আইএমএফ ঋণের চতুর্থ কিস্তি জুনে পাওয়ার আশা: অর্থ উপদেষ্টা

আইএমএফ-এর ঋণের পরবর্তী তথা চতুর্থ কিস্তি আগামী জুন মাসে পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তবে সংস্থাটি ঋণ ছাড়ের আগে বেশ কিছু শর্ত বাস্তবায়নের তাগাদা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সচিবালয়ে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)-এর সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, 'ওরা [আইএমএফ] অনেক কিছু বলছে — এটা করো, ওটা করো। আমরা বলছি, আমরা দেখছি।'
তিনি আরও বলেন, 'একটা সংস্থা [আইএমএফ] যদি ঋণ ছাড় করার ব্যাপারে না করে, তখন অন্যরাও তা চায় না।'
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন নীতি-নির্ধারক নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, আইএমএফ-এর শর্ত মেনে ঋণ না নিলে কিংবা সংস্থাটি ঋণ না ছাড়লে বিশ্বব্যাংক ও এডিবিসহ অন্যান্য দাতাগোষ্ঠীও তাদের প্রতিশ্রুত ঋণ না ছাড়তে পারে।
'এমনটা হলে প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ আটকে যেতে পারে,' বলেন তিনি।
অর্থ উপদেষ্টা জানান, আইএমএফ ঋণের কিস্তি ছাড়ের আগে কয়েকটি শর্ত বাস্তবায়নের কথা বলেছে, যার মধ্যে দু'টি এখনও পূরণ করা হয়নি।
তিনি বলেন, 'তারা এখনই সেগুলো বাস্তবায়ন করতে বলছে, আমরা বলছি আমাদের সময় লাগবে। আর আমরাই দু'টি কিস্তি একসঙ্গে জুনে চেয়েছি, যাতে একটা ভালো পরিমাণ অর্থ পাওয়া যায়।'
অর্থবিভাগের কর্মকর্তারা জানান, গত ফেব্রুয়ারিতে পাওয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশ শর্ত পূরণ না করায় আইএমএফ ওই কিস্তি দেয়নি।
আগামী জুনে সংস্থাটির বোর্ড সভায় বাংলাদেশের ঋণ ছাড়ের বিষয়টি উঠতে পারে। তবে তার আগে সরকারকে একক ভ্যাট রেট কার্যকর করা এবং বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার শর্ত বাস্তবায়ন করতে হবে।
আগামী জুনে ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার মাধ্যমে সরকার একক ভ্যাট রেট কার্যকরের পরিকল্পনা করছে।
তবে জুনের মধ্যে বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, 'জুন থেকে এক্সচেঞ্জ রেট পুরোপুরি বাজারভিত্তিক হবে, এটা বলা যাবে না। এক্সচেঞ্জ রেট বাজারের ওপর ছেড়ে দিলে তা কোথায় গিয়ে ঠেকবে — দেশ হঠাৎ করে শ্রীলঙ্কার মতো হয়ে যেতে পারে।'
তিনি আরও বলেন, আইএমএফসহ অন্যান্য সংস্থা থেকে বাজেট সহায়তা না পেলে বিপুল পরিমাণ সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ ও রপ্তানি আয়ের প্রয়োজন হবে, যা হঠাৎ করে বাড়ানো সম্ভব নয়।
আলোচনায় অর্থ সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক উপস্থিত ছিলেন।