম একাউন্ট) থেকে সমন্বয় করে প্রভিশন তৈরি করতে হবে।