চট্টগ্রামে এক্সপ্রেসওয়েতে টোল আদায় শুরু ১ জানুয়ারি থেকে

চট্টগ্রাম নগরীর প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলের জন্য আগামী ১ জানুয়ারি থেকে টোল দিতে হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বর্তমানে এক্সপ্রেসওয়েতে পরীক্ষামূলকভাবে যান চলাচল করছে।
শুরুতে উড়াল সড়কটির পতেঙ্গা প্রান্তে চারটি বুথের মাধ্যমে টোল আদায় করা হবে। র্যাম্প নির্মাণের পর আরো কয়েকটি পয়েন্ট যুক্ত করে মোট ১০টি বুথের মাধ্যমে টোল আদায়ের পরিকল্পনা রয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ)।
এর আগে সিডিএ আগামী বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) থেকে টোল আদায় কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানিয়েছিল।
প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'টোল আদায়ের সব প্রস্তুত সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১৯ ডিসেম্বর থেকে আদায় শুরু করতে চেয়েছিলাম। আজ (১৭ নভেম্বর) মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, নতুন বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে টোল আদায় শুরু করতে।'
তিনি বলেন, 'দুর্ঘটনার ঝুঁকির কারণে এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। ভবিষ্যতে অন্য র্যাম্পগুলো চালু হলে তখন মোটরসাইকেলের বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে।'
গত বছরের ১৪ নভেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেছিলেন। গত আগস্টে পরীক্ষামূলক যান চলাচল শুরু করা হয়। এতে সর্বোচ্চ গতিসীমা ৬০ কিলোমিটার। এক্সপ্রেসওয়ের র্যাম্পের (মূল উড়ালসড়ক থেকে ওঠানামার পথ) কাজ শেষ না হওয়ায় গাড়িগুলো নগরীর লালখান বাজার থেকে সরাসরি পতেঙ্গা পর্যন্ত যাতায়াত করছে। নগরীর লালখান বাজার থেকে গাড়ি ওঠার সুযোগ রাখা হয়েছে। আর এই প্রান্তে গাড়ি নামছে টাইগারপাসে। আর পতেঙ্গা প্রান্তে গাড়ি ওঠানামা করছে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় টোলের হার অনুমোদন দেয়। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন বোর্ড গঠন করা হলে আবারও টোল পুনঃবিবেচনার করে বোর্ড। আগের তুলনায় যানবাহন এবং ওঠা-নামা স্থানভেদে ২০ থেকে ৫০ টাকা কমিয়ে প্রস্তবনা পাঠানো হয় মন্ত্রণালয়ে। গত ২৭ নভেম্বর নতুন প্রস্তাবিত টোল হার মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেও দুই চাকার বাহন মোটরসাইকেল ও টেইলার চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
টোলের হার অনুযায়ী, সিএনজি অটোরিকশা (তিন চাকার বাহন) ২০-৩০ টাকা, প্রাইভেট কার ৫০-৮০ টাকা, জিপ ৭০-১০০ টাকা, মাইক্রোবাস ৯০-১০০ টাকা, পিকআপ ১৩০-১৫০ টাকা, মিনি বাস ১৮০-২০০ টাকা, বাস ২৫০-২৮০ টাকা, ট্রাক (চার চাকা) ১৮০-২০০ টাকা, ট্রাক (ছয় চাকা) ৩০০ টাকা, কাভার্ড ভ্যান ৪৫০ টাকা টোল আদায় করা হবে।
প্রকল্পের নথিপত্রের তথ্যমতে, ২০১৭ সালের ১১ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকল্পটির ব্যয় এক হাজার ৪৮ কোটি টাকা বাড়িয়ে চার হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা করা হয়।
তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের কাজ ২০২০ সালের জুনে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু কাজই শুরু করেছিল ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। পরে দফায় দফায় সময় বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।