Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Wednesday
September 24, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
WEDNESDAY, SEPTEMBER 24, 2025
প্রতিযোগীদের সঙ্গে ৫% শুল্কের ব্যবধান সামলাতে পারবে বাংলাদেশ, কিন্তু ১৫% হবে বিপর্যয়কর

অর্থনীতি

সাজ্জাদুর রহমান & রিয়াদ হোসেন
27 July, 2025, 08:45 am
Last modified: 27 July, 2025, 08:53 am

Related News

  • স্বাস্থ্য-শিক্ষায় অগ্রাধিকার দিয়ে ৩৬ প্রকল্পে বিদেশি অর্থায়নের পরিকল্পনা সরকারের
  • আর্থিক চাপের মধ্যে এআইআইবির কাছে ১.৫ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা চায় সরকার
  • নেপাল অভ্যুত্থান যে কারণে ভারতের ব্যাকইয়ার্ড ডিপ্লোম্যাসির জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ
  • ২০২৫ সালে ছুটিতে শীর্ষে ইয়েমেন, বাংলাদেশে ৪০ দিন
  • একীভূত হতে চলা পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীদের অর্থ ফেরতে যে পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রতিযোগীদের সঙ্গে ৫% শুল্কের ব্যবধান সামলাতে পারবে বাংলাদেশ, কিন্তু ১৫% হবে বিপর্যয়কর

ভারত, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া এবং পাকিস্তানের মতো দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শুল্ক কমানোর জন্য সক্রিয়ভাবে আলোচনা করছে।
সাজ্জাদুর রহমান & রিয়াদ হোসেন
27 July, 2025, 08:45 am
Last modified: 27 July, 2025, 08:53 am
ইনফোগ্রাফিক: টিবিএস

বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তৈরি পোশাক (আরএমজি) শিল্প, যা দেশের মোট রপ্তানিতে ৮৫ শতাংশের মতো বিশাল অবদান রাখছে। তবে এই খাতই এখন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে যদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ঘোষিত ৩৫ শতাংশ "পাল্টা শুল্ক" (রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ) কার্যকর করেন।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া বাংলাদেশের পোশাকের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক প্রযোজ্য। সেটি ৫০ শতাংশে উন্নীত হলে—রপ্তানি বাজারে মূল্য প্রতিযোগিতার ওপর নির্ভরশীল এই খাতকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করবে।

সংশ্লিষ্ট শিল্পের জন্য সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হলো রপ্তানি বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলির সাথে শুল্কের ব্যবধান বেড়ে যাওয়া নিয়ে।  বাংলাদেশ যেখানে সম্ভাব্য উচ্চ শুল্ক বৃদ্ধির সম্মুখীন, সেখানে ভারত, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া এবং পাকিস্তানের মতো দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কম শুল্ক হারের জন্য সক্রিয়ভাবে আলোচনা করছে।

যদি এই দেশগুলো অগ্রাধিকারমূলক শুল্ক (প্রেফারেন্সিয়াল ট্যারিফ) পেয়ে যায়, তাহলে বাংলাদেশের জন্য ১৫ শতাংশীয় পয়েন্টের সমস্যা তৈরি হবে। তবে স্থানীয় পোশাক প্রস্তুতকারকরা সতর্ক করেছেন যে, এতে দেশের মূল্য প্রতিযোগিতার সক্ষমতা একেবারে হারিয়ে যাবে, যা বিশ্ববাজারে শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থানকেই হুমকির মুখে ফেলবে।

আর বাংলাদেশ যখন এই খাড়া খাদের দিকে তাকিয়ে আছে, তখন অন্যরা নীরবে সংকট উত্তরণের মই তৈরি করছে।

আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, প্রতিযোগী দেশগুলো যেমন ভারত, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তান এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক হ্রাস নিয়ে আলোচনা করছে। তারা যদি অগ্রাধিকারমূলক শুল্ক পায়, তাহলে বাংলাদেশের সঙ্গে ১৫ শতাংশীয় পয়েন্ট শুল্কবৈষম্য তৈরি হতে পারে – যা অনতিক্রম্য বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন শিল্প উদ্যোক্তারা।

ভারত ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ বিষয়ে গভীর আলোচনায় রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আগের ঘোষিত  ২৬ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কমিয়ে ২০শতাংশ বা তারও নিচে নামিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে। এতে করে বাংলাদেশ ১৫ শতাংশীয় পয়েন্ট পিছিয়ে পড়বে।

ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানও একই পথে আলোচনা করছে। এক্ষেত্রে শুধু সস্তা শ্রমে আর পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে না,। এবং মূল্য প্রতিযোগিতায় আরও পিছিয়ে পড়বে বাংলাদেশ। 
এখানে প্রশ্নটাও তাই যেমন সরল, তেমনই নির্মম: কথায় যাবে দেশের পোশাক শিল্প, কর্মসংস্থান ও অর্থনীতি?

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিকারকদের মধ্যে শীর্ষ তিন দেশের মধ্যে আছে বাংলাদেশ, যেখানে ভিয়েতনাম এবং চীনের সাথে তীব্র প্রতিযোগিতা করে। কিন্তু শুল্কের কারণে পরিস্থিতি এখন বাংলাদেশের প্রতিকূলে চলে যাচ্ছে, যা এই অবস্থানকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে। পোশাকের অর্ডার অন্য দেশে চলে যেতে পারে – পণ্যের গুণগত মান বা কারখানার কমপ্লায়েন্স এর জন্য নয় – বরং শুল্কের ভারে বায়ারদের কাছে বাংলাদেশের পোশাকের দাম বেশি হয়ে যাবে।

দেশের শীর্ষ পাঁচ পোশাক রপ্তানিকারকের অন্যতম প্যাসিফিক জিন্স। এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, বাংলাদেশ মূলত মার্কিন বাজারে কটন-বেজড প্রোডাক্ট (তুলা-ভিত্তিক বা সুতি পোশাক) রপ্তানি করে। আমাদের ওপর শুল্ক যদি ভারতের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে বাংলাদেশ তার মূল্যের যে সুবিধা পায়, তা হারাবে।

"কটন-মেইড পণ্যের ক্ষেত্রে ভারত ও পাকিস্তান বাংলাদেশের সমকক্ষ। যদি আমাদের ওপর অতিরিক্ত ১০-১৫ শতাংশ শুল্ক বসে, তাহলে আমাদের মূল্য প্রতিযোগিতার ক্ষমতা পুরোপুরি হারিয়ে হয়ে যাবে," — তানভীর গতকাল দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-কে এসব কথা বলেন।

তাঁর উদ্বেগের কারণও যথেষ্ট: প্যাসিফিক জিন্সের বার্ষিক রপ্তানির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ — যার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি ডলার — যায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে।

শীর্ষ পাঁচ রপ্তানিকারকদের আরেকটি হচ্ছে ডিবিএল গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটি ২০২৪ সালে ৪৫ কোটি ডলারেরও বেশি মূল্যের রপ্তানি করেছে। ডিবিএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ জব্বার এবিষয়টি নিয়ে একমত পোষণ করেন। তবে তিনি মনে করেন, শুল্কের চাপে পড়লেও অর্ডারগুলো রাতারাতি বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাবে না।

টিবিএসকে তিনি বলেন, "বায়াররা এখন দাম নিয়ে আরও কঠিনভাবে দর কষাকষি শুরু করবে। আর যেসব ফ্যাক্টরি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের উপর বেশি নির্ভরশীল, তারা ইউরোপমুখী হবে—সেখানকার বায়াররাও এই সুযোগে দাম কমানোর জন্য চাপ দেবে। এতে এক ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হবে।"

তবে দেশের প্রায় ২৫০টি পোশাক কারখানার মতো নয় ডিবিএল গ্রুপের কারখানা। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের উপর তেমন নির্ভরশীল নয় তারা। তাদের রপ্তানির মাত্র ৬ শতাংশই বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশটিতে যায়।

"তবে আমাদের যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি দ্রুত বাড়ছিল," — বলেন জব্বার। "মাত্র কয়েক বছর আগেও আমাদের রপ্তানির ১ শতাংশেরও কম যেত যুক্তরাষ্ট্রে; এখন তা ৬ শতাংশে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রই হয়ে উঠছিল আমাদের ভ্যালু-অ্যাডেড পণ্যের মূল বাজার।"

কিন্তু এখন বাংলাদেশ ও প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর মধ্যে শুল্ক ব্যবধান বাড়ার আশঙ্কায়, জব্বার মনে করছেন মার্কিন বাজার এবং এর দীর্ঘমেয়াদি সম্ভাবনা দুটোই এখন ঝুঁকির মুখশিল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের কিছু ক্রেতা বা বায়ার ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে অর্ডার দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।

চট্টগ্রামভিত্তিক পোশাক কারখানা এইচকেসি অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাকিবুল আলম চৌধুরী টিবিএসকে বলেন, আমাদের পণ্যের ৯০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়, এবং ইংরেজি নববর্ষ, ব্ল্যাক ফ্রাইডে ও বড়দিনের মতো উৎসবকে সামনে রেখে অর্ডার পান তারা।

তিনি বলেন, "এবার আগের বছরের তুলনায় মাত্র ২০ শতাংশ অর্ডার পেয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের বায়াররা এই মুহূর্তে অর্ডার দিচ্ছেন না। আমরা বিকল্প বাজার খুঁজছি, কিন্তু নতুন ক্রেতা পাওয়াও তো রাতারাতি সম্ভব না।"

রাকিবুল আলম আরও জানান, চট্টগ্রামের কিছু কারখানার অর্ডার ইতোমধ্যেই ভিয়েতনামে স্থানান্তরিত হয়েছে, কারণ বায়ারদের দরকার ডেলিভারি।

স্নোটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম খালেদ টিবিএসকে জানান, "এই মাস পর্যন্ত, যখন যুক্তরাষ্ট্র ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছিল, তখনও বায়াররা ডিসকাউন্ট দাবি করছিল, যদিও তখন সব দেশের উপরই একই ধরনের পাল্টা শুল্ক ছিল।" তাঁর প্রতিষ্ঠানটি বছরে প্রায় ৩০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে, যার এক-চতুর্থাংশই যায় যুক্তরাষ্ট্রে। বর্তমানে ২০,০০০-এরও বেশি কর্মী রয়েছে তার কারখানায়।

এসএম খালেদ সতর্ক করে বলেন, "কিন্তু এখন যদি ভারত বা ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোর সঙ্গে শুল্কের ব্যবধান ১৫ শতাংশ বা তার বেশি হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি অর্ডার আর এদেশে আসবে না।"

বাংলাদেশের ওপর সম্ভাব্য তাৎক্ষণিক প্রভাব

রপ্তানিকারকরা আশঙ্কা করছেন, প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় যদি বাংলাদেশকে বেশি শুল্কের সম্মুখীন হতে হয়, তাহলে অর্ডার স্থানান্তর এবং মূল্য কমানোর চাপ— এ দুটি তাৎক্ষণিক প্রভাব দেখা দিতে পারে।

স্নোটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম খালেদ বলেন, সাধারণত বছরের এই সময় শীত ও গ্রীষ্মকালীন পোশাকের জন্য রপ্তানি অর্ডারের আলোচনা হয়। কিন্তু এবার মার্কিন ক্রেতাদের কাছ থেকে আগের বছরগুলোর মতো অর্ডার আসছে না।

"আমরা নিয়মিত বায়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি," বলেন খালেদ। "কিন্তু তারা অর্ডার দিচ্ছে না। বরং, আগে কনফার্ম করা অর্ডারের পরিমাণও কমিয়ে দিচ্ছে।" তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, একজন মার্কিন ক্রেতা সম্প্রতি ১৮ লাখ পিস স্পোর্টসওয়্যারের অর্ডার দিয়েছিলেন, পরে সেটি কমিয়ে ১৩ লাখ পিসে নিয়ে এসেছেন।

খালেদ জানান, যুক্তরাষ্ট্রে চাহিদা কমে যাওয়ায় তারা এখন ইউরোপসহ অন্যান্য বাজার থেকে অর্ডার নিতে শুরু করেছেন — তবে সাধারণত যে দাম তার চেয়েও প্রায় ১০ শতাংশ কম দরে অর্ডার নিতে হচ্ছে। 

কারণ ব্যাখ্যা করে এই ব্যবসায়ী বলেন,  "আমাদের প্রোডাকশন লাইনগুলো ১০ ঘণ্টার শিফটে কাজ করার জন্য ডিজাইন করা। সম্পূর্ণ সক্ষমতায় চালানোর মতো অর্ডার না পেলেও—  আন্ডার-ইউটিলাইজেশন ঠেকাতে অন্তত ৮ ঘণ্টা উৎপাদন চালাতে হয়। এই কারণেই আমরা কম দামের অর্ডার নিচ্ছি, যাতে বড় ধরনের ক্ষতি না হয়।"

প্যাসিফিক জিন্সের সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীরও একই ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক বৃদ্ধির আশঙ্কায় অর্ডারের পরিমাণ কমিয়ে আনবে বায়াররা।

বাণিজ্য চুক্তি ঘিরে ভারত কী আশা করছে

চলতি বছরের জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন বাংলাদেশি রপ্তানির ওপর ৩৫ শতাংশ পাল্টা-শুল্ক ঘোষণা করেন — এবং ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার জন্য আরও বেশি হারে শুল্ক ধার্য করেছিলেন — এর পরদিনই ভারতের টেক্সটাইল খাতের শেয়ারবাজারে ব্যাপক উত্থান ঘটে, যা দেশটির বস্ত্র শিল্পে ব্যাপক আশাবাদের ইঙ্গিত দেয়।

এই সুযোগ কাজে লাগাতে চায় ভারত। দেশটি এখন যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানির বাজারে আরও বড় অংশীদারিত্ব পাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে, যেখানে বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়ার মতো মূল প্রতিযোগীদের ব্যবসা দখল করাই তাদের লক্ষ্য।

স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (এসবিআই) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানিতে ভারতের বাজারহিস্যা রয়েছে ৬ শতাংশ। তারা যদি প্রতিযোগী দেশগুলোর আরও ৫ শতাংশ বাজারহিস্যা দখলে নিতে পারে, তাহলে ভারতের জিডিপি ০.১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেমিক্যাল প্রসেসিংয়ে ভারতের দক্ষতা এবং টেক্সটাইল উৎপাদনে তুলনামূলক সুবিধা দেশটির জন্য একটি বড় শক্তি হিসেবে কাজ করছে। এসব সুবিধার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পোশাক ও গার্মেন্টস সরঞ্জাম নিয়মিত রপ্তানি হচ্ছে। তবে প্রতিবেদনটি একইসঙ্গে স্বীকার করেছে, এই খাতে ভারতকে বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোর কঠিন প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেল (ওটেক্সা)-এর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ছিল তৃতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ, যার মোট রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৭.৩৪ বিলিয়ন ডলার। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ভিয়েতনাম, যাদের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৪.৯৮ বিলিয়ন ডলার। আর শীর্ষে ছিল চীন, যারা রপ্তানি করেছে ১৬.৫১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক।

এর পরেই রয়েছে ভারত ও ইন্দোনেশিয়া, এই দুটি দেশ যথাক্রমে ৪.৬৯ বিলিয়ন ও ৪.২৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে — এবং উভয়েই মার্কিন বাজারে তাদের অবস্থান আরও জোরদার করার লক্ষ্যে কাজ করছে।

রাতারাতি অর্ডার হারিয়ে যাবে না কেন

শুল্কের ব্যবধান বাড়ার ঝুঁকি সত্ত্বেও, স্থানীয় রপ্তানিকারকরা বিশ্বাস করেন যে রপ্তানি আদেশ রাতারাতি বাংলাদেশ থেকে সরে যাবে না। এজন্য তারা বাংলাদেশের বেশ কিছু কাঠামোগত সুবিধার কথা উল্লেখ করেন— যা প্রতিযোগী দেশগুলোর পক্ষে একেবারে সঙ্গে সঙ্গে অনুকরণ করা সম্ভব নয়।

এই সুবিধাগুলোর মধ্যে রয়েছে— দশকের পর দশক ধরে গড়ে ওঠা পোশাক শিল্পের বিশাল অবকাঠামো, কারখানা মালিকদের ধারাবাহিক বিনিয়োগ, বড় পরিসরে উৎপাদন সক্ষমতা, দক্ষ তবে তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী শ্রমশক্তি, এবং ছোট-বড়, কমপ্লায়েন্ট ও নন-কমপ্লায়েন্টসহ বৈচিত্র্যময় উৎপাদনের ইকো-সিস্টেম। এর পাশাপাশি, গত ৪০ বছরে একটি নির্ভরযোগ্য পোশাক সরবরাহকারী হিসেবে বাংলাদেশের যে সুনাম গড়ে উঠেছে, তাও বড় একটি ফ্যাক্টর।

ডিবিএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ জব্বার বলেন, "যদি শুল্ক ব্যবধান ১৫ শতাংশীয় পয়েন্টেও পৌঁছে যায়, সেটা কষ্টকর হবে। তবে এর ফলে অর্ডার একেবারে উধাও হয়ে যাবে না। আমরা যে অবকাঠামো গড়েছি, তা একদিনে হয়নি। অন্য দেশগুলোকে এখানে পৌঁছাতে সময় লাগবে।"

প্যাসিফিক জিন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, "বাংলাদেশে ৫,০০০-৬,০০০ কর্মীসমৃদ্ধ কারখানা খুবই কমন। আমাদের প্রতিযোগী অধিকাংশ দেশে – সম্ভবত চীন ছাড়া – এমন পরিসর নেই। আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা ও দক্ষ শ্রমশক্তি দুটোই আছে।"

স্নোটেক্স গ্রুপের এস এম খালেদ বলেন, "ভারত, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া কিংবা শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলো ভবিষ্যতে উৎপাদন সক্ষমতা ধাপে ধাপে বাড়াতে পারলেও, সেটি চট করে হবে না।"

তিনি বলেন, "বাংলাদেশ হয়তো সব অর্ডার হারাবে না, তবে আমরা ঝুঁকিতে থাকব উচ্চ-মূল্য সংযোজনযুক্ত ও নন-বেসিক বা ভালো মার্জিনের গার্মেন্টস প্রোডাক্ট রপ্তানির ক্ষেত্রে, যেগুলোতে আমাদের প্রতিযোগিতার মুখেও পড়তে হয় বেশি।"

তবে দীর্ঘমেয়াদী আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে

বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এই খাত শুধু রপ্তানিই নয়, বরং দেশের ব্যাংকিং, বীমা, পরিবহন, শিপিং ও লজিস্টিকসসহ বহু খাতের অর্থনীতির ভিত্তিও হয়ে উঠেছে। ফলে, রপ্তানি আয় সামান্য কমে গেলেও—ধরা যাক প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলারের ভিত্তি থেকে ১ বিলিয়ন ডলার হ্রাস পেল—তাতে বহু খাতে চেইন রিঅ্যাকশনের মতো প্রভাব পড়তে পারে এবং বৃহৎ পরিসরে কর্মসংস্থান হুমকিতে পড়তে পারে।

বাণিজ্যিক অনিশ্চয়তা বাড়তে থাকায়, অনেক সরবরাহকারী এখনই বিকল্প বাজার খুঁজে বের করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তবে এখন পর্যন্ত, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরকারের আলোচনায় কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।

এইচকেসি অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, "আমরা হয়তো আরেকটা সিজন টিকে থাকতে পারব। কিন্তু তারপর যদি বিকল্প বাজার খুঁজে না পাই, তাহলে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে। ফ্যাক্টরি বন্ধ হলে ব্যাংক ঋণ শোধ করাও অসম্ভব হয়ে উঠবে।"

প্যাসিফিক জিন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, দীর্ঘমেয়াদে আরও বড় চ্যালেঞ্জ আসতে পারে—বিশেষ করে তখন, যখন বাংলাদেশের প্রতিযোগীরা তাদের উৎপাদন সক্ষমতা আগ্রাসীভাবে বাড়ানো শুরু করবে।

তিনি বলেন, "আসল ভয় তখনই, যখন ভারতের মতো দেশগুলো বড় আকারের কারখানা গড়ে তুলতে বিনিয়োগ শুরু করবে। তারা ইতিমধ্যেই এটা শুরু করে দিয়েছে। সময় লাগবে বটে, কিন্তু একবার যদি তারা স্কেলে পৌঁছে যায়, তাহলে বাংলাদেশের বর্তমান বাজারহিস্যা তারা ছিনিয়ে নিতে পারবে।"

নীতি পরামর্শ: প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এখনই সময় 'চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত' নেওয়ার

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. জাইদি সাত্তার বলেন, বিশ্ব বাণিজ্যের গতিপথ দ্রুত বদলে যাচ্ছে, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বাংলাদেশকে এখনই কঠোর ও সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বিশেষ করে ভারত, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়ার মতো প্রতিযোগীদের চেয়ে এগিয়ে থাকতে আরও ভালো বাণিজ্য চুক্তি নিশ্চিত করা দরকার।

তিনি বলেন, "আমি মনে করি, (যুক্তরাষ্ট্রের) চূড়ান্ত শুল্ক হার প্রস্তাবিত ৩৫ শতাংশ থেকে কিছুটা কমে আসতে পারে। কিন্তু তারপরও অন্যান্য দেশের ওপর দেওয়া শুল্কের তুলনায় যে পার্থক্য থেকে যাবে, তা সরবরাহকারী, ক্রেতা কিংবা ভোক্তা—তিন পক্ষেরই কাউকে না কাউকে বহন করতে হবে।"

এই ধাক্কা সামাল দিতে, তিনি সরকারকে উৎপাদন খরচ কমানোর দিকেই নজর দিতে বলেছেন—যেমন বিদ্যুৎ, গ্যাস ও বন্দর খরচ কমানো। একই সঙ্গে কারখানা মালিকদের উদ্দেশে বলেছেন, তারা যেন উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেন, যাতে উচ্চ শুল্কের প্রভাব মোকাবিলা করে প্রতিযোগিতামূলক দাম বজায় রাখা যায়।

ডিবিএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ জাব্বারও একই মত পোষণ করেন। তিনি বলেন, "বাংলাদেশের একটি সুস্পষ্ট কৌশল দরকার, যাতে বৈশ্বিক তৈরি পোশাক রপ্তানি বাজারে নেতৃত্ব ধরে রাখতে পারে। এ জন্য শক্তিশালী নীতিগত সহায়তা, বিনিয়োগ সহায়তা এবং গবেষণা ও বাজার বিশ্লেষণে বিনিয়োগ অপরিহার্য।"

Related Topics

টপ নিউজ

পোশাক রপ্তানি / যুক্তরাষ্ট্রের বাজার / পোশাকখাত / বাংলাদেশ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ছবি: সংগৃহীত
    হাইকোর্টের কারণ দর্শানোর নির্দেশের পরেও মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা ইসলামী ব্যাংকের
  • ছবি: টিবিএস
    ছাপ্পান্নটি গবেষণা কেন্দ্র! নিজের ‘কীর্তি’ নিয়ে দিশেহারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
  • এ বছর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
    ছয় বছর আগে জাতিসংঘে ট্রাম্পের বক্তব্যে শ্রোতারা হেসেছিলেন, এ বছর নীরব
  • নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরুর সময়ে ট্রাম্প প্রশাসন এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ছবি: এপি
    মার্কিন নিষেধাজ্ঞা: অনুমতি ছাড়া কস্টকোতে কেনাকাটা করতে পারবেন না ইরানি কূটনীতিকরা
  • ইলাস্ট্রেশন: টিবিএস
    ধানক্ষেত ছিল, এক বিঘা জমির দাম ছিল ৫ হাজার টাকা—ধানমন্ডি যেন গল্পগাথাকেও হার মানায়!
  • অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
    বর্তমানে মজুত ডলার আপৎকালীন সময়ের জন্য যথেষ্ট নয়: সালেহউদ্দিন আহমেদ

Related News

  • স্বাস্থ্য-শিক্ষায় অগ্রাধিকার দিয়ে ৩৬ প্রকল্পে বিদেশি অর্থায়নের পরিকল্পনা সরকারের
  • আর্থিক চাপের মধ্যে এআইআইবির কাছে ১.৫ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা চায় সরকার
  • নেপাল অভ্যুত্থান যে কারণে ভারতের ব্যাকইয়ার্ড ডিপ্লোম্যাসির জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ
  • ২০২৫ সালে ছুটিতে শীর্ষে ইয়েমেন, বাংলাদেশে ৪০ দিন
  • একীভূত হতে চলা পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীদের অর্থ ফেরতে যে পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক

Most Read

1
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

হাইকোর্টের কারণ দর্শানোর নির্দেশের পরেও মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা ইসলামী ব্যাংকের

2
ছবি: টিবিএস
ফিচার

ছাপ্পান্নটি গবেষণা কেন্দ্র! নিজের ‘কীর্তি’ নিয়ে দিশেহারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

3
এ বছর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেওয়ার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
আন্তর্জাতিক

ছয় বছর আগে জাতিসংঘে ট্রাম্পের বক্তব্যে শ্রোতারা হেসেছিলেন, এ বছর নীরব

4
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরুর সময়ে ট্রাম্প প্রশাসন এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ছবি: এপি
আন্তর্জাতিক

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা: অনুমতি ছাড়া কস্টকোতে কেনাকাটা করতে পারবেন না ইরানি কূটনীতিকরা

5
ইলাস্ট্রেশন: টিবিএস
ফিচার

ধানক্ষেত ছিল, এক বিঘা জমির দাম ছিল ৫ হাজার টাকা—ধানমন্ডি যেন গল্পগাথাকেও হার মানায়!

6
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

বর্তমানে মজুত ডলার আপৎকালীন সময়ের জন্য যথেষ্ট নয়: সালেহউদ্দিন আহমেদ

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net