Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Sunday
August 03, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SUNDAY, AUGUST 03, 2025
বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপরে ‘অত্যাচার’- যেসব ভুয়া পোস্ট বিবিসি খুঁজে পেয়েছে

বাংলাদেশ

টিবিএস ডেস্ক
11 August, 2024, 01:00 pm
Last modified: 11 August, 2024, 01:30 pm

Related News

  • মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করা গণঅভ্যুত্থান বিরোধী কাজ: আনু মুহাম্মদ
  • মার্কিন শুল্ক কমিয়ে সরকার বড় দায়িত্ব পালন করেছে: মির্জা ফখরুল
  • সিডনিতে সাড়ে ৬ কোটি টাকার লেনদেনের অভিযোগ, মাহফুজ ও তার ভাই বললেন 'গুজব'
  • সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির খবরে বেদনায় নীল হয়ে গিয়েছি: মির্জা ফখরুল
  • মৃতের সংখ্যা নিয়ে গুজব না ছড়ানোর আহবান, গণমাধ্যম তদন্ত করলে সহযোগিতা করা হবে: আইএসপিআর

বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপরে ‘অত্যাচার’- যেসব ভুয়া পোস্ট বিবিসি খুঁজে পেয়েছে

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের বাড়িতে হামলার খবর পাওয়া গেছে, যার বেশিরভাগই বিএনপি সংশ্লিষ্টসহ তাদের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। কিছু ঘটনা আবার ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে। 
টিবিএস ডেস্ক
11 August, 2024, 01:00 pm
Last modified: 11 August, 2024, 01:30 pm
রাজধানীর শাহবাগে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা নিরাপত্তা এবং তাদের বাড়িঘর ও মন্দির ভাঙচুর বন্ধের দাবিতে শনিবার শাহবাগে বিক্ষোভ করেন। ছবি: ফয়সাল আহমেদ

৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে সারাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যক্তি, বাড়িঘর, সম্পত্তি ও মন্দিরে হামলার খবর আসতে থাকে। তার মধ্যেই এমন বহু ভুয়া পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দাবি করা হয় যে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপরে ব্যাপক অত্যাচার শুরু হয়েছে। এনিয়ে ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান চালিয়েছে বিবিসি বাংলার তথ্য যাচাই বিভাগ 'বিবিসি ভেরিফাই'। 

বিবিসি ভেরিফাই-এর মতে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পোস্টের অনেকগুলো যাচাই করে দেখা গেছে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা যেমন ঘটেছে, তেমনি অনেক হামলার গুজবও ছড়ানো হয়েছে।

এর মধ্যে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের বাড়িতে হামলার খবর পাওয়া গেছে, যার বেশিরভাগই বিএনপি সংশ্লিষ্টসহ তাদের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা চালিয়েছে বলে জানা গেছে। কিছু ঘটনা আবার ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে। কোনো কোনো এলাকায় কয়েকটি হামলার পেছনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

শনিবার বাংলাদেশে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ এবং বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ নামে দুইটি সংগঠন দাবি করেছে, শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের ৫২টি জেলায় সংখ্যালঘু মানুষের ওপর ২০৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।

তবে এই সব কয়টি ক্ষেত্রে ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে হামলা হয়েছে, নাকি সরকার ঘনিষ্ঠদের ওপর ক্ষোভের অংশ হিসেবে হামলা হয়েছে, তা নিরপেক্ষভাবে যাচাই সম্ভব হয়নি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের গুজব

বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর 'ব্যাপক নির্যাতন' হচ্ছে বলে সামাজিক মাধ্যমে যে ভুয়া পোস্টগুলো ছড়িয়েছিল, সেগুলোর বেশিরভাগই ভারতীয় বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করা হয়েছিল বলে বিবিসি বাংলার ফ্যাক্ট-চেকাররা নিশ্চিত করেছেন।

তবে বাংলাদেশের ভেতর থেকেও এমন গুজব ছড়ানো হয়েছিল বলে তারা জানিয়েছেন।

তারা আরও উল্লেখ করেছেন যে, নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর কিছু আক্রমণ হয়েছে, বাড়িঘর পোড়ানো হয়েছে। কিন্তু তথ্য যাচাই করে দেখা গেছে, হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলমানদেরও বাড়িঘর ভাঙচুর ও পোড়ানো হয়েছে।

এক্ষেত্রে আক্রমণকারীদের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর ও সম্পত্তি। ধর্মীয় পরিচয় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গৌণ ছিল; আক্রমণকারীরা মূলত তাদের রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে হামলার শিকার হয়েছেন।

বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে চলে আসা বা আসার চেষ্টা করা আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরাও নিশ্চিত করেছেন যে হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা হয়েছে।

তবে ভারত থেকে সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনাগুলোকে রাজনৈতিক না রেখে সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে মনে করছেন একাধিক ফ্যাক্ট-চেকার।

মন্দির পাহারায় মইনুল

চট্টগ্রামের কাছাকাছি শ্রী শ্রী সীতা কালী মাতা মন্দিরে হামলা হয়েছে এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিবিসি বাংলার ফ্যাক্ট চেকার বিভাগ 'বিবিসি ভেরিফাই' এর অনুসন্ধানে দেখা যায়, আদতে সেখানে কোনো হামলা হয়নি। 

মন্দিরটি পাহারা দিচ্ছিলেন চট্টগ্রামের এক বিক্ষোভকারী মইনুল। তিনি ফ্যাক্ট চেকারদের হামলার খবরটি ভুয়া বলে নিশ্চিত করেন। তিনি মনে করেন, এসব পোস্ট বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। 

মইনুল বলেন, 'তাদের রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা সব সরকারি স্থাপনা, মন্দির, গির্জা—সব কিছুই রক্ষা করব'। 

মন্দির পাহারায় মইনুল (বাঁদিক থেকে তৃতীয়)। ছবি: বিবিসি বাংলা

বিক্ষোভকারীদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের পর শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর ফলে বিক্ষোভকারী ও বিরোধী দলীয় সদস্যদের ক্ষিপ্ত হওয়াটা আশ্চর্যজনক নয়।

অন্যদিকে, থানাগুলোতে আক্রমণের কারণে বাংলাদেশজুড়ে পুলিশ ছিল অনুপস্থিত। এ সময়ে সাবেক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও সহিংসতা শুরু হয়। তবে বাস্তবতায় দেখা গেছে, সাধারণ নাগরিকদের বাড়িতেও লুটপাট চলেছে এবং তারাও সহিংসতার শিকার হয়েছেন।

ভারত থেকে ছড়ানো ভুয়া খবর

শেখ হাসিনার পতনের উদ্ভূত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে, ভারতের অতি-দক্ষিণপন্থী 'ইনফ্লোয়েন্সর'রা সুযোগ নিয়ে বিভ্রান্তিকর ভিডিও শেয়ার করতে শুরু করেন, যেখানে বাংলাদেশের হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে বলে বলা হতে থাকে। 

এ ছাড়া, ছাত্র-বিক্ষোভকারীদের 'ইসলামি কট্টরপন্থী' বলে প্রচার করেও গুজব ছড়ানো হয়।

'ব্র্যান্ডওয়াচ' অ্যাপ, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নজর রাখে, জানিয়েছে যে ৪ আগস্টের পর থেকে ভুয়া কাহিনিগুলো একটি নির্দিষ্ট হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে ছড়ানো হয়েছে, যা সামাজিক মাধ্যম 'এক্স'-এ (সাবেক টুইটার) সাত লাখবার মেনশন করা হয়েছে।

এতে আরও জানা গেছে, ট্রেন্ডিং পোস্টগুলোর প্রায় সবই ভারতের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে করা হয়েছে।

বাংলাদেশভিত্তিক ফ্যাক্ট-চেকাররাও সাম্প্রতিক সামাজিক মাধ্যম বিশ্লেষণ করে একই ধরনের তথ্য পেয়েছেন। তাদের মতে, মূলত ভারতের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকেই হিন্দুদের ওপর আক্রমণের ভুয়া তথ্য ছড়ানো হয়েছে।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সিলেট জেলা শাখার একজন প্রবীণ নেতা নাম প্রকাশ না করা শর্তে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'আমার জানা মতে, সিলেটে এখন পর্যন্ত কোনো সাধারণ হিন্দু আক্রান্ত হয়নি। যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা সবাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী'। 

পটুয়াখালী সদর উপজেলার লৈকাঠি ইউনিয়নের সাবেক সদস্য লক্ষ্মণ দাস যার বাড়িতে হামলা হয়েছে, তিনি বলেন, "স্থানীয়ভাবে বিরোধ ছিল, তারা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, হামলার সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জড়িত।

বরিশালের একটি হিন্দু সম্প্রদায়ের সংগঠনের একজন প্রবীণ নেতা টিবিএসকে বলেন, 'সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রতিক হামলার বেশিরভাগই এলাকায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। খুব কম সাধারণ হিন্দু পরিবারকে টার্গেট করা হয়েছে'। 

ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) অনুমোদিত স্বাধীন তথ্য যাচাইয়ের উদ্যোগ 'ফ্যাক্ট ওয়াচ'-এর প্রধান অধ্যাপক সুমন রহমান বলছিলেন, কিছু ঘটনা ঘটেছে ঠিকই, যেখানে হিন্দুদের বাড়ি আক্রমণ করা হয়েছে। তবে প্রায় সব ক্ষেত্রেই ওই ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

'কিন্তু এমন একটি আখ্যান তৈরি করা হয়েছে, যাতে মনে হচ্ছে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলছে। এটি সম্পূর্ণ ভুল আখ্যান ছড়ানো হয়েছে। যেসব অ্যাকাউন্ট থেকে এই ভুয়া তথ্য ছড়ানো হয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই ভারতের," বলেন তিনি।

ঢাকার 'দৈনিক আজকের পত্রিকা'র ফ্যাক্ট-চেকার রিদওয়ানুল ইসলামও বলেছেন যে বেশিরভাগ ভুয়া তথ্য ভারতীয় অ্যাকাউন্ট থেকেই ছড়ানো হয়েছে।

তবে তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশের ভেতর থেকেও হিন্দুদের ওপর আক্রমণের ভুয়া তথ্য ছড়ানো হয়েছে বলে আমাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে।

হিন্দুদের বাড়ি ও মন্দির 'জ্বালানোর' ভুয়া খবর

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছিল, যেখানে দাবি করা হয়েছিল যে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ক্রিকেটার লিটন দাসের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেক অ্যাকাউন্ট থেকে সেই পোস্ট শেয়ার করে বলা হয় যে কট্টর ইসলামপন্থীরা তার বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে।

কিন্তু পরে জানা যায়, যে বাড়িটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ভুয়া তথ্য ছড়ানো হয়েছিল, সেটি আসলে বাংলাদেশের জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার বাড়ি।

আরেকটি ভাইরাল পোস্টে দাবি করা হয়েছিল যে বাংলাদেশের ইসলামি জনতা একটি মন্দিরে আক্রমণ করেছে। চট্টগ্রামের 'নবগ্রহ মন্দির' এর কাছে আগুন লাগানোর ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছিল, তবে ভিডিওতে দেখা যায়, মন্দিরে আগুন লাগেনি।

বিবিসি ভেরিফাইয়ের প্রাপ্ত ছবিতে দেখা গেছে, ওই মন্দিরের কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে মন্দিরের পিছনে থাকা আওয়ামী লীগের একটি কার্যালয়ই হামলার মূল লক্ষ্য ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মন্দিরের কর্মকর্তা স্বপন দাস বিবিসিকে জানিয়েছেন, ওই দলীয় কার্যালয় থেকে চেয়ার-টেবিল বের করে মন্দিরের পিছনের দিকে আগুন লাগানো হয়। এই ঘটনা ঘটে ৫ আগস্ট দুপুরে।

অগ্নিকাণ্ডের পরের কিছু ছবিতে দেখা যায় যে আওয়ামী লীগ নেতাদের ছবি সহ বেশ কিছু পোস্টারও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

স্বপন দাস আরও জানিয়েছেন যে এখন ২৪ ঘণ্টা মন্দিরে পাহারা দিচ্ছেন মানুষ।

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় যুবলীগ নেতার রেস্তোরাঁয় পুড়ে যাওয়া ভবনকে মন্দির হিসেবে দেখিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে ভুয়া খবর প্রকাশ করা হয়েছে। এসব গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাতক্ষীরা মন্দির সমিতির নেতারা।

সাতক্ষীরা জেলা মন্দির সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিত্যানন্দ আমিন টিবিএসকে বলেন, সাতক্ষীরায় কোথাও মন্দির পোড়ানো বা ভাঙচুরের কোনো খবর আমরা পাইনি। কলারোয়ার রাজপ্রসাদ নামে একটি রেস্তোরাঁ ভবনটিকে ভুল করে মন্দির হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দয়া করে এসব গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না।

লক্ষ্য আওয়ামী লীগ, হিন্দুরা নয়

আরও দুটি ভাইরাল পোস্টে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে দাবি করা হয়েছে যে হিন্দুদের ওপর আক্রমণ হয়েছে। তবে যাচাই করে দেখা গেছে, আক্রমণের শিকার হওয়া ব্যক্তিরা আসলে আওয়ামী লীগের নেতা এবং তারা মুসলমান।

এই ধরনের পোস্টগুলো মূলত ভারতীয় দক্ষিণপন্থি অ্যাকাউন্টগুলো থেকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে '#সেভবাংলাদেশীহিন্দু' হ্যাশট্যাগ দিয়ে সেগুলো হিন্দুত্ববাদীদের 'ভেরিফায়েড' অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা হয়।

সম্প্রতি আরও একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে যে 'ইসলামি জনতা' হিন্দুদের একটি গ্রাম আক্রমণ করেছে এবং একজন হিন্দু পুকুরে সাঁতার কেটে পালানোর চেষ্টা করছে। ভারতীয় ফ্যাক্ট-চেকাররা খুঁজে বের করেছেন যে ওই ব্যক্তি মুসলমান।

ইউল্যাবের 'ফ্যাক্ট-ওয়াচ'-এর প্রধান, অধ্যাপক সুমন রহমান বলেন, সম্প্রতি দুই নারীকে অপহরণের ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে একটি ঢাকার, অন্যটি নোয়াখালির। ঢাকার ঘটনাটি ছিল একটি ছাত্রী দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় ট্র্যাফিক ডিউটি করছিল। তার বাবা-মা তাকে জোর করে বাড়ি নিয়ে যান।

অধ্যাপক রহমান আরও বলেন, ওই ঘটনাটি ভুলভাবে উপস্থাপন করে বলা হয় যে ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়েছে। 

অন্যদিকে, নোয়াখালির ঘটনায়, যে নারীকে 'গণধর্ষণের জন্য অপহরণ' করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তিনি আসলে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছ থেকে আলাদা হয়ে বাবা-মায়ের কাছে থাকছিলেন। তার স্বামী কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে এসে তাকে জোর করে নিয়ে যায়। এটিকে 'হিন্দু নারীকে গণধর্ষণের জন্য অপহরণ' বলে প্রচার করা হয়েছে।

দৈনিক আজকের পত্রিকা'র ফ্যাক্ট-চেকার রিদওয়ানুল ইসলাম বলেন, শুধু সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয়নি, কয়েকটি টিভি চ্যানেল এবং পোর্টালও এই গুজবের ভিত্তিতে সংবাদ প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

তিনি যে টিভি চ্যানেল এবং পোর্টালের নাম উল্লেখ করেন, সেগুলো সবই পরিচিত হিন্দুত্ববাদী সংবাদমাধ্যম।

বিবিসি বাংলা আরও জানতে পেরেছে যে শুধু ভারত বা বাংলাদেশ নয়, যুক্তরাজ্যের পরিচিত অতি-দক্ষিণপন্থী ইনফ্লুয়েন্সার টমি রবিনসনও এ ধরনের গুজব ছড়িয়েছেন। তিনি যাচাই না করা বিভিন্ন ভিডিও ছড়িয়ে দাবি করেছেন যে বাংলাদেশে 'হিন্দুদের গণহত্যা চলছে'।

দুই সরকারের গৃহীত ব্যবস্থা

বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ব্যাপক আক্রমণের খবরের প্রেক্ষিতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছেন। এই কমিটি বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিক, হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। কমিটির প্রধান হিসেবে বিএসএফের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিচালক রভি গান্ধীকে নিয়োগ করা হয়েছে। অন্য সদস্যদের মধ্যে আছেন বিএসএফের দক্ষিণ বঙ্গ এবং ত্রিপুরা সীমান্ত অঞ্চলের দুই আইজি এবং ল্যান্ড পোর্ট অথরিটির দুই প্রতিনিধি।

অমিত শাহ তার এক্স-এ লিখেছেন, 'বাংলাদেশের হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু এবং সেদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ কমিটি গঠন করেছে ভারত সরকার। এই কমিটি বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বাংলাদেশে বসবাসরত ভারতীয় নাগরিক, হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।'

বিএসএফ মহা পরিচালক দলজিৎ সিং চৌধুরী (বাঁদিক থেকে তৃতীয়) ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পরিদর্শনে। ছবি:বিএসএফ

ওই কমিটির একজন সদস্য বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, 'যদি বাংলাদেশে কেউ সমস্যায় পড়েন, আমরা আমাদের কাউন্টারপার্ট বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যার সমাধান করব। যেমন, শুক্রবার কোচবিহারের শিতলখুচিতে একটি সমস্যা তৈরি হয়েছিল, যখন বাংলাদেশের দিকে বহু মানুষ ভারতে প্রবেশ করতে চেয়ে সীমান্তের অপর পাড়ে জড়ো হয়েছিলেন। আমরা দ্রুত বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করি।'

তবে বাংলাদেশ থেকে এধরনের পরিস্থিতি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কিছু ভিডিওতে সীমান্তের ওপারে কিছু মানুষকে জড়ো হতে দেখা গেছে, তবে তাদের মধ্যে নারী বা শিশু ছিলেন না, এবং তারা সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন কি না, তা নিশ্চিত করা যায়নি।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারও হিন্দুদের সহায়তার জন্য রবিবার থেকে একটি হটলাইন চালু করছে। এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর কোনো হামলা বা সহিংসতার ঘটনা ঘটলে হটলাইনে জানালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে।

খালিদ হোসেন বলেন, 'ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়ি-ঘর, উপাসনালয়ে হামলার খবর আসছে। সরকারকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা চলছে। এর সাথে গুজবও যুক্ত হয়েছে।'

তিনি আরও যোগ করেন যে, যে কোনো মূল্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখতে চায় সরকার।

'আমরা ফাঁদে পা দেব না'

চট্টগ্রামের 'শ্রী শ্রী সীতা কালী মাতা মন্দির'-এর বাইরে মুসলমান ও হিন্দু ছাত্ররা সম্প্রীতি ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করছিলেন।

মইনুল বলেন, এই সব গুজব ছড়ানোর উদ্দেশ্য হলো দেশে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি করা এবং হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করা। তবে আমরা এ ফাঁদে পা দেব না।

এলাকার আরেক বাসিন্দা ছোটন, যিনি নিয়মিত মন্দিরে যান, তার মুসলমান প্রতিবেশীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, 'তাদের ধন্যবাদ। যতক্ষণ না এই কঠিন সময়টা আমরা পার করতে পারছি, ততক্ষণ যেন তারা এভাবেই পাশে থাকেন। স্বাধীন বাংলাদেশে ভবিষ্যতেও যেন আমরা এভাবেই একসঙ্গে কাটাতে পারি'। 

Related Topics

টপ নিউজ

ভুয়া খবর / গুজব / হিন্দু সম্প্রদায় / গণঅভ্যুত্থান

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • শুল্ক ছাড়ের আড়ালের ‘গোপন’ শর্ত জনগণ জানতে পারল না: আলতাফ পারভেজ
  • মার্কিন শুল্ক আলোচনায় কীভাবে সফল হলো বাংলাদেশ
  • বাংলাদেশের উপর ট্রাম্পের শুল্ক কমানোর পর ভারতের টেক্সটাইল শেয়ার দর কমল ৭% পর্যন্ত
  • এফিডেভিট কী, কেন ও কীভাবে করবেন?
  • ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ৭ দিন পরে বাংলাদেশি পণ্যে সংশোধিত মার্কিন শুল্ক কার্যকর হবে
  • প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ স্বাভাবিক অবস্থানে আছে: মার্কিন শুল্ক প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি

Related News

  • মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করা গণঅভ্যুত্থান বিরোধী কাজ: আনু মুহাম্মদ
  • মার্কিন শুল্ক কমিয়ে সরকার বড় দায়িত্ব পালন করেছে: মির্জা ফখরুল
  • সিডনিতে সাড়ে ৬ কোটি টাকার লেনদেনের অভিযোগ, মাহফুজ ও তার ভাই বললেন 'গুজব'
  • সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির খবরে বেদনায় নীল হয়ে গিয়েছি: মির্জা ফখরুল
  • মৃতের সংখ্যা নিয়ে গুজব না ছড়ানোর আহবান, গণমাধ্যম তদন্ত করলে সহযোগিতা করা হবে: আইএসপিআর

Most Read

1
মতামত

শুল্ক ছাড়ের আড়ালের ‘গোপন’ শর্ত জনগণ জানতে পারল না: আলতাফ পারভেজ

2
অর্থনীতি

মার্কিন শুল্ক আলোচনায় কীভাবে সফল হলো বাংলাদেশ

3
আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশের উপর ট্রাম্পের শুল্ক কমানোর পর ভারতের টেক্সটাইল শেয়ার দর কমল ৭% পর্যন্ত

4
মতামত

এফিডেভিট কী, কেন ও কীভাবে করবেন?

5
অর্থনীতি

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ৭ দিন পরে বাংলাদেশি পণ্যে সংশোধিত মার্কিন শুল্ক কার্যকর হবে

6
বাংলাদেশ

প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশ স্বাভাবিক অবস্থানে আছে: মার্কিন শুল্ক প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net