র্যাবের সেলে গুম হওয়াদের ভাগ্য নির্ধারণ হতো দুইভাবে, ট্রাইব্যুনালে নির্যাতনের রোমহর্ষক বর্ণনা
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে র্যাবের টিএফআই সেলে বিরোধী মতাদর্শের মানুষদের গুম ও নির্যাতনের রোমহর্ষক বিবরণ উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। সেখানে গুম হওয়াদের ভাগ্য দুইভাবে নির্ধারিত হতো বলে আদালতকে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর।
শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর প্রসিকিউশনের শুনানি শেষ হয়েছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আদালত স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের শুনানির জন্য আগামী ১৪ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন।
এদিন সকাল ১১টার পর বিচারকাজ শুরু হলে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শুনানিতে তিনি র্যাবের টিএফআই সেলে গুমের বীভৎস বর্ণনা তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, গুম হওয়া ব্যক্তিদের ভাগ্য মূলত দুটি উপায়ে নির্ধারিত হতো।
তাজুল ইসলাম বলেন, 'ভাগ্য একটু ভালো হলে গুমের শিকার ব্যক্তিদের দীর্ঘদিন আটকে রাখার পর গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হতো। তাছাড়া, সাত-আট বছর গুম রাখার পর অজানা কোনো স্থানে ফেলে রাখা হতো।'
চিফ প্রসিকিউটর শুনানিকালে গুম ও নির্যাতনের ভয়াবহ চিত্র ফুটিয়ে তুলে মন্তব্য করেন, 'গুমের সেই অন্ধকার পেরিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এক নতুন বাংলাদেশ উদিত হয়েছে।'
এর আগে, সকাল ১০টার পর ঢাকার সেনানিবাসের অস্থায়ী কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তায় গ্রেপ্তার ১০ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। 'বাংলাদেশ জেল-প্রিজন ভ্যান' লেখা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সবুজ রঙের গাড়িতে করে তাদের আদালতে আনে পুলিশ। প্রসিকিউশনের শুনানি শেষে পরবর্তী শুনানির জন্য ১৪ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করে তাদের আবারও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
