ঘূর্ণিঝড় দানা : উত্তাল সাগর; পর্যটকদের নামতে বাধা

বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র প্রভাবে কক্সবাজারে উত্তাল রয়েছে সাগর, ঢেউয়ের উচ্চতা স্বাভাবিকের চাইতে কিছুটা বেড়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখানো হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় কক্সবাজারে ঘুরতে আসা পর্যটকদের গোসলে নামা বিপজ্জনক বলে জানিয়েছেন লাইফগার্ড সহ প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা।
তারা জানিয়েছেন, উত্তাল সাগরে পর্যটকদের গোসলে না নামতে নিষেধ করে লাইফগার্ড, বিচ কর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশ মাইকিং-এর মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানিয়েছেন, আজ বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ৬ টায় ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫৫ কিলোমিটার পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ ঘনীভূত রূপ নিয়ে শক্তিশালী হচ্ছে। আজ সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম এবং ভারতের উড়িষ্যা উপকূল দিয়ে অতিক্রম করতে পারে।
তিনি জানান, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর সমূহের ওপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার; যা ধমকা বা ঝড়ো হাওয়া আকারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সী সেইফ লাইফগার্ডের সুপারভাইজার ওসমান গণি বলেন, "সাগর উত্তাল থাকায় বড় বড় ঢেউ তীব্র বেগে সৈকত উপকূলে আঁচড়ে পড়ছে। এ পরিস্থিতি সাগরে গোসলে নামা নিরাপদ নয়। এ কারণে পর্যটকদের গোসলে না নামতে লাইফগার্ড কর্মীদের পাশাপাশি বিচ কর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা মাইকিং করে প্রচারণা চালাচ্ছেন।"
তারপরও পর্যটকদের অনেকে নির্দেশনা না মেনে গোসল করছেন বলে জানান তিনি।
আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানান, "ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। এর প্রভাবে কক্সবাজার উপকূলবর্তী সাগরে পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চাইতে অন্তত ১ থেকে ২ ফুটের কিছুটা বেশী।"
এজন্য কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর দূরবর্তী সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেই সাথে গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সকল নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে, যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় 'দানা'র প্রভাবে কক্সবাজারের ইনানী সৈকতে নির্মিত নৌবাহিনীর জেটি ভেঙে দ্বিখণ্ডিত হয়ে গেছে। আজ সকালে জেটি ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হোসেন।
এদিকে জেটি ভেঙে যাওয়ায় চলতি পর্যটন মৌসুমের শুরুতে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণেও দেখা দিয়েছে বিপত্তি।