গুমের শিকার ৩৩০ জনের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ: গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন প্রধান

গুমের শিকার হয়ে ফিরে না আসা ৩৩০ জন ব্যক্তির বর্তমান অবস্থা বা ভাগ্য সম্পর্কে অনুসন্ধান চলমান আছে বলে জানিয়েছেন গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত বিচারক মইনুল ইসলাম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকালে গুলশান এভিনিউতে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, "গুমের শিকার হয়ে ফিরে না আসা ৩৩০ জন ব্যক্তির বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ।"
তিনি আরও বলেন, "কমিশনে এখন পর্যন্ত ১,৭৫২টি অভিযোগ জমা পড়েছে। যার মধ্যে ১,০০০টি অভিযোগের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। ২৮০ জন অভিযোগকারীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়াও, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার ৪৫ জন কর্মকর্তার বক্তব্যও রেকর্ড করেছে গুম-সংক্রান্ত কমিশন অফ ইনকোয়ারি।"
মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, "আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেসব সদস্য গুমের সাথে জড়িত, তা তাদের ব্যক্তিগত ফৌজদারি অপরাধ। ব্যক্তির অপরাধের জন্য কমিউনিটিকে দোষারোপ করার সুযোগ নেই।"
কমিশনের সভাপতি আরও জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন কারাগারে গত দুই-আড়াই বছরে আটক ১,০৬৭ জন বাংলাদেশির নাম ঠিকানাসহ একটি তালিকা পাওয়া গেছে। আরও তথ্য পাওয়া গেলে কমিশনে পাঠানো হবে মর্মে লিখিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাপ্ত তালিকায় গুমের শিকার কোনো ব্যক্তির নাম আছে কিনা তার অনুসন্ধান চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।
কমিশন প্রধান বলেন, "বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলার পুলিশ সুপার ও বিজিবির সেক্টর কমান্ডারদের কাছ থেকে ৫ আগস্টের পর ভারত থেকে বাংলাদেশে পুশইন করা ব্যক্তিদের তথ্য চাওয়া হলে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে ১৪০ জনের তথ্য পাওয়া গেছে। এই তথ্যের প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে গুমের শিকার কোনো ব্যক্তির নাম এখনও পাওয়া যায়নি।"
তিনি আরও বলেন, "পুলিশ এবং বিজিবির পক্ষ থেকে পূর্ণাঙ্গ তথ্যপ্রাপ্তি সাপেক্ষে অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। তবে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর ঢাকার ধামরাইয়ের মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ্ নামক গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর বর্ডার দিয়ে পুশইন করা হয়েছে মর্মে আমরা অবগত আছি। এ বিষয়ে কমিশনের অনুসন্ধান চলমান আছে।"
"এছাড়াও ভারতের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি থাকা বাংলাদেশি নাগরিকের তালিকা চাওয়া হয়েছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতের বিভিন্ন কারাগারে গত দুই-আড়াই বছরে আটক ১,০৬৭ জন বাংলাদেশির নাম ঠিকানাসহ একটি তালিকা পাওয়া গেছে। আরও তথ্য পাওয়া গেলে কমিশনে পাঠানো হবে মর্মে লিখিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাপ্ত তালিকায় গুমের শিকার কোনো ব্যক্তির নাম আছে কিনা তার অনুসন্ধানও চলমান রয়েছে।"
এ সময় গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারক মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকার কর্মী নুর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কমিশনের সদস্য মিজ নাবিলা ইদ্রিস, মানবাধিকার কর্মী ও কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।