বিপ্লবের পর পরাজিত শক্তিকে কেউ রাখে না, আমরা অতটা অমানবিক হতে পারিনি: স্বরাষ্ট্র সচিব

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেছেন, 'যেসব দেশে বিপ্লব হয়েছে— সেখানে পরাজিত শক্তিকে কেউ রাখে না। আমরা অতটা অমানবিক হতে পারিনি। কেউ কেউ পালিয়ে গেছে, কেউ কেউ দেশে আছে। কিন্তু, হঠাৎ করে অনেকেই অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।'
যারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বা করবে— তাদেরকে অপারেশন 'ডেভিল হান্ট' এর আওতায় গ্রেফতার করা হবে বলে জানান তিনি।
আজ রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র সচিব এসব কথা বলেন।
নাসিমুল গনি বলেন, পুলিশের কেউ ভয়ে এবং চাপে পড়ে অন্যায় করেছে। কিছু অতি-উৎসাহী ছিল— তারা পালিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন হচ্ছে। আমরা চাই, পুলিশ কোমর সোজা করে দাঁড়াক।
তিনি বলেন, গত ছয় মাস আগে দেশের যে পরিবর্তন এসেছে, তাতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বাস্তবতার প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ওই সময় পুলিশের অনেক ক্ষতি হয়েছে। মনোবল ভেঙে গেছে, নৈতিক ও কাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যে কারণে সাধারণ প্রশাসনকে সহায়তার জন্য সেনাবাহিনী এখনো মাঠে মোতায়েন রয়েছে। এরকম একটি প্রেক্ষাপটে আগামীতে বেশ কিছু প্রোগ্রাম পরিচালনা করা হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলেন, আমাদের সিস্টেমের মধ্যে যেন একটা ভালো প্র্যাকটিস রেখে যেতে পারি। আর যেন দেশে আয়নাঘর তৈরি না হয়। এরকম পরিস্থিতি যাতে আর তৈরি না হয়। আমাদের সিস্টেমে যারা কাজ করবেন, তারা যেন সঠিকভাবে কাজ করতে পারেন।
তিনি বলেন, 'ডেভিল হান্ট গতকাল শুরু হয়েছে। এর উদ্দেশ্য ও কাজ হচ্ছে— যেসব পকেট থেকে দেশকে আনস্টেবল করা হচ্ছে— সেগুলোকে নিউট্রালাইজ করা। আইনানুগভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সবকল বাহিনীকে প্রস্তুত করা হয়েছে, ব্রিফ করা হয়েছে এবং কাজ চলমান রয়েছে।'
মানবাধিকার ও পরিবেশ রক্ষায় কিভাবে আইন প্রয়োগ করা যায় সেজন্য একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। এই কর্মসূল্লায় ১৫০ জন বিশেষজ্ঞ থাকবেন। পুলিশ, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, অ্যাটর্নি জেনারেল, আইজিপি, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, শিল্প উপদেষ্টা ও পরিবেশ উপদেষ্টা উপস্থিত থাকবেন। আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, এই কর্মশালা থেকেই ঠিক করা হবে কিভাবে মানবাধিকার ও পরিবেশ রক্ষায় আইন প্রক্রিয়া হবে।
তিনি বলেন মানবাধিকার ও পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে যে অভিযান পরিচালনা করা হবে— সেটি প্রথমে ঢাকা মেট্রোপলিটন ও গাজীপুর এলাকায় করা হবে।
এসময় এক প্রশ্নের জবাবে নাসিমুল গনি বলেন, দেখা যাচ্ছে হঠাৎ করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হচ্ছে। মানুষের মন যাতে উদ্বেলিত না হয়, সেজন্য এই ডেভিল হান্ট পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি নেতৃত্ব দিচ্ছে পুলিশ। যতক্ষণ প্রয়োজন হয়— ততক্ষণ এই ডেভিল হান্ট চলবে।
গতকাল কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেফতার হয়েছেন, সামনে আর এ ধরনের কোন গ্রেফতার হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আশা করা যায়'।
এই ব্রিফিং এর আগে সারাদেশের পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র সচিব। ওই বৈঠকে পুলিশ সুপাররা নানান ধরনের সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন বলে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জানান নাসিমুল গনি।