শুল্ক চুক্তি: আজ খসড়া জমা দেবে ঢাকা, যুক্তরাষ্ট্র এখনও বৈঠকের তারিখ দেয়নি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত পারস্পরিক শুল্ক চুক্তির জবাবে বাংলাদেশ আজ যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয়ে (ইউএসটিআর) নিজেদের খসড়া অবস্থানপত্র জমা দেবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তৃতীয় দফা বৈঠকের জন্য ঢাকার অনুরোধে ওয়াশিংটন এখনও সাড়া দেয়নি।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান গতকাল সন্ধ্যায় দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, আলোচনার জন্য মিটিংয়ের সময় চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ই-মেইল পাঠানো হয়েছে। 'তবে তারা এখনও আমাদের কোনো সময় জানায়নি,' বলেন তিনি।
খসড়া অবস্থানপত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, পরিবেশ ও শ্রম অধিকারসহ বিভিন্ন অ-বাণিজ্যিক শর্ত বাস্তবায়নে ৫ থেকে ১০ বছর সময় চাওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব অনুযায়ী ব্যবসা-বাণিজ্যের বাধা দূরীকরণের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কারিগরি সহায়তা চাওয়া হবে বলেও জানান সচিব।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশের তৈরি করা খসড়া অবস্থানপত্র চূড়ান্ত করতে গতকাল বিকেলে বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে মিটিং করেছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান।
আজ সকালে খসড়াটি চূড়ান্ত করে ইউএসটিআরের কাছে ই-মেইল করার কথা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া চুক্তির খসড়া এবং বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে চূড়ান্ত আলোচনা হবে।
তাতে উভয় পক্ষ একমত হলে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হবে, যার আওতায় বাংলাদেশের উপর আরোপিত ৩৫ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক তাৎপর্যপূর্ণভাবে কমে আসবে বলে আশা করছেন কর্মকর্তারা।
আগামী ১ আগস্ট থেকে পারস্পরিক শুল্কহার কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বাংলাদেশের অবস্থানপত্র তৈরিতে রোববার (২০ জুলাই) এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন এমন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে টিবিএসকে বলেন, বাংলাদেশের ওপর আরোপিত শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্ক ছাড় দেওয়াসহ দেশটি থেকে জিটুজি (সরকারি পর্যায়ে) ভিত্তিতে আমদানি বাড়ানোর বিভিন্ন সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, খসড়া চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র যেসব অ-বাণিজ্যিক শর্ত দিয়েছে, সেগুলোতে সম্মতি দেবে না বাংলাদেশ।
তবে সরাসরি শর্তগুলো নাকচ করে না দিয়ে এসব শর্ত পূরণের জন্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৫ বছর এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০ বছর পর্যন্ত সময় চাওয়া হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
ইন্দোনেশিয়া সরকার লবিস্ট প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়ে পারস্পরিক শুল্কের হার ৩২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৯ শতাংশে নামিয়ে আনার পরও বাংলাদেশের লবিস্ট প্রতিষ্ঠান নিয়োগ না দেওয়ার কারণ সম্পর্কে ওই কর্মকর্তা বলেন, দুই দেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন।
'ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে চীনের বাণিজ্যের পরিমাণ বাংলাদেশের তুলনায় অনেক কম। ফলে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে চুক্তিতে যে ধরনের শর্ত দিয়েছে এবং তা প্রকাশ না করার জন্য নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট করেছে, ইন্দোনেশিয়ার ক্ষেত্রে তা হয়নি। তাই ইন্দোনেশিয়া লবিস্ট নিয়োগ দিতে পারলেও বাংলাদেশ তা পারছে না,' বলেন তিনি।