Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
May 30, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, MAY 30, 2025
বাংলাদেশে একসঙ্গে ৭ বউ নিয়ে বসবাস কীভাবে ধর্ম ও আইনসঙ্গত হয়?

মতামত

শাহানা হুদা রঞ্জনা
26 December, 2023, 03:30 pm
Last modified: 26 December, 2023, 03:35 pm

Related News

  • কাশ্মীর সংকটে উত্তেজনা নয়, দুই দেশের যৌথ সমাধানই একমাত্র পথ
  • কয়েকটি প্রস্তাবের ভিন্নমত জানিয়ে ঐকমত্য কমিশনে মতামত পাঠাল ইসি
  • ধর্ষণকে ধর্ষণই বলতে হবে, এর অন্য কোনো নাম নেই
  • আরেফিন স্যার, অভিবাদন গ্রহণ করুন, আপনার স্থান আমাদের হৃদয়ে
  • সংস্কারের সুপারিশগুলোতে মাত্র ৭টি রাজনৈতিক দল মতামত দিয়েছে: ঐকমত্য কমিশন

বাংলাদেশে একসঙ্গে ৭ বউ নিয়ে বসবাস কীভাবে ধর্ম ও আইনসঙ্গত হয়?

পুরুষের এই বহুবিবাহ করার ক্ষেত্রে ধর্মের বিষয়টিকে সামনে টেনে এনে একে জায়েজ করার চেষ্টা করা হয়। ইসলাম ধর্মে একসঙ্গে চার স্ত্রী পর্যন্ত রাখার অনুমতি থাকলেও পবিত্র কোরআনে স্ত্রীদের প্রতি সমান অধিকার নিশ্চিত করার জন্য জোর তাগিদও দেওয়া হয়েছে; অর্থাৎ এ ধরনের বিয়েকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। ইসলাম প্রয়োজনে দ্বিতীয় বিয়ে করাকে জায়েজ করেছে এটি সত্যি। কিন্তু একাধিক বিয়েকে কখনও উৎসাহিত করেনি। কোরআনের যে আয়াত দিয়ে বহুবিবাহকে জায়েজ করা হয়েছে এবং এর দলিল পেশ করা হয়েছে, সেই আয়াতেই স্বয়ং আল্লাহতায়ালা দ্বিতীয় বিয়েকে অযথাই উৎসাহিত করেননি। কারণ একাধিক স্ত্রী থাকলে তাদের সবার মধ্যে সমতা বিধান করা স্বামীর কর্তব্য। কারও ক্ষেত্রে কম-বেশি হলে শেষ বিচারের দিন স্বামীকে জবাবদিহি করতে হবে এবং শাস্তিও পেতে হবে। সেখানে একসঙ্গে ৭ বউ নিয়ে বসবাস কীভাবে ধর্ম ও আইন সঙ্গত হয়?
শাহানা হুদা রঞ্জনা
26 December, 2023, 03:30 pm
Last modified: 26 December, 2023, 03:35 pm
শাহানা হুদা রঞ্জনা। অলংকরণ: টিবিএস

ছাত্রজীবনে, অর্থাৎ ১৯৮২/৮৩ সালের দিকে ঢ্যাড়ামদ্দীন নামে ছোট একটি ছেলে আমাদের বাসায় এসেছিল গ্রামের বাড়ি নীলফামারি থেকে। ও বলেছিল, "মোর আটখান মাও। কায় যে মোর নিজের মাও মুই তাও জানোনা। মোর বাপ মাছ চোর। ওমরালার শোখ নাগাড় বিয়া করা। তয় এতগুলা মা থাকিলেও কোনদিন কাহো মোক আদর করি খাইতে দেয় নাই।" (ঢ্যাড়ার বাবা একজন মাছ চোর। সে ৮টি বিয়ে করেছিল। কে যে ওর আপন মা, ও জানতো না। বিয়ে করাটাই ওর বাবার শখ। তবে কেউ ওকে কখনো আদর করে খেতে দেয়নি)। 

প্রায় ৪০ বছর পরেও একই অবস্থা দেখতে পেলাম। একজন মানুষ মাত্র ৩৮ বছর বয়সে ৭টি বিয়ে করে ফেলেছেন। এখন তার একসঙ্গে ৭টি বউই সংসার করছেন। বোঝাই যাচ্ছে নারী সম্ভোগের ক্ষেত্রে এই লোকের খায়েশ ভয়াবহ। দেশের আইন এবং ধর্মীয় নিয়মকে পাত্তা না দিয়ে কুষ্টিয়ার রবিজুল ইসলাম যে ৭ জন স্ত্রী নিয়ে সংসার করছেন, একে স্বাভাবিক যৌন আচরণ বলা যায় কি?

সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক গবেষণায় স্বাস্থ্যগত নানান রকম সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। তারমধ্যে যৌন আসক্তিকে মানসিক ব্যাধি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তাতে এও বলা হয়, নানান ধরনের মানুষের মধ্যে নানান রকম যৌন চাহিদা থাকে। তাতে আরও বলা হয়, যেসব ব্যক্তি নিজেদের যৌন আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না এবং শারীরিক মিলনের পরেও বারবার মিলনের জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়েন, তারা যৌন আসক্ত। এসব মানুষের বেশ কয়েকজন যৌনসঙ্গী থাকে। আবেগের জায়গা না থাকলেও অনেকের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক থাকে। সর্বোপরি অসামাজিকভাবে কেবল যৌন বিষয়ে আকাঙ্খা তৈরি হয় ভুক্তভোগীর মনে। কুষ্টিয়ায় ৭ জন স্ত্রী নিয়ে যে লোক সংসার করছেন, তার যৌন আকাঙ্খাকে কোনোভাবেই স্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে না। 

রবিজুলের সঙ্গে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করার পর লোকটি নির্লজ্জভাবে বলেছেন 'বড় বউ' তো সব জানেন। দুই মাস আগে সর্বশেষ যে বিয়ে করেছেন, তাতে তার চার স্ত্রী সাক্ষীও দিয়েছেন। তার সংসারে কোনো অশান্তি নেই। রবিজুল যখন ছোট, তখনই তার মা নাকি ছেলের সাতটি বউ থাকবে– এ জাতীয় মানত করেছিলেন। মা মারা যাওয়ার আগে রবিজুলের চার স্ত্রীকে দেখে গেছেন। রবিজুলের ভাষায়, মায়ের স্বপ্নপূরণ এবং 'গরীব-মিসকিন' নারীদের সাহায্য করার জন্যই তিনি বিয়েগুলো করেছেন। রবিজুল মাত্র ১৩ বছর বয়সে এক কিশোরীকে বিয়ে করেছিলেন। গত তিন মাসে তিনটি বিয়ে করেছেন। রবিজুল এক যুগ লিবিয়ায় ছিলেন। সেখানে গিয়েও একটি বিয়ে করেছেন। 

৭ স্ত্রী রাখার ব্যাপারে 'মায়ের মানত', স্ত্রীদের গরীব-মিসকিন মেয়ে বলে পরিচয় দেওয়া, ১৩ বছরের মেয়েকে বিয়ে, এক মাসে তিনটি মেয়েকে বিয়ে করা, লিবিয়ায় বসেও বিয়ে করার যে ইতিহাস– তাতে লোকটাকে ঠিক ভদ্র মানুষ বলে মনে হচ্ছে না। কোনো স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে একসঙ্গে এতজন স্ত্রী নিয়ে বসবাস করা সম্ভব নয়। 

বিস্মিত হয়েছি সেই নারীদের কথা শুনে, যারা পরস্পরকে বোন জ্ঞান করে একসাথে এক স্বামীর কাছে রয়েছেন। বেশ গদগদভাবে তারা বলে গেলেন, এইভাবে থাকাতে তাদের কোনো আপত্তি নেই। এটা কতটা অস্বাভাবিক চিন্তা তাতো কারো বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। রবিজুল ও জুয়েল দুজনই জানিয়েছেন, কর্মক্ষেত্রে বা ফেসবুকে নারীদের সঙ্গে যোগাযোগের পর তারা বিয়ের সম্পর্কে জড়িয়েছেন। জুয়েল অবশ্য গণমাধ্যমকে বলেছেন, একাধিক স্ত্রী থাকার ফলে বাইরে আর কারও সঙ্গে তাকে খারাপ সম্পর্কে লিপ্ত হতে হচ্ছে না। এর মানে দাঁড়ায়, শুধু প্রকট যৌন ইচ্ছা চরিতার্থ করার জন্য লোকগুলো একের পর এক বিয়ে করে চলেছেন।

দেশে কি এ সংক্রান্ত কোনো আইনকানুন নেই? একসঙ্গে ৭ স্ত্রী নিয়ে কীভাবে সংসার করছেন? বহুবিবাহ করা এই ব্যক্তিদের বিয়েগুলো নিবন্ধিত হয়েছে কি না বা হয়ে থাকলে তা কীভাবে হলো– এগুলো নিয়েও কোনো প্রশ্ন তোলা হচ্ছে না। ধর্মীয় নেতারাও কিছু বলছেন না। বহুবিবাহ করা এই ব্যক্তিরা আইনকানুনের তোয়াক্কা না করেও নিজের মতো করে বিয়েকে 'যৌন ব্যবসার কাতারে' নিয়ে গিয়েছেন। 

বাংলাদেশে যদিও বহুবিবাহ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ নয়, কিন্তু এখানে পুরুষকে বহুবিবাহ করতে হলে কিছু প্রধান শর্ত আছে। যেমন– বর্তমান স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব, দৈহিক দুর্বলতা, দাম্পত্য সম্পর্কের জন্য দৈহিক অনুপযুক্ততা, দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য প্রদত্ত আদালতের কোনো ডিক্রিকে ইচ্ছাকৃতভাবে এড়ানো, বর্তমান স্ত্রীর মানসিক অসুস্থতা এবং এসব সমস্যা সাপেক্ষে স্ত্রীর সজ্ঞানে সম্মতি পূরণ করে এবং সেগুলো প্রমাণ করে বহুবিবাহ করতে পারে। বহুবিবাহ নিয়ে দেশে কোনো পরিসংখ্যান বা জরিপ চোখে পড়েনি সত্যি, কিন্তু রবিজুল ছাড়াও আরও অনেক পুরুষ কোনো কারণ না দেখিয়ে একের অধিক স্ত্রী নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। এদের অনেকেই হয়তো দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ বিয়ে করার সময় প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নেননি বা তাকে তালাক দেননি। শুধু বিয়ের পর বিয়ে করে গেছেন।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী ইশরাত হাসান সাত বিয়ে বা চার বিয়ে করা প্রসঙ্গে বলেন, শরিয়াহ আইন বা দেশের আইন, সামাজিক দৃষ্টিকোণ কোনো দিক দিয়েই এসব বিয়ে গ্রহণযোগ্য নয়। বহুবিবাহের বিষয়টিকে এখনো মজা, বিনোদন বা তেমন বড় কোনো বিষয় নয় বলেই ভাবা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন ইশরাত হাসান। (প্রথম আলো)

গ্রামাঞ্চলে একটা বউ রেখে শহরে কাজে গিয়ে আরও ২/৪টা বিয়ে করা খুব স্বাভাবিক ঘটনা বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষপটে। এজন্য পুরুষকে কোথাও কোনোধরনের জবাবদিহি করতে হয় না। কেউ কেউ সংসারে অনায়াসে ২/৩টা বউ রাখেন, জমি ও গৃহকাজের 'পারিবারিক শ্রমিক' হিসেবে। এদেশের নারীরা এতটাই অধঃস্তন অবস্থানে বড় হয়ে ওঠেন যে, পরিবার যখন দোজবরে বিয়ে দেন, তারা চোখ বন্ধ করে স্বামীর দ্বিতীয়, তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ের পিঁড়িতে বসে পড়তে বাধ্য হন। এইতো কিছুদিন আগেও গণমাধ্যমে খবর হয়েছে যে রাজশাহীর পবা উপজেলার জুয়েল (২৮) ছয়টি বিয়ে করেছেন। রবিজুল বা জুয়েলরা প্রশাসনের নাকের ডগায় একের পর এক বিয়ে করেই চলছেন। তাদের ঠেকানোর কেউ নেই।

স্বামীর ব্যাপারে এদেশের অধিকাংশ নারী এতোটাই স্পর্শকাতর থাকেন যে স্বামীর বহুবিবাহ, বহুপ্রেম, বহু চাহিদা সবই মুখ বুঁজে মেনে নেন। 'সোয়ামি একটা থাকা লাগে তাই তারও আছে'— এ ধরনের একটা চিন্তা নারীর মাথায় সমাজ ঢুকিয়ে দিয়েছে। স্বামী ছাড়া চললে অপমানিত হওয়ার ভয় আছে বলেই মেয়েরা স্বামীকে যেকোনোভাবে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করে। যেমন– ২৭ বছর আগে ছোট শিশুসন্তানসহ স্ত্রীকে ফেলে রেখে নিরুদ্দেশ হয়েছিলেন কুড়িগ্রামের জহর উদ্দিন ওরফে বাচ্চু। হঠাৎ পরিবারের কাছে ফিরে আসেন তিনি। কুড়িগ্রামের এই কৃষক আকস্মিকভাবে বাড়িতে ফিরে আসায় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিল তার পরিবার ও প্রতিবেশীরা। তারা তাকে বীরের সম্মান ও ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেছে। ইতোমধ্যে লোকটি নাটোরে আরেকটি বিয়েও করেছেন। 

জহির উদ্দিনের স্ত্রী জাহেদা বেগমও বেজায় খুশি। যদিও উনি ২৭টি বছর ধরে ভিক্ষা করে ও মানুষের বাড়িতে কাজ করে একমাত্র সন্তানকে বড় করেছেন। তিনি আশায় ছিলেন যে, তার স্বামী একদিন ফিরে আসবেন। জহির নামের লোকটিকে গ্রামবাসী ও স্ত্রী মেনে নিয়েছেন ভালো কথা। কিন্তু জানতে ইচ্ছা করে যে জহির সাহেবের স্ত্রী জাহেদা বেগম যদি এইভাবে ২৭ বছর পর বা ২৭ দিন বা ২৭ ঘন্টা পর ফিরে আসতেন, তবে কি তার স্বামী বা সমাজ ঠিক এইভাবেই তাকে বরণ করে নিতো? নাকি জাহেদার চরিত্র নিয়ে নানান ধরনের আজেবাজে কথা বলতো।

এটাই হচ্ছে আমাদের সমাজের ছবি। এখানে একজন পুরুষ একাধিক বউ নিয়ে দিব্যি দিনযাপণ করতে পারেন। এখানে পুরুষ স্বাধীন, বহির্মুখী, ক্ষমতাধর, চরিত্রবান এবং বীর। নারী এভাবেই পুরুষকে মেনে নিয়েছে, সমাজও তাই। নিয়ম শুধু নারীর জন্য, লজ্জাও নারীর একার এবং পরাধীন শুধু নারী।

পুরুষের এই বহুবিবাহ করার ক্ষেত্রে ধর্মের বিষয়টিকে সামনে টেনে এনে একে জায়েজ করার চেষ্টা করা হয়। ইসলাম ধর্মে একসঙ্গে চার স্ত্রী পর্যন্ত রাখার অনুমতি থাকলেও পবিত্র কোরআনে স্ত্রীদের প্রতি সমান অধিকার নিশ্চিত করার জন্য জোর তাগিদও দেওয়া হয়েছে; অর্থাৎ এ ধরনের বিয়েকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। ইসলাম প্রয়োজনে দ্বিতীয় বিয়ে করাকে জায়েজ করেছে এটি সত্যি। কিন্তু একাধিক বিয়েকে কখনও উৎসাহিত করেনি। কোরআনের যে আয়াত দিয়ে বহুবিবাহকে জায়েজ করা হয়েছে এবং এর দলিল পেশ করা হয়েছে, সেই আয়াতেই স্বয়ং আল্লাহতায়ালা দ্বিতীয় বিয়েকে অযথাই উৎসাহিত করেননি। কারণ একাধিক স্ত্রী থাকলে তাদের সবার মধ্যে সমতা বিধান করা স্বামীর কর্তব্য। কারও ক্ষেত্রে কম-বেশি হলে শেষ বিচারের দিন স্বামীকে জবাবদিহি করতে হবে এবং শাস্তিও পেতে হবে। সেখানে একসঙ্গে ৭ বউ নিয়ে বসবাস কীভাবে ধর্ম ও আইন সঙ্গত হয়?

ধর্মে বলা হয়েছে– বহুবিবাহ মুসলমানদের জন্য 'অত্যাবশ্যক' (ফরজ) বা পছন্দনীয় (মুস্তাহাব) কিছু নয়। বিশেষ কিছু অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সুযোগ মাত্র। একের অধিক বিয়ে শর্তযুক্ত। শর্তপূরণের সাপেক্ষেই এটি হালাল হয়। বিবাহিত স্ত্রীদের মধ্যে শারীরিক ও মানসিক দুইভাবেই সমতা বিধান না করতে পারলে একটি বিয়েতে সন্তুষ্ট থাকতে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

অনেক দেশই বহু বিয়েকে নিষিদ্ধ করেছে। প্রথম মুসলিম দেশ তুরস্ক ১৯২৬ সালে পুরুষের বহুবিবাহকে নিষিদ্ধ করে। ধর্ম নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এরপর ১৯৫৬ সালে তিউনিশিয়া বহুবিয়েকে নিষিদ্ধ করে। তুরস্কের মত তিউনিসিয়া ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে নয়, বরং দুইটি ধর্মীয় কারণে নিষিদ্ধ করেছে। মিশর, জর্ডান এবং মরক্কোতেও বহুবিবাহের চর্চাকে বাধা দেওয়া হয়েছে। মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এই বহুবিবাহের চর্চায় ভিন্নতা আছে। কিছু মুসলিম দেশে এটা খুব সাধারণ চর্চা, আবার কিছু দেশ যেমন– আজারবাইজান, তিউনিশিয়া এবং তুরস্কে বিবাহের ক্ষেত্রে ইসলামিক আইনকে গ্রহণ করা হয়নি। ফলে সেখানে বহুবিবাহ বৈধ নয়। (উইকিপিডিয়া)

গত বছরের জানুয়ারি মাসে পারিবারিক জীবনের বৃহত্তর সুরক্ষায় বহুবিবাহ আইনের ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়ন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেন হাইকোর্ট। স্ত্রীদের মধ্যে সম-অধিকার নিশ্চিত ছাড়া বিয়ে বলবৎ থাকা অবস্থায় আরেকটি বিয়ের অনুমতি দেওয়ার প্রক্রিয়া কেন আইনগতভাবে কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা-ও জানতে চাওয়া হয়। ২০২১ সালে আইনজীবী ইশরাত হাসান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর বহুবিবাহ সংক্রান্ত ৬ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটটি করেছিলেন। রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল দিয়েছেন। চূড়ান্ত শুনানির অপেক্ষায় আছে বিষয়টি। (প্রথম আলো)।

ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তানে বহুবিবাহের কারণে স্ত্রী বা নারীদের বিভিন্ন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই দেশবিদেশে বহুবিবাহ বন্ধের বিষয়টি বিভিন্ন সময় আলোচনায় এসেছে। ২০২১ সালের ১৯ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসলিমা ইয়াসমীন প্রথম আলোয় 'বহুবিবাহের বিধানগুলো নতুন করে পর্যালোচনা দরকার' শিরোনামের মতামতে উল্লেখ করেছেন— ২০১৯ সালে মিসরের শীর্ষ ইসলামিক প্রতিষ্ঠান আল-আজহারের প্রধান ইমাম ফতোয়া দেন যে বহুবিবাহ নারীর প্রতি ন্যায়বিচার করে না। যারা বহুবিবাহকে সমর্থন করেন, তারা ইসলামের ভুল অনুশীলন করছেন।

বাংলাদেশে যেহেতু বহুবিবাহ রোধকল্পে কোনো শক্তিশালী ব্যবস্থা নেই, নেই কোনো মনিটরিং ব্যবস্থা, তাই সারাদেশে রবিজুলের মতো স্বার্থান্বেষী পুরুষরা ইসলামের কথা বলে বহু বিয়ের সুযোগ গ্রহণ করছেন। ২০১২ সালের হিউম্যান রাইটস ওয়াচের একটি প্রতিবেদন বলছে, স্বামী একাধিক বিয়ে করেছেন, এমন ৪০ জন বাংলাদেশি মুসলিম নারীর কেউই তাদের স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের ব্যাপারে জানতেন না। কোনো ধরনের সালিসি কাউন্সিলের অভিজ্ঞতাও তাদের ছিল না। 

বাল্যবিয়ে এবং বহুবিবাহ বিষয় দুটি পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত। কন্যাকে দায় মনে করা অভিভাবকরা যেমন কম বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দেন, তেমনি তারাই দোজবরের কাছেও মেয়েকে বিয়ে দিতে আপত্তি করেন না। অধিকাংশ অভিভাবক খোঁজখবরই করেন না যে পাত্র কি আগে বিয়ে করেছে? দ্বিতীয় বিয়ে করার ক্ষেত্রে স্ত্রীর মতামত নিয়েছে কিনা? 

অন্যদিকে, শহরে কাজ করতে আসা মেয়েরা যেসব ছেলেদের পছন্দ করে বিয়ে করে, তাদের মধ্যে প্রায় সবাই প্রতারিত হয়। বিয়ের পর দেখা যায়, ছেলেটির গ্রামে ১/২ জন বউ রয়েছে। তাই সময় এসেছে আমাদের বর্তমান আইনে বহুবিবাহের বিধানগুলো নতুন করে পর্যালোচনা করার ও আরও কঠোর করার। ন্যায়বিচারের স্বার্থেই বহুবিবাহ-সংক্রান্ত প্রচলিত পারিবারিক আইনের সনাতনী ব্যাখ্যায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। 

'ধর্মে আছে' এই মিথ্যা অজুহাত দিয়ে যেন রবিজুলের মতো পুরুষরা একাধিক বিয়ে করতে না পারেন। 


  • লেখক: যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও কলামিস্ট

বিশেষ দ্রষ্টব্য: নিবন্ধের বিশ্লেষণটি লেখকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও পর্যবেক্ষণের প্রতিফল। অবধারিতভাবে তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের অবস্থান বা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয় 

Related Topics

টপ নিউজ

বহুবিবাহ / সামাজিক প্রথা / সমাজ সংস্কার / মতামত

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • নতুন ডিজাইনে ১ জুন আসছে ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট; ডিজাইনে থাকছে না কোনো ব্যক্তির মুখ
  • ‘আনু ভাইকে শ্রদ্ধা করি, কিন্তু তার প্রতিক্রিয়ায় আমি বিস্মিত’: আনু মুহাম্মদের স্ট্যাটাসে আসিফ নজরুলের বিস্ময় প্রকাশ
  • বিশ্বের সবচেয়ে শিক্ষিত দেশ যেগুলো
  • যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা আবেদন স্থগিত কেন? কারা ভোগান্তিতে পড়বেন? 
  • আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ কর্মী নেবে জাপান
  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল ও তুলা কিনতে পারে বাংলাদেশ: ড. ইউনূস

Related News

  • কাশ্মীর সংকটে উত্তেজনা নয়, দুই দেশের যৌথ সমাধানই একমাত্র পথ
  • কয়েকটি প্রস্তাবের ভিন্নমত জানিয়ে ঐকমত্য কমিশনে মতামত পাঠাল ইসি
  • ধর্ষণকে ধর্ষণই বলতে হবে, এর অন্য কোনো নাম নেই
  • আরেফিন স্যার, অভিবাদন গ্রহণ করুন, আপনার স্থান আমাদের হৃদয়ে
  • সংস্কারের সুপারিশগুলোতে মাত্র ৭টি রাজনৈতিক দল মতামত দিয়েছে: ঐকমত্য কমিশন

Most Read

1
অর্থনীতি

নতুন ডিজাইনে ১ জুন আসছে ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট; ডিজাইনে থাকছে না কোনো ব্যক্তির মুখ

2
বাংলাদেশ

‘আনু ভাইকে শ্রদ্ধা করি, কিন্তু তার প্রতিক্রিয়ায় আমি বিস্মিত’: আনু মুহাম্মদের স্ট্যাটাসে আসিফ নজরুলের বিস্ময় প্রকাশ

3
আন্তর্জাতিক

বিশ্বের সবচেয়ে শিক্ষিত দেশ যেগুলো

4
আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা আবেদন স্থগিত কেন? কারা ভোগান্তিতে পড়বেন? 

5
বাংলাদেশ

আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ কর্মী নেবে জাপান

6
বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল ও তুলা কিনতে পারে বাংলাদেশ: ড. ইউনূস

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net