যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান বিজিএমইএ সভাপতির

যুক্তরাষ্ট্র অন্য কিছু দেশের জন্য শুল্ক আরও কমাতে পারে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান শুল্ক আলোচনার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান।
আজ (১ আগস্ট) ঢাকার বিজিএমইএ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, 'আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ নির্বাহী আদেশে স্পষ্ট বলা হয়েছে, কিছু দেশের সঙ্গে এখনও আলোচনা চলছে।'
তিনি বলেন, 'এই আলোচনা চূড়ান্ত হলে তারা আরও কম শুল্ক সুবিধা পেতে পারে। তাই বাংলাদেশকেও আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।'
যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে একটি ভারসাম্যপূর্ণ শুল্ক কাঠামো ঘোষণার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে মাহমুদ বলেন, 'গত চার মাস ধরে এই ইস্যুটি আমাদের জন্য দুশ্চিন্তার বিষয় ছিল। এখন বাংলাদেশি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করায় আমরা প্রধান প্রতিযোগীদের সঙ্গে তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থানে এসেছি—চীনের ৩০ শতাংশ ও ভারতের ২৫ শতাংশের চেয়ে এটি কম।'
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব, বিশেষ করে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের প্রশংসা করে বলেন, তাদের দক্ষ পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশ একটি সম্ভাব্য সংকট থেকে রক্ষা পেয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, 'আগে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি পণ্যে মোস্ট ফেভারড নেশন (এমএফএন) সুবিধার আওতায় ১৬.৫ শতাংশ শুল্ক দিত। নতুন ২০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে এখন এই হার দাঁড়িয়েছে ৩৬.৫ শতাংশে; যদিও পণ্যের ধরনভেদে এ হার ভিন্ন হবে।'
তিনি জানান, বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির প্রায় ৭৫ শতাংশই তুলা নির্ভর পোশাক পণ্য।
ট্রাম্প প্রশাসনের এক নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী, রপ্তানি পণ্যে যদি কমপক্ষে ২০ শতাংশ কাঁচামাল যেমন, তুলা—যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে, তাহলে সেই অংশের উপর ২০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক প্রযোজ্য হবে না।
মাহমুদ বলেন, 'এতে করে মার্কিন কাঁচামাল বেশি ব্যবহার করলে আংশিক শুল্ক অব্যাহতির সুযোগ তৈরি হয়েছে।'
তবে ২০ শতাংশ শুল্কের ফলে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'আমাদের শিল্পখাত ইতিমধ্যেই ব্যয়বৃদ্ধির চাপে আছে। সরকারকে বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি কারখানাগুলোকে সহায়তা করতে হবে, যাতে তারা বাজার থেকে ছিটকে না পড়ে।'
বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, সরকারের নীতিগত সহায়তা অব্যাহত রাখা, চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ এবং আরও শিল্পবান্ধব কাস্টমস ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি।