Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Saturday
May 31, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SATURDAY, MAY 31, 2025
বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট: চেহারা চারিত্রের পর্যালোচনা

মতামত

ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ
07 June, 2022, 07:20 pm
Last modified: 07 June, 2022, 08:04 pm

Related News

  • বেশি আমদানি ব্যয়ের কারণে শিল্প ঋণ বেড়েছে ২২ শতাংশ
  • জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট পাস
  • অগ্রিম করে বিপাকে নির্মাণ শিল্প
  • পাচার অর্থ ফেরত আনার সুযোগ দিয়ে প্রবাসীদের অপমান করা হয়েছে: রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান
  • ‘বিমানের যন্ত্রাংশের ওপর কর মওকুফে উপকৃত হবে সবাই’ 

বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট: চেহারা চারিত্রের পর্যালোচনা

বিষয়টি একারণেও গুরুত্ববহ যে- মহামারি মোকাবেলায় একটি উদীয়মান উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য যে সব চ্যালেঞ্জ ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে- তা কি ধরনের কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে উৎরানো যাবে, পুনরুদ্ধার তথা পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসা যাবে- তার একটা পথনকশা- পদক্ষেপের পদাবলী বাজেটে প্রত্যাশিত থেকেই যাচ্ছে।
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ
07 June, 2022, 07:20 pm
Last modified: 07 June, 2022, 08:04 pm
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআর- এর সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। ইলাস্ট্রেশন: টিবিএস

তিনটি প্রধান চ্যালেঞ্জ -করোনাভাইরাসে ধরাশায়ী অর্থনীতির উঠে দাঁড়ানো, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অভিঘাতে আমদানি-নির্ভর অর্থনীতিতে সৃষ্ট বিপর্যয় মোকাবিলা এবং আগামী বছর চারেকের মাথায় মধ্যম আয়ের দেশের তকমা পাওয়ার জন্য জোর প্রস্তুতির প্রাক্কালে বাংলাদেশের ২০২২-২৩ বাজেট বর্ষেও জাতীয় বাজেটের আকার-অবয়ব নিয়ে চিন্তাভাবনার অবকাশ এমনিতেই এসে যায়। 

বিষয়টি একারণেও গুরুত্ববহ যে- মহামারি মোকাবেলায় একটি উদীয়মান উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য যে সব চ্যালেঞ্জ ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে তা কি ধরনের কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে উৎরানো যাবে, পুনরুদ্ধার তথা পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসা যাবে- তার একটা পথনকশা- পদক্ষেপের পদাবলী বাজেটে প্রত্যাশিত থেকেই যাচ্ছে। চলতি সপ্তাহের শেষে সংসদে যে জাতীয় বাজেটটি উপস্থাপিত হবে মাসব্যাপী তা আলোচিত হয়ে 'কণ্ঠভোটে' পাশ হয়ে মহামান্য রাস্ট্রপতির সম্মতির জন্য যাবে, যার বাস্তবায়ন শুরু হবে পহেলা জুলাই থেকে, সেটির প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। 

গতবছর যে বাজেটটি পাশ হয়েছিল, তার বাস্তবায়ন পরিস্থিতি পরিসংখ্যানের প্রতি প্রশ্ন আর আগ্রহ- ইদানীং বড় একটা দেখা যায় না। সবাই দেখতে চায় নতুন বাজেট। বাজেট বাস্তবায়ন পরিস্থিতির প্রতি নজর থেকেও যেন নেই। অথচ বাস্তবায়নের মধ্যেই বাজেটিয় সাফল্য বা প্রভাবক ভুমিকা, প্রত্যাশার প্রকৃত প্রাপ্তি নির্ভর করে এবং এই অভিজ্ঞতার আলোকে নতুন বাজেটে কৌশল পুনঃনির্ধারণের তাগিদ উঠে আসে। বলাবাহুল্য এটিই বাজেট নামক বস্তুটির প্রতি গণ আকর্ষণ-আগ্রহ তথা প্রত্যাশা প্রাপ্তি শুমারের বশংবদ সীমাবদ্ধতা- যদ্দরুন বাজেটের কার্যকারিতা নিয়ে আলোচনা মাঠে তো মারা যায়ই- শুধুমাত্র মিডিয়া যেন সেই আগ্রহ আকাঙ্ক্ষাকে কোরামিন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে । বাজেট নিয়ে যে মিথ বাংলাদেশে তৈরি হয়ে এর তাৎপর্য দিন দিন দিন হীন হয়ে পড়ছে, তার কার্যকরণ বিশ্লেষণে গেলে তাইই দেখা যায় ।  

জাতীয় বাজেট: সাংবিধানিক বাস্তবতা

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চম ভাগে, আইনসভা অধ্যায়ে, ২য় পরিচ্ছেদে, 'আইন প্রণয়ন ও অর্থসংক্রান্ত পদ্ধতি' অনুযায়ী ৮১ অনুচ্ছেদে সংজ্ঞায়িত 'অর্থবিল'-ই ব্যবহারিক অর্থে বাজেট । সংবিধানের কোথাও বাজেট শব্দের নাম নিশানা নেই অথচ লোক সমাজে বাজেট একটি বহুল ব্যবহৃত ও পরিচিত শব্দ। সংসদে সম্পূরক এবং নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব পেশকালে ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে যে 'বাজেট বক্তৃতা' দেয়া হয় তা আইনত বাজেট নয়, সেটি পারতপক্ষে অর্থবিলের নির্বাহী সারাংশ, এবং এটিকে বড়জোর সরকারের 'ভাবাবেগ মিশ্রিত রাজনৈতিক অর্থনীতির বার্ষিক বিবৃতি', কখনো-সখনো নির্বাচনী ইশতেহারও বলা যায়। যেমন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটটিকে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ইতোমধ্যে নির্বাচনী ইশতেহার ভাবতে বলা হয়েছে। 

'অর্থবিল' এর দর্শন ফাঁকফোঁকরসহ সচরাচর লোকচক্ষুর আড়ালেই থেকে যায়, রাস্ট্রপতির অনুমতিক্রমে সংসদে উপস্থানীয় নথিতে অর্থবিলের অবস্থান 'সংযোজনী' হিসেবে। বাজেট প্রস্তাব পেশের পর 'বাজেট আলোচনা'য় অর্থবিলের পর্যালোচনা ও প্রাসঙ্গিকতা খুব একটা দেখা যায় না।

প্রসঙ্গত যে "অর্থবিলের" আওতা ও পরিধি সংক্রান্ত সংবিধানের ৮১(১) উপ-অনুচ্ছেদে (ক) কর আরোপ, নিয়ন্ত্রণ, রদবদল, মওকুফ বা রহিতকরণ ; (খ) সরকার কর্তৃক ঋণগ্রহণ বা কোন গ্যারান্টি দান, কিংবা সরকারের আর্থিক দায়-দায়িত্ব সম্পর্কিত আইন সংশোধন, এবং (গ) সংযুক্ত তহবিলের রক্ষণাবেক্ষণ, অনুরুপ তহবিল থেকে অর্থদান বা নির্দিষ্টকরণ এর দায়িত্ব সংসদের বলা আছে, কিন্তু সরকারের ঋণগ্রহণ বা গ্যারান্টিদান ( বিশেষ করে- নানান শর্তাসাবুদে ভরা কঠিন শর্তের দেশী-বিদেশী ঋণ গ্রহণ সম্পর্কে), কিংবা সরকারের আর্থিক দায়-দায়িত্ব সপর্কে সংসদে আলোচনার নজির দেখা যায় না। 

তদুপরী পর্যাপ্ত বা প্রযোজ্য পরীক্ষা পর্যালোচনায় চলতি বাজেটবর্ষের সম্পূরক (বাজেট) বিল পাশের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে বা ক্ষেত্রে সংসদের সেই অধিকার ও দায়িত্ব পরিপালনের সুযোগ সীমিত । সংবিধানের ৮১(৩) মতে- রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য সংসদে উত্থাপিত, পর্যালোচিত এবং 'পাশকৃত' বাজেটটি পেশ করার সময়ে স্পিকারের স্বাক্ষরে এটি একটি অর্থবিল মর্মে সার্টিফিকেট দিতে হয়, যা সকল বিষয়ে চূড়ান্ত এবং সে সম্পর্কে কোন আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না ।

অর্থবিল এর বিধান, বরাদ্দ, করারোপ সম্পর্কে আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না এ ধরনের অনুশাসন বাজেটিয় সিদ্ধান্তের অয়োময় প্রয়োগকে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা যেমন প্রদান করে একই সাথে সরকারের করনীতি, বন্টন ব্যবস্থায় সংসদের ছত্রছায়ায় নির্বাহী বিভাগের স্বেচ্ছা আচরণকেও সুরক্ষা দেয়। এ কারণে অর্থবিল পাশের পর কেউ আদালতে যেতে না পারলেও করনীতি বাস্তবায়ন পর্যায়ে উচ্চ আদালতে যেয়ে এনবিআরের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিয়ে নিষ্পত্তির দীর্ঘসূত্রিতায় রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে বাধ-সাধার সুযোগ পেয়ে থাকে। 

সংসদীয় কমিটিগুলোর মাধ্যমে অর্থবিলের বিধি বিধান বরাদ্দ সমূহ যাচাই বাছাই উত্তর  সুপারিশ গ্রহণের ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হলে বাস্তবায়ন পর্যায়ে গতানুগতিক  লুকোচুরিসহ  মামলা মোকাদ্দমা এড়ানো সম্ভব হত। সমস্যা হচ্ছে আইন প্রণয়নের সময় সরকার দলীয় নিবর্তনমূলক দৃষ্টিভঙ্গী বিরাজ করলে সেই আইন 'গণ প্রজাতন্ত্রী' দেশে ও পরিবেশে বাস্তবায়নের সময় সমস্যার ডাল পালা ছড়াতেই থাকে। বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট সংসদে পেশ ও পাশের পদ্ধতি প্রক্রিয়ায় পরিলক্ষিত সীমাবদ্ধতা সংস্কারের কথা এখনো ভাবনার পর্যায়েই থেকে যাচ্ছে। 

বাজেট কার, কার জন্য বাজেট

সংবিধানের 'প্রস্তাবনায়' সর্ব প্রথমে উচ্চারিত তিন শব্দ 'আমরা বাংলাদেশের জনগণ'- সঙ্গত কারণে জাতীয় বাজেটে প্রতিফলিত হওয়া উচিত সেই 'সকল' জনগণের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির বিধিবিধান, খতিয়ান। বিশাল টাওয়ার কিংবা বড় গ্রুপ কোম্পানির কর্ণধারের যেমন এই বাজেট, তেমনি নীলফামারীর ডোমার উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের দরিদ্র কৃষকের, শরৎচন্দ্রের গফুর ও মহেশের, চাষাদের, কামার, কুমার- মজুরের । 

'জাতীয়' বাজেটটি হবে রাষ্ট্রের; শুধু সরকারের নয়, শুধু পক্ষের নয়- বিপক্ষেরও এবং সকলের। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা, কৃষি খাতে অগ্রাধিকার এবং বরাদ্দ বাড়ালেই বাজেট জনগনের বাজেট বা ইতিবাচক হয় না। স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ বাড়ালেই মহামারি মোকাবিলায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাড়ে না; এই খাতের ব্যয়ের সক্ষমতা ও  সুশাসন নিয়ে প্রশ্ন যদি বহাল থাকে, দুর্নীতি-অব্যবস্থাপনা–অপারগতায় আকীর্ণ থাকে এবং তা নিরসন-নিয়ন্ত্রণ তথা জবাবদিহিকরণে 'কথায় নয় কাজে' অগ্রগতি না থাকে। বাজেটে বরাদ্দ বড় কথা নয়, অর্থনীতিতে সেই বরাদ্দের কতটা সম্পদ ও সেবা সৃষ্টি হল বা প্রভাব ফেলতে পারল সেটিই বড় কথা ।

২০২২-২৩ বাজেট বর্ষে মহামারি করোনা, বিভিন্ন সময়ের প্রাকৃতিক দুর্যোগে, কিংবা মনুষ্যসৃষ্ট সংকটে বেশি মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের কর্মসংস্থান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার মতো খাতগুলোর অগ্রাধিকার প্রাপ্য। গতবছর ( এখনও পর্যন্ত চলতি বাজেট বর্ষে) করোনার প্রভাবে বাজেট প্রক্রিয়ায় স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতের গুরুত্ব আলোচিত হলেও, সেখানে বরাদ্দ নমিনাল টার্মে আপেক্ষিকভাবে কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও দেখা যায়- জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ, শিক্ষা, দক্ষ জনসম্পদ তৈরি, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসৃজনমূলক শিল্প উদ্যোগে কার্যকর পদক্ষেপের, বাস্তবায়নের খাতে বরাদ্দ সে হারে আরো বাড়ানো প্রয়োজন ছিল, যেভাবে বা হারে জনপ্রশাসনসহ অন্যান্য অনেক অগৌণ খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছিল- সেভাবে বা হারে করোনা যে আর্থিক ও সামাজিক ক্ষতি সাধন করেছে তা পুনরুদ্ধারে পরিপূরক ও সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারত সে সব খাত যেমন স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, সামাজিক সুরক্ষাখাতে বাড়েনি। তথাপি এবং তদুপরি সেই বরাদ্দকৃত অর্থের বন্টন ও ব্যবহার বা বাস্তবায়নের হিসাব মিলানোর সুযোগ সীমিত ।

করোনাকালে শিক্ষাখাতের বরাদ্দ শিক্ষা-কার্যক্রমবিহীন (বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে) খাতে ব্যবহৃত হয়েছে। বিদ্যমান ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে মহানগর ও শহরে বিকল্প (অনলাইন ভিত্তিক) শিক্ষা কার্যক্রম চললেও বিশাল ও ব্যাপক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পাঠবিমুখ করা হয়েছে। টেবিল-চেয়ার পাহারা আর দায়দায়িত্ব কর্মহীন শিক্ষকের পিছনে এবং বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরনে ব্যবহৃত হয়েছে সিংহভাগ বরাদ্দ। অগৌণে শিক্ষা খাতের দিকে দৃষ্টি না দিলে শিক্ষায় বা সমাজে  যে ক্ষরণ ও ক্ষত সৃষ্টি হবে তা হবে করোনার সেরা অভিঘাত।  

উন্নয়নশীল অর্থনীতির বাজেট

বাংলাদেশের অর্থনীতিকে নিম্ন থেকে নিম্ন-মধ্যবিত্তের তকমা পেতে হলে- সকল খাত ও ক্ষেত্রে একযোগে উন্নয়নশীল হতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণবায়ু কৃষি খাতে- কৃষির উৎপাদন তথা সামগ্রিকভাবে কৃষিখাতের উন্নতি একটি সম্মিলিত প্রয়াস। যেখানে কৃষিবিদ, কৃষিবিজ্ঞানী, কৃষক ও কৃষি উপকরণের সাথে সম্পৃক্ত বেসরকারি খাত, আমিষ, শর্করা সরবরাহকারীরাও সরাসরি জড়িত। 

কৃষিক্ষেত্রে ভর্তুকি/প্রণোদনা যেন যথাযথভাবে এবং যথাসময়ে সত্যিকার প্রান্তিক চাষিরা, খামারিরা পায়। হাওরের বাঁধ কিংবা উপকূলীয় অঞ্চলের ভেড়িবাঁধ স্থায়ীভাবে নির্মাণের পদক্ষপ থাকা অবশ্যক হবে। নতুন নতুন উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণে বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের অবদান কম নয়। সেজন্য সরকারি খাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাতেও বাজেট বরাদ্দ থাকা উচিৎ।

রাসায়নিক সারের তুলনায় জৈবসার মাটির স্বাস্থ্য ভাল করে বিধায় রাসায়নিক সারের মত বাজেটে জৈবসার উৎপাদনে ভর্তুকির ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। দেশের প্রান্তিক চাষিরা যাতে তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় তার সুস্পষ্ট কৌশল, মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রতিরোধ, পথে পথে চাঁদাবাজের দৌরাত্ম্য; প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত পরিব্যাপ্ত দুর্নীতি কমানোর অঙ্গীকার বাজেটে থাকা দরকার। বাংলাদেশের প্রায় সকল খাতেই বিমার ব্যবস্থা থাকলেও গত বাজেটে কৃষি ও কৃষকের বিমার প্রস্তাবনা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। প্রান্তিক চাষী, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তা, খামারি, মাছ চাষির কাছে প্রণোদনা প্যাকেজের টাকা পৌঁছায়নি। ব্যাংক বা আর্থিক খাতে বিশাল ব্যাধির সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ধনী আরো ধনী হওয়ার সহজ সুযোগে- আয়বৈষম্য বেড়েই চলেছে। অন্তভুর্ক্তির নামে বিচ্ছিন্নতাই বাড়তে থাকলে 'কাউকে পেছনে ফেলা যাবে না' এসডিজি গোল (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) অর্জনের এ মর্মবাণী সকরুণ ব্যর্থতার বিবরে উন্নয়নশীল অর্থনীতির কপোলে কালো তিলক আঁকতেই থাকবে ।

গ্রামীণ কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় বরাদ্দ আরও কর্মসৃজনমূলক সৃজনশীল খাত সৃষ্টি এবং নমিনাল টার্মে বেশি থাকা দরকার এবং বন্টনে পক্ষপাতিত্বহীন ও স্বচ্ছ হওয়া আবশ্যক। ৫০ লাখ প্রাপককে যে বিশেষ অর্থপ্রদান করা হয়েছিল এবং সামনে ঈদ উপলক্ষে ১ কোটি প্রাপককে প্রদানের ঘোষণা আসছে তা বিলিবন্টনে ন্যায্যতা, সঠিক গন্তব্য ও  প্রাপ্যতা  নিয়ে এখনও যে সংশয় রয়ে গিয়েছে- তার নিরসনে ব্যবস্থা বা নজর থাকা আবশ্যক হবে।

ব্যবসা বাণিজ্য বিনিয়োগ বান্ধব বাজেট

চলতি বাজেটে বাজেটে একদিকে দুর্নীতির বিরূদ্ধে কঠোর অবস্থানের ও সুশাসনের কথা থাকলেও যেভাবে অপ্রদর্শিত কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে বা হবে তা স্ববিরোধিতায় পূর্ণ। জরিমানা ছাড়া হ্রাসকৃত হারেও কর দিলে 'কোনো সংস্থা কোনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না' এভাবে দেশের কিংবা দেশের বাইরে পাচার করা কালো টাকা এমনেস্টি দিয়ে তথাকথিত সাদা করার সুযোগ থাকলে সৎ ও নিয়মিত করদাতাদের আরও নিরুৎসাহিত করা হবে। যথাযথ জরিমানা ও প্রযোজ্য কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার 'সময় নির্দিষ্ট' করে দেয়া না হলে এবং অর্জিত আয় উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন না তোলার প্রতিশ্রুতি দেয়ার অর্থই হবে সংবিধানের ২০(২) ধারায় বর্ণিত বিধান ( 'রাষ্ট্র এমন অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করিবেন, যেখানে সাধারণ নীতি হিসাবে কোনও ব্যক্তি অনুপার্জিত আয় ভোগ করিতে সমর্থ হইবেন না') এর পরিপন্থী অবস্থান গ্রহণ।

রাষ্ট্রের দায়িত্ব যেখানে কালো টাকা আয় উপার্জনের পথ বন্ধ করা এবং উদ্ধারে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়া, তার পরিবর্তে রাষ্ট্র যদি দুর্নীতিজাত অর্থ উদ্ধার কিংবা মূলধারায় প্রত্যাসনের নামে উৎসাহব্যঞ্জক কিংবা প্রণোদনামূলক পদক্ষেপে যায় বা দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণ করে- তবে তা হবে সমাজে বৈষম্য সৃষ্টিতে সহায়তার নামান্তর । কেননা যখন যে সমাজে ও অর্থনীতিতে  পুকুর চুরির, পর্যাপ্ত আত্মসাতের, দুর্নীতির এবং শুল্ক কর ফাঁকি দিয়ে পার পাওয়ার সুযোগ থাকে এবং পরবর্তীতে তোষনের সুযোগ হাতছানি দেয়; তখন কালো টাকা সাদা করার তাগিদ তো থাকেই  না বরং কালো টাকার স্ফীতমেদ দেশ, সমাজ ও অর্থনীতিকে গ্রাস করতে উদ্যত হয় । কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস কেন ও কীভাবে বাড়ছে, কেন ও কীভাবে সেই দুনীর্তিজাত আয়ের অর্থপাচার হচ্ছে- সেদিকে মনোযোগ না দেয়া হবে আত্মঘাতী, ব্যবসা-বাণিজ্য আর বিনিয়োগ বান্ধব বাজেট ঘোষণার প্রতি প্রতারণা।

বেকারত্ব দূর তথা কর্মসংস্থানের জন্য 'বাজেট বক্তৃতায়' অনেক কথা বলা হয়। তবে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি, বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের হতাশা দূর, এই মুহূর্তে অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন কাজের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, সেটা কীভাবে সমন্বয় হবে, প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদা সুষ্টি করা যাবে, সেই সুযোগের ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ ও দিকনির্দেশনা চলতি বাজেটেও যেমন প্রয়োজন ছিল, নতুন বাজেটে সে সবের বাস্তবায়নানুগ ও লক্ষ্যভেদী পদক্ষেপ থাকতে হবে ।  

করোনা-উত্তর পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে চীনসহ অনেক দেশ থেকে জাপানী বিনিয়োগ অন্যত্র স্থানান্তরের যে সুযোগের হাতছানি আমরা দেখতে পাচ্ছি- সেখানে গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশকে সক্ষম করে তোলার প্রয়োজনীয়তা অগ্রগণ্য- বাজেটে তার কার্যকর কর্মপরিকল্পনা থাকাও দরকার ।

এই মুহুর্তে সম্প্রসারণ-ধর্মী অথচ কৃচ্ছতাকামী বাজেটের প্রয়োজনীয়তা কেন   

এই মুহূর্তে করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অভিঘাত মোকাবেলায় দেশের অর্থনৈতিক বুনিয়াদকে চলমান ও টেকসই রাখতে সুপরিকল্পিত ও সম্প্রসারণধর্মী বাজেটের কোনো বিকল্প নেই। করোনাকালে এবং করোনা-উত্তর পরিবেশ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়নশীল দেশে উন্নীতকরণ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও প্রগতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত করতে একটি বহুমুখী, বাস্তবায়নযোগ্য এবং সম্প্রসারণশীল বাজেটের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কাঠামো ও এর গতিপ্রকৃতির সাথে তুলনা করলে সাম্প্রতিক কালের বাজেট বরাদ্দকে উচ্চাভিলাসী বলা চলে না; বাস্তবিক ভাবেই এ বাজেট বরাদ্দ খুব বেশি নয়। এদেশের অর্থনীতির ভিত মজবুত করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দেশীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণ করা, অবকাঠামোগত উন্নয়নে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, সামাজিক নিরাপত্তা বলয় বৃদ্ধি, সামগ্রিক ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের জন্য বাজেটের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করার অবকাশ রয়েই যাচ্ছে।

বাংলাদেশের বাজেটের আকার বাড়ছে, বাড়বে। ঘাটতি বাড়বে । সে কারণে বাজেট সামলানো ও বাস্তবায়ন সক্ষমতা বাড়ানোর চাপও বাড়ছে। বাজেট বরাদ্দে দক্ষতা উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বরাদ্দকৃত অর্থের যথাযথ ব্যবহারের সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। এক্ষেত্রে প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার, বাজেট বাস্তবায়নে যথাযথ পরিবীক্ষণ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়ধর্মী যোগাযোগ ও লক্ষ্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সমঝোতা বৃদ্ধি, দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সকলের সঙ্গে একজোট হয়ে কাজ করতে পারলে করোনাকালেও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব বৈকি।  

এখন জ্বলন্ত ইস্যু হচ্ছে করোনাভাইরাস- উত্তরকালে জীবন বাঁচানোর প্রশ্ন প্রথম, দ্বিতীয় ইস্যু হচ্ছে জীবিকা। তৃতীয় এবং অন্যতম ইস্যু সর্বস্তরে পরিব্যাপ্ত দুনীর্তি দমন। অভ্যন্তরীণ বাজার নিয়ন্ত্রণ ও সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ানো। এটা এখন এক নতুন বাংলাদেশ। আগের অবস্থা আর ফিরে আসবে না। নতুন পরিস্থিতি, নতুন সমস্যা, নতুন সম্ভাবনা। অর্থনীতির কাঠামো পরিবর্তনে এগিয়ে আসতে হবে। মোদ্দা কথা ,অর্থনীতিতে অদম্যতার শক্তি এবং মানবদেহে ইমিউন পাওয়ার বাড়াতে হবে। আসন্ন বাজেটে এ লক্ষ্যে উপযুক্ত প্রেসক্রিপশন প্রত্যাশিত থাকবে।

বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ

  •  ব্যয়ের বাজেটে অর্থায়নে অভ্যন্তরীণ (রাজস্ব আয় ) সম্পদের অপ্রতুলতা
  •  বেসরকারি খাতে বিনিয়োগে দৃশ্যত স্থবিরতা
  •  স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অনুপস্থিতির আড়ালে- দুর্নীতিগ্রস্ততায় অর্থনীতিতে ক্ষরণ, ব্যবসা করার খরচের ঊর্ধ্বগামীতা
  •  সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় সমন্বয়হীনতা এবং এমনকি সম্পূরক বাজেট অনুমোদনকালে তা যথাবিবেচনায় না আসা  
  •  মেগা প্রকল্পে ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়ার পরিবর্তে ব্যয় বৃদ্ধি, প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা, করোনাকালে কিংবা করোনাউত্তর অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় কৃচ্ছতা সাধন ও ব্যয় সংকোচন এর দাবি ও যৌক্তিকতা অনুসরণে অপারগ পরিস্থিতি ও পরিবেশ  
  •  ঐকমত্যের ওজস্বিতা অনৈক্যের মাসুল দিতে দিতে হ্রাস পাওয়া
  •  অন্তর্ভুক্তির দর্শন বিচ্ছিন্নতার বাস্তবতায় ধোঁয়াসে হওয়া
  •  বেকারত্ব বেড়ে যাওয়া, প্রবাসীদের দেশে ফেরা, রপ্তানি বাজার সংকুচিত হওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন হেতু বন্যা, ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড়ে কৃষি উৎপাদন ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতি
  •  করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বহির্মুখী খাত ও ক্ষেত্রসমূহ সংকুচিত হওয়া   

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাজেটে করণীয় ও কৌশল সন্ধান

# রাজস্ব আহরণ খাতে চলমান সংস্কার ও অনলাইনীকরণ বাস্তবায়নে দৃঢ়চিত্ত ও সময়সূচি ভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণ করা । বিদ্যমান আইনের সংস্কার এবং অনলাইনীকরণ ব্যতিরেকে বিদ্যমান কর্মকাঠামো ও লোকবল দিয়ে রাজস্ব আহরণ পরিস্থিতি ও পরিবেশের উন্নয়ন সাধন সম্ভব ও সমীচীন হবে না।

# রাজস্ব আহরণ ও প্রদান ব্যবস্থাপনাকে গতিশীল ও আস্থায় আনতে সংসদের অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির তত্ত্বাবধানে সরকারি-বেসরকারি খাত সমন্বয়ে উপদেষ্টা প্যানেল প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। এ প্যানেল থেকেই কর নীতি ও রাজস্ব আহরণ পদ্ধতি প্রক্রিয়ার সংস্কার প্রস্তাব আসতে পারে। জাপানসহ অনেক উন্নত অর্থনীতির দেশে এধরনের রাজস্ব ব্যবস্থাপনা আছে।

# করদাতা এবং কর আহরণকারী দপ্তরের মধ্যে রাজস্ব আহরণ বিষয়ক জটিলতার সমস্যা আপীল আবেদন নিষ্পত্তি উপরিদর্শনের মাধ্যমে পারষ্পরিক আস্থার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য কর ন্যায়পাল অফিস পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। ২০০৫ সালে যে উদ্দেশ্য ও অভিপ্রায়ে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান করন্যায়পাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, ২০১১ সালে অর্থাৎ মাত্র সাড়ে পাঁচ বছরের মাথায় বিশ্বব্যাপী অনুসৃত এই প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত করার প্রেক্ষাপটটি পুনঃপর্যালোচনার অবকাশ রয়েছে।

# বাংলাদেশে বর্তমানে অর্থবছর শুরু ও শেষ হয় পূর্ণ বর্ষা মৌসুমে (আষাঢ় মাসে)। বর্ষায় অর্থবছর শুরু হওয়ায় উন্নয়ন কর্মকান্ড শুরু হতে দেরি হয়। একইভাবে শেষের দিকেও বর্ষা থাকায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাওয়া/শেষ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে এডিপি বাস্তবায়নে অসুবিধার সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে বর্ষাকাল, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাকার কারণে অর্থবছর শেষের তিন মাসের মধ্যে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা অর্থবছর শেষ হওয়ার ৫ মাস পর- অর্থাৎ নভেম্বর মাসে। সামস্টিক অর্থনীতি পরিচালনার স্বার্থে আয়কর এত দেরিতে পাওয়া বিধেয় নয়। এসব কারণে ভারত, জাপানের মত জানুয়ারি অথবা এপ্রিল থেকে অর্থবছর শুরু করা হলে এডিপি বাস্তবায়ন, রাজস্ব আহরণ ও কাজের মান নিশ্চিত করা সহজ হবে।

#কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর জন্য কর জাল বাড়ানো প্রয়োজন। একই সাথে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা সঠিকভাবে কর পরিশোধ করছে কিনা তাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। দেশী বিদেশী ও বহুজাতিক সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের কর্পোরেট ও ব্যক্তিগত কর আদায় নিশ্চিত করতে পারলে শুধুমাত্র কর প্রাপ্তিই বাড়বে না- সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান/সংস্থার হিসাবও অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির আওতায় আসবে।  

# ঢালাওভাবে অধিক বা অধিকাংশকে কর রেয়াত, মূসক ও কাস্টমস শুল্ক ছাড় দেয়ার বিষয়টি স্বছ্ছতা ও জবাবদিহিতার দৃষ্টিতে পর্যালোচনা করা  উচিত। যারা কর রেয়াত ও শুল্ক মওকুফ পেয়ে থাকে তাদের হিসাব সংরক্ষণ যাচাইয়ের সুযোগ থাকে না। আয়কর, মূসক ও শুল্ক পরিশোধের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য নয়- এটি সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ভিত্তি নির্মাণ করে।   

# নীতি অনুমানের সুবিধার্থে আর্থিক নীতিমালা ঘনঘন পরিবর্তন না করা এবং আইন, বিধি, পদ্ধতি জারিতে ধারাবাহিকতা থাকা বা রাখা উচিত।

#বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে অচল অর্থনীতিকে সচল রাখার, বেকার ও ক্ষুধা রোধের, করোনায় ক্ষতি পুনরুদ্ধার ও পুনর্বাসন, করোনায় সৃষ্ট মন্দা মোকাবিলা এবং সম্ভাব্য সুযোগের (কৃষি, স্বাস্থখাত, আইটি, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার খাতে অধিক মনোযোগ ও দক্ষ জলবল সৃষ্টিসহ বিদেশফেরত বিদেশি বিনিয়োগ ঘরে আনা) সদ্ব্যাবহার ও অনিশ্চিত পরিস্থিতি মোকাবিলা'র সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ, কর্মপরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন দিক নির্দেশনা ২০২২-২৩ বাজেট বর্ষেও বাজেটে আয়-ব্যয় বন্টনে তার প্রতিফলন থাকতে  হবে।

# রাজস্ব আয়, জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবং অর্থনীতির কিছু সূচকের লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবসম্মত হওয়া দরকার; এসবের পরষ্পর প্রযুক্ততার বিশ্লেষণে গেলে স্ববিরোধিতা ফুটে উঠে। এসব নিশ্চিত হতে গেলে (১) বিশ্বমন্দা দ্রুত কেটে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোতে বাংলাদেশের পোশাকের চাহিদা বাড়তে হবে; (২) প্রবাসী শ্রমিকদের ফিরিয়ে নিতে হবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর; (৩) দেশের মধ্যে সাধারণ মানুষের হাতে নগদ অর্থ থাকতে হবে; (৪) বাড়তে হবে চাহিদা; (৫) কেউ চাকরি হারাবেন না, কারও বেতনও কমবে না এবং সর্বোপরি (৬) বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির ১২ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২৫ দশমিক ৩ শতাংশ হতে হবে। অথচ বেসরকারি বিনিয়োগ জিডিপির ১ শতাংশ বাড়াতে ৫ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে যে অর্থনীতিতে, যখন সেই অর্থনীতিতে করোনাভাইরাস বেসরকারি খাতনির্ভর বেসরকারি বিনিয়োগ এক অর্থবছরেই জিডিপির ২৪ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমে ১২ দশমিক ৭ শতাংশ নেমে যাওয়ার মত ক্ষতি ইতোমধ্যে সাধন করেছে এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির পতাকা ৮.২ স্কেল থেকে ৫.২- এ নামাতে হয়েছে । এ বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিয়েই, বিবেচনায় রেখেই  লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হওয়া উচিত।

# বাংলাদেশ বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে যাচ্ছে, ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগে বড় উলম্ফন হতে যাচ্ছে- এ ধরনের অনুমান আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও ভুল বার্তা দিতে পারে। এটি কোভিড মোকাবিলায় তহবিল পাওয়ার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এ বছর আপাতত প্রবৃদ্ধির চেয়ে মানুষের নজর জীবনযাত্রা ও কর্মসংস্থান কতোটা টিকে থাকবে সেদিকে নজর রাখতেই হবে। জিডিপির প্রবৃদ্ধি পরের বাজেট বছরে করোনা, সম্ভাব্য বৈশ্বিক মন্দা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা ও জাতীয় পুঁজি সংবর্ধন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ন্যূনতম কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারলে ৭-৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়ত খুব কঠিন হবে না।


 

  • লেখক: সরকারের সাবেক সচিব, এন বি আরের সাবেক চেয়ারম্যান

Related Topics

টপ নিউজ

বাজেট ২০২২-২৩ অর্থবছর

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ট্রাম্প প্রশাসনে থাকাকালীন মাদকে বুঁদ ছিলেন ইলন মাস্ক, প্রতিদিন লাগত ২০ বড়ি কিটামিন
  • ২০৪০ সালের আগেই হারিয়ে যেতে পারে আপনার ফোনের সব ছবি
  • উদ্বোধনের আগেই সাগরে বিলীন ৫ কোটি টাকায় নির্মিত কুয়াকাটা মেরিন ড্রাইভ
  • ট্রাম্প প্রশাসনকে ৫ লাখ অভিবাসীর বৈধ মর্যাদা বাতিলের অনুমতি দিল মার্কিন আদালত
  • ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের আমদানি শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করার ঘোষণা ট্রাম্পের
  • আয়া সোফিয়া: সাম্রাজ্যের পতনের পরও যেভাবে টিকে আছে ১৬০০ বছরের পুরোনো স্থাপনা, কী এর রহস্য

Related News

  • বেশি আমদানি ব্যয়ের কারণে শিল্প ঋণ বেড়েছে ২২ শতাংশ
  • জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট পাস
  • অগ্রিম করে বিপাকে নির্মাণ শিল্প
  • পাচার অর্থ ফেরত আনার সুযোগ দিয়ে প্রবাসীদের অপমান করা হয়েছে: রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান
  • ‘বিমানের যন্ত্রাংশের ওপর কর মওকুফে উপকৃত হবে সবাই’ 

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প প্রশাসনে থাকাকালীন মাদকে বুঁদ ছিলেন ইলন মাস্ক, প্রতিদিন লাগত ২০ বড়ি কিটামিন

2
আন্তর্জাতিক

২০৪০ সালের আগেই হারিয়ে যেতে পারে আপনার ফোনের সব ছবি

3
বাংলাদেশ

উদ্বোধনের আগেই সাগরে বিলীন ৫ কোটি টাকায় নির্মিত কুয়াকাটা মেরিন ড্রাইভ

4
আন্তর্জাতিক

ট্রাম্প প্রশাসনকে ৫ লাখ অভিবাসীর বৈধ মর্যাদা বাতিলের অনুমতি দিল মার্কিন আদালত

5
আন্তর্জাতিক

ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের আমদানি শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করার ঘোষণা ট্রাম্পের

6
আন্তর্জাতিক

আয়া সোফিয়া: সাম্রাজ্যের পতনের পরও যেভাবে টিকে আছে ১৬০০ বছরের পুরোনো স্থাপনা, কী এর রহস্য

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net