বাসে ডাকাতি, নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি: দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বড়াইগ্রাম থানার ওসি প্রত্যাহার

নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলামকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও এক নারী যাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় থানায় অভিযোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া, ঘটনাটি যথাসময়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের না জানানো এবং ভুক্তভোগীদের সেবা না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বড়াইগ্রাম থানা পরিদর্শনে এসে ওসি সিরাজুল ইসলামকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান, পিপিএম (বার)।
ডিআইজি বলেন, 'বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানীর ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করেন। এছাড়াও বিষয়টি সঠিক সময়ে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের না জানানো এবং পুলিশের কাছে সেবা না পাওয়া দায়িত্ব অবহেলা।'
তিনি বলেন, 'একারণে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলামের কাছে বিষয়টির কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে এবং সাময়িকভাবে তাকে নাটোর পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'বিষয়টি তদন্ত করা হবে। তদন্তে অভিযুক্ত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এর আগে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনার তিন দিন পর মির্জাপুর থানায় মামলা করা হয়। বাসের যাত্রী নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ওমর আলী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে মামলাটি দায়ের করেন।
মির্জাপুর থানার ওসি মোশারফ হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, "আমরা এজাহার পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মামলাটি লিপিবদ্ধ করেছি। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৮ থেকে ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।"
তিনি বলেন, "বাসের যাত্রীকে গাড়িতে করে নাটোরের বড়াইগ্রাম থেকে নিয়ে এসে মামলা দায়ের করা হয়েছে।"
গত সোমবার রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসা ইউনিক রোড রয়েলসের আমরি ট্রাভেলস-এর একটি বাসে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
যাত্রীদের ভাষ্যমতে, সোমবার রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাসটি ছাড়ে। রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে বাসে ডাকাতি শুরু হয়। তিন ঘণ্টা ধরে ডাকাতি শেষে ঘুরিয়ে একই জায়গায় বাসটি নিয়ে গিয়ে রাত ৩টা ৫২ মিনিটে ডাকাতেরা নেমে যায়। এরপর বাসের চালক, তার সহকারী ও সুপারভাইজার নানা টালবাহানা করতে থাকে। তারা বলেন, তাদের গাড়িতে তেল নেই।
অবশেষে যাত্রীদের চাপের মুখে পড়ে তারা রাজশাহীর উদ্দেশে বাস ছাড়েন। যাত্রীরা প্রথমে বাসটি নিয়ে মামলা করার জন্য টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় যান। সেখানে তখন ওসি ছিলেন না বলে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার পরে বাসটি বড়াইগ্রামে থানায় ঢোকানো হয়।
এদিকে বাস সুপারভাইজার, চালক এবং চালকের সহকারীকে প্রাথমিকভাবে আটক করা হলেও, তাদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকায় তারা জামিনে মুক্তি পান।