ঋণ পরিশোধে আরও এক বছর সময় পেল শ্রীলঙ্কা

চরম সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কাকে ঋণ পরিশোধে আরও এক বছর সময় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, "যেহেতু শ্রীলঙ্কা সংকটে রয়েছে, তাদের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নেই। তাই ঋণ পরিশোধে আরও এক টেনিয়র (বছর) সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।"
সুতরাং বাংলাদেশ থেকে নেওয়া ২০ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধে আরও এক বছর সময় পেল দেশটি।
অর্থনৈতিক সঙ্কটে কাটিয়ে উঠতে শ্রীলঙ্কাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়া হয়েছিল।
গত ১৮ আগস্ট বাংলাদেশ প্রথম কিস্তিতে শ্রীলঙ্কাকে ৫০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে এবং দ্বিতীয় কিস্তিতে আরও ১০০ মিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছে গত ৩০ আগস্ট। পরে আবার ৪০ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়।
প্রথম কিস্তি পরিশোধ করার জন্য শ্রীলঙ্কাকে তিন মাস সময় দেওয়া হয় এবং এসময় সুদের হার ছিল লাইবর+২ শতাংশ। লাইবর বা লন্ডন ইন্টারব্যাংক অফার্ড রেট হচ্ছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বল্পমেয়াদে ঋণ দেওয়ার জন্য প্রচলিত সুদের হার।
প্রথম তিন মাসে ঋণ শোধ করতে না পারায় শ্রীলঙ্কাকে আরও তিন মাস সময় দেওয়া হয়েছে। তবে দ্বিতীয়বারের তিন মাসেও সুদের হার সমান রাখা হয়েছে। তবে নতুন করে ছয় মাসের সময় দেওয়া হয়েছে। যার সুদহার হবে লাইবর+২.৫ শতাংশ।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেন, শ্রীলঙ্কার ৫০ মিলিয়ন পরিশোধের সময় আগামী ১৮ মে। ১০০ মিলিয়ন পরিশোধের সময় ৩১ মে ও বাকি ৫০ মিলিয়ন পরিশোধের সময় ১২ জুন। তবে দেশটির সংকটকালীন সময় বিবেচনায় নিয়ে নতুন করে আরও এক বছর সময় বাড়ানো হয়েছে।
ইস্টার্ণ ব্যাংকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা, মওকুফের আবেদন নাকচ
এছাড়া বোর্ড মিটিংয়ে আইনি সীমার অতিরিক্ত ঋণ দেওয়ায় পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার কবলে পরে বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংক (ইবিএল)। এটি মওকুফের আবেদন করলে তা নাকচ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বোর্ড মিটিংয়ে থাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্টান্ডার্ডকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, "ব্যাংক একটি স্পর্শকাতর জায়গা। এখানে ভুল করার কোনো সুযোগ নেই। তাই কেউ যদি ভুল করে তাহলে তাকে শাস্তি পেতেই হবে। যেন পরবর্তীতে এ ধরনের ভুল কেউ না করে। এ কারণে ইস্টার্ন ব্যাংককের জরিমানার আবেদন নাকচ করা হয়েছে।"
এর আগে সীমার অতিরিক্ত ঋণ দেওয়ায় ইস্টার্ণ ব্যাংকে গত ৩ এপ্রিল পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। জরিমানার ওই অর্থ ১৪ দিনের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়। তা না হলে ব্যাংকটির হিসাব থেকে কেটে নেওয়া হবে বলে জানিয়ে তাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চিঠি দেওয়া হয়।
তারা জরিমানার অর্থ পরিশোধ না করে তা মওকুফের আবেদন করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বোর্ড সভায় তা বাতিল করা হয়।
জানা গেছে, ইবিএল তার সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইবিএল ফাইন্যান্স (এইচকে) লিমিটেড ও ইবিএল সিকিউরিটিজকে সীমা অতিক্রম করে ঋণ দিয়েছে। একক গ্রাহকের ঋণসীমা অতিক্রম করে ঋণ দেওয়া হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছিল, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ২৬(খ) ধারা লঙ্ঘন ও এই ঋণ অনুমোদনে একক কোনো ব্যক্তি, কোম্পানি বা গোষ্ঠীকে প্রদত্ত ঋণের পরিমাণ ব্যাংকের মূলধন রিজার্ভের ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না।
বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ৫০০ কোটি টাকায় উন্নীত করতে সময় বাড়ানোর অনুরোধেও সম্মত হয়।