পরিচালকের পদত্যাগের প্রজ্ঞাপন পাওয়ার পর কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেবেন নিউরোসায়েন্সেসের চিকিৎসকেরা

কর্মবিরতি প্রত্যাহার করবেন কি না সে বিষয়ে আজ রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিদ্ধান্ত নেবেন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। পরিচালকের পদত্যাগের প্রজ্ঞাপন পাওয়ার পরই তারা সিদ্ধান্ত জানাবেন।
শনিবার বিকেল নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের একাধিক ডাক্তার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের হামলার ঘটনায় পরিচালক ও যুগ্ম পরিচালকের পদত্যাগের দাবিতে বুধবার থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন চিকিৎসকেরা। বুধবার থেকে হাসপাতালের রুটিন কার্যক্রম বন্ধ আছে। তবে ইমার্জেন্সি সার্ভিস চালু আছে, ইমার্জেন্সি অপারেশনও হচ্ছে।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার পরিচালক অধ্যাপক ড. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ পদত্যাগপত্র স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছেন। তবে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে এখন পর্যন্ত নতুন কোনো পরিচালক নিয়োগ দেয়নি সরকার।
ইন্সটিটিউটের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. মাহফুজুর রহমান টিবিএসকে বলেন, 'চিকিৎসকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে পরিচালক ও যুগ্ম পরিচালকের পদত্যাগের দাবিতে আমরা কর্মবিরতি পালন করছি। ইমার্জেন্সি সার্ভিস, অপারেশন সব হচ্ছে। শুধু রুটিন অপারেশন হচ্ছে না। আমরা প্রজ্ঞাপন পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। সরকার যাকেই নতুন পরিচালক নিয়োগ দেবে, তাকেই আমরা মেনে নেব। আমাদের কোনো চাওয়া নাই।'
অধ্যাপক কাজী দ্বীন মোহাম্মদ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের উসকানি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করে মাহফুজুর রহমান বলেন, 'আমরা জেনেছি আমামীকাল চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা কোনো কাজ করবেন না, যাতে রোগীরা সেবা না পায়। তবে রোগীরা যাতে সেবা পায়, সে বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।'
দ্বীন মোহাম্মদ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। এ পর্যন্ত ৫ বার তার চুক্তিভিত্তিক মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার।
প্রতিষ্ঠানটির অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ আহমেদ টিবিএসকে বলেন, 'রোববার সকাল ৯টার পর আমাদের কর্মসূচি আছে। সেখানে জানানো হবে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হবে কি না। ড. দ্বীন মোহাম্মদ ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন করতে চেয়েছিলেন।'
দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো হাসপাতাল হিসেবে সুনাম আছে নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালের। এর পেছনে হাসপাতালের পরিচালক দ্বীন মোহাম্মদ ও যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক মো. বদরুল আলমের অবদান আছে বলে মনে করেন অনেকে।
দ্বীন মোহাম্মদ পরিচালক না থাকলেও কোনো সমস্যা হবে কি না, জানতে চাইলে চিকিৎসকেরা বলেন, সিস্টেম যেহেতু দাঁড়িয়ে গেছে, তাই সমস্যা হওয়ার কথা না।
আন্দোলনরত একজন চিকিৎসক বলেন, বিকল্প নেই, পদ আগলে রাখা—এসবই তো ফ্যাসিস্টের লক্ষণ।'
উল্লেখ্য, চার মাসে আগে নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল থেকে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নেতা অধ্যাপক ডা. গুরুদাস মন্ডলকে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি করা হয়। সম্প্রতি তাকে আবার নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হলে এ নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।
গুরুদাস মন্ডলের নিয়োগ বাতিলের দাবিতে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সকালে হাসপাতালের ৪০২ নম্বর কক্ষে কর্মসূচিতে মিলিত হন চিকিৎসকরা। সেখানে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আউটসোর্সিংয়ের লোকজন তাদের অবরুদ্ধ করে হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। হামলায় দুজন চিকিৎসকসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।