বিদেশি ঋণ: ৮ মাসে পরিশোধ বেড়েছে ২৯.৯ শতাংশ, প্রতিশ্রুতি ৬৭.৩ শতাংশ কমেছে

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৮ মাসে কমেছে উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থছাড় ও প্রতিশ্রুতি। একই সময়ে সরকারের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ বেড়েছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি ) তথ্য অনুযায়ী, জুলাই–ফেব্রুয়ারি সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি কমেছে ৬৭.৩ শতাংশ। এসময় অর্থছাড় ১৭.৩ শতাংশ কমলেও— ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৯.৯ শতাংশ।
আজ সোমবার (২৪ মার্চ) প্রকাশিত ইআরডির হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি এসেছে ২.৩৫ বিলিয়ন ডলার, যা এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭.২০ বিলিয়ন ডলার।
প্রথম ৮ মাস সময়ে উন্নয়ন সহযোগীরা ছাড় করেছে ৪.১৩ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে অর্থছাড়ের পরিমাণ ছিল ৪.৯৯ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে গত অর্থবছরের জুলাই ফেব্রুয়ারি সময়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের পরিশোধ করেছিল ২.০৩ বিলিয়ন ডলার, যা চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.৬৩৬ বিলিয়ন ডলার।
একই সময়ে ঋণের আসল পরিশোধ ১.২২৪ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ১.৯৬২ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। আর সুদ পরিশোধ ৮০৫.৯৫ মিলিয়ন থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৪৪ মিলিয়ন ডলার।
ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, অন্তবর্তীকালীন সরকারের মধ্য-মেয়াদি ঋণ কৌশলে বৈদেশিক ঋণ কম নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ কারণে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি কমেছে। উন্নয়ন সহযোগীরা গত অর্থবছরের চেয়ে বেশি ঋণ দিতে আগ্রহ দেখালেও এক্ষেত্রে ঋণ নেওয়ার আগ্রহ কম সরকারের। শুধুমাত্র জরুরি বাজেট সহায়তা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে সরকার ঋণ নিবে। এর ফলে ঋণ চুক্তিও হচ্ছে ধীর গতিতে। যার প্রভাবে ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছে।
কর্মকর্তারা আরো জানান, মূলত ঋণ পরিশোধের চাপ সামলাতে সরকার নতুন ঋণ কম নেওয়ার কৌশল নিয়েছে। এরই মধ্যে অনেক প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে যাওয়ার পরিশোধের চাপ আরো বাড়বে। আর এই চাপ কমাতেই বৈদেশিক ঋণ কম নেওয়ার কৌশল নিয়েছে সরকার।
তাঁরা আরও বলেছেন, ঋণ পরিশোধের চাপ কমাতে প্রতিশ্রুতি কমানোর সাথেসাথে পাইপলাইনে থাকা ঋণ ছাড়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে সরকার। যদিও বর্তমান দেশের পরিস্থিতির কারণে অর্থছাড়ের খুব বেশি সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।