অব্যাহত তাপপ্রবাহ: ৪৪ বছরে ঢাকায় ২য় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড

১৯৬০ সালের পর ঢাকায় আজ শনিবার (২০ এপ্রিল) দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দুপুরে ঢাকায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ডের কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ওই বছরের পর ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল গত বছরের ১৬ এপ্রিল। এছাড়া ২০১৪ সালের ২৪ এপ্রিল ঢাকার তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
আর ১৯৬০ সালে ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দেশের বিভিন্ন উপজেলার ওপর দিয়ে বর্তমানে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এক প্রতিবেদনে ইউএনবি জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলায় শনিবার হিট স্ট্রোকে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল শুক্রবার জানানো হয়, ১৯ এপ্রিল থেকে আগামী তিনদিন তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া এ সময়ে তাপমাত্রা না কমে বরং আরও বাড়তে পারে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এদিকে শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে। এর আগে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল চুয়াডাঙ্গায়।
টানা পঞ্চম দিনের মতো চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে আজ শনিবার। এদিন জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চলমান তাপপ্রবাহের কারণে সারাদেশের সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তাপপ্রবাহের কারণে দেশের সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অ্যাসেম্বলি পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া না পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তীব্র গরমে চিকিৎসকেরা প্রয়োজন ছাড়া রোদে ঘর থেকে বের না হতে ও প্রচুর পরিমাণে পানি পানের পরামর্শ দিয়েছেন। গরমের কারণে বমি, পেটব্যথা, ডায়রিয়ার মতো অসুখ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসক মাহবুবুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'এ গরমে ডায়রিয়া, বমি, পেটব্যথার রোগী বেশি ভর্তি হচ্ছে। রোগীদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা বেশি। তাদেরকে ঘরের বাইরে বের হতে দেওয়া যাবে না। বেশি করে পানি খাওয়াতে হবে।'
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান মুন্সি টিবিএসকে বলেন, 'হাসপাতালে গরমের কারণে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সব বয়সের মানুষ। হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন রোগী বাড়ছে। অতিরিক্ত গরমের কারণে মানুষ হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।'
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ কাজের জন্য বাইরে যেতে হলে ছাতা ব্যবহার বা মাথায় কাপড় দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
'একটানা দীর্ঘক্ষণ রোদে কাজ করা যাবে না। এতে মাথাব্যথা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, যা থেকে হিট স্ট্রোক হয়। হিট স্ট্রোক হলে যে কেউ মারাও যেতে পারেন,' বলেন তিনি।