গাজীপুরে শেখ হাসিনা-ওবায়দুল কাদেরসহ ৪০০ জনের বিরুদ্ধে আরও ২ হত্যামামলা

গাজীপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যায় জড়িত ও প্ররোচনার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৪০০ জনের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। এর আগে কালিয়াকৈর থানায় আরও ছয়টি মামলা করা হয়েছিল।
নিহতরা হলেন- কালিয়াকৈর উপজেলার আন্দারমানিক গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন (২০) এবং ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার নাওগাও গ্রামের শহিদুল্লাহ গাজীর ছেলে হাফিজুল ইসলাম গাজী (২৫)।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত বছরের ৪ আগস্ট বিকেলে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর আনসার একাডেমির ৩ নম্বর গেটের সামনে ছাত্র ও জনতার একটি মিছিল হয়। ওই মিছিলে গুলিবর্ষণ ও লাঠিপেটার মাধ্যমে বেশ কয়েকজন নিহত ও শতাধীক ছাত্র জনতা আহত হয়। সেখানে হাফিজুল ইসলাম গাজী গুলিবিদ্ধ হয়।
পরে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর কুমুদিনি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বছরের ৫ আগস্ট মারা যান তিনি।
ওই ঘটনায় ১১ মাস পর ৩০ জুন রাতে নিহতের বড় ভাই আবদুল হামিদ গাজী বাদি হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষেদের সভাপতি তালহা ইবনে অলি, ছগির আহম্মেদসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪০০ জনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
অপরদিকে, একইদিনে উপজেলার সফিপুর আনসার একাডেমির সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয় আব্দুল্লাহ আল মামুন। তাকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কালেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন ৫ আগস্ট নিহতের পরিবার লাশের সন্ধান পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে তার মা পারভীন বেগন মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। যার কারণে দীর্ঘদিন ওই ঘটনায় কেউ অভিযোগ বা মামলা দায়ের করেননি।
ওই ঘটনায় নিহতের বন্ধু নয়ন মিয়া বাদি হয়ে গত ৩০ জুন রাতে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
এছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ অজ্ঞাত ৪০০ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে এই মামলার আসামি করা হয়েছে।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার চৌধুরী মো. যাবের সাদেক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, 'গাজীপুরের কালিয়াকৈর নিহত দুইজনের ঘটনায় পৃথক দুইটি মামলা হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'