দাবি পূরণ না হওয়ায় একাডেমিক শাটডাউন ঘোষণা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের

অবিলম্বে দশম গ্রেডে শূন্য পদে নিয়োগসহ চার দফা দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন মেডিকেল অ্যাসিস্টেন্ট ট্রেইনিং স্কুল (ম্যাটস)- এর শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার (৩ মার্চ) সকাল থেকে সারাদেশের সব ম্যাটস প্রতিষ্ঠানে 'একাডেমিক শাটডাউন' কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
এর আগে, গতকাল রোববার (২ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ম্যাটস্ শিক্ষার্থী মো. হাসিবুল ইসলাম শান্ত (হাসিব) এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। 'সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদ'র ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
হাসিবুল ইসলাম শান্ত বলেন, "স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতমাসে নিয়োগ প্রকাশসহ চার দফা দাবি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুত দেয়। সেই প্রতিশ্রুতি যথাসময়ে বাস্তবায়ন না হওয়ায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো।"
"সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। জেলায় জেলায় লিফলেট বিতরণ ও বিক্ষোভ করা হবে," বলেন তিনি।
ম্যাটসের শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো—অনতিবিলম্বে শূন্য পদে নিয়োগ এবং কমিউনিটি ক্লিনিকসহ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে নতুন পদ সৃজন করা; প্রতিষ্ঠান ও কোর্সের নাম পরিবর্তন করে অসংগতিপূর্ণ কারিকুলাম সংশোধন করে ইন্টার্নশিপে লগবুক প্রণয়ন করা; বিএমডিসি স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চশিক্ষার অধিকার প্রদান করা; প্রস্তাবিত অ্যালাইড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড খসড়া আইনের নাম পরিবর্তন করে 'মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ' নামকরণসহ প্রস্তাবিত ধারায় সংশোধনীসহ বাস্তবায়ন করা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বর্তমানে সারাদেশে ১৬টি সরকারি ম্যাটস ও প্রায় ২০০টি বেসরকারি ম্যাটস বিষয়ক প্রতিষ্ঠান এই কারিকুলাম পরিচালনা করে আসছে। কর্মক্ষেত্রে ডিএমএফ ডিগ্রিধারীগণ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় 'উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার' পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
তারা জানান, সর্বশেষ তথ্যমতে বাংলাদেশে বর্তমানে ডিপ্লোমা মেডিকেল শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার এবং বিএমডিসি নিবন্ধিত ডিএমএফ'র সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী প্রায় ৫ হাজার ৫০০ ডিপ্লোমা চিকিৎসক (ডিএমএফ) 'উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার' পদে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রসহ জেলা সদর হাসপাতালে কর্মরত আছেন।
বক্তারা আরও বলেন, শূন্য পদ থাকার পরেও গত একযুগের বেশি সময় ধরে নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। তারমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রায় ২ হাজার পদ এবং পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে প্রায় ১ হাজার শূন্য পদের ছাড়পত্র প্রদান করলেও নিয়োগ নিয়ে তালবাহানা করা হচ্ছে।
তারা আরও জানান, ডিএমএফ ডিগ্রিধারী ডিপ্লোমা চিকিৎসকের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে হাইকোর্টে মামলা চলমান রয়েছে। কোর্টের চলমান মামলার রায়কে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের কর্মবিরতি, সভা-সমাবেশ একদিকে যেমন দেশের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বিরোধী এবং আদালত অবমাননার সমান— অন্যদিকে দেশের সাধারণ মানুষের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে এ সকল কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা।