গাজীপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে ৫০ কোটি টাকার ৬ একর বনভূমি উদ্ধার

গাজীপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে প্রায় ৫০ কোটি টাকা মূল্যের ছয় একর বনভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকালে কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা বিটের বোর্ড মিল এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আহম্মেদের নেতৃত্বে অভিযানে বন বিভাগের সহায়তায় সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা অংশ নেন।
কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, মুন্সীরটেক এলাকায় সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া উচ্ছেদ কার্যক্রমে ঢাকা বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক রেজাউল আলম ও শামসুল আরেফীন, কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল করিম, শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান এবং রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা জুয়েল রানা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযানে ছয় একর বনভূমি উদ্ধার করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। সেখানে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে দখল হয়ে থাকা বন বিভাগের জমি ফেরত আনতে দখলদারদের মৌখিক ও লিখিত নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। তবে তারা জমি ছাড়তে রাজি হচ্ছিল না।
শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের সহায়তায় বন বিভাগ সফলভাবে জমি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল করিম জানান, উদ্ধার হওয়া জমির আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। সম্প্রতি জমিটি অবৈধভাবে দখল করা হয়েছিল।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আহম্মেদ বলেন, বন বিভাগের সংরক্ষিত জমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে।
'এ জমিগুলোতে গাছ কাটা এবং অন্যান্য অবৈধ কার্যক্রম চালানো হচ্ছিল। যৌথ বাহিনীর সহায়তায় অবশেষে অভিযান চালিয়ে জমিগুলো উদ্ধার করা হয়েছে,' বলেন তিনি।
তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান চলবে। 'অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে এবং সংরক্ষিত বনাঞ্চল রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।'
স্থানীয়রা এ অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বনভূমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ ও গাছ কাটা হচ্ছিল, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ছিল।
তারা বন বিভাগের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে আশা প্রকাশ করে বলেন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলগুলো এভাবেই রক্ষা করা হবে।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, এ অভিযানের ফলে দখলমুক্ত হওয়া জমিগুলোতে বনায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে। এতে স্থানীয় বাস্তুতন্ত্রের উন্নতি ঘটবে এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাবে।
তারা আরও জানান, উচ্ছেদ কার্যক্রমের সময় কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে। দখলদাররা প্রথমে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে তারা পিছু হটে।