ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৩৬ জন

সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। রোববার (৯ জুলাই) সকাল পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৮৩৬ জন নতুন রোগী হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে ছয়জনের, যা এ বছর একদিনে সর্বোচ্চ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, নতুন রোগীদের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫১৬ জন। আর রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩২০।
সর্বশেষ ছয়জনের প্রাণহানীর পর চলতি বছর মশাবাহিত এই রোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭৩ জন। যাদের মধ্যে জুলাইয়ের শেষ নয় দিনে ২৬ জন রোগী মারা গেছেন। অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা ও চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঢাকায় ১,৯৬৮ জনসহ সারাদেশে মোট ২,৭৫০ জন ডেঙ্গু রোগী বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'এবার হালকা জ্বর, সর্দি ও মাথাব্যথায় দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠছে। অনেকে দুর্বল হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপের কারণে অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন। এটি ডেঙ্গুর একটি পরিবর্তিত রূপ। এই সমস্যাগুলো আমাকে একটু উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। কারণ রোগীরা বুঝতে পারছেন না যে ডেঙ্গুর স্বাভাবিক লক্ষণগুলো পরিবর্তিত হয়েছে। ফলে তারা দেরিতে হাসপাতালে যাচ্ছেন।'
তিনি বলেন, 'জ্বর, সর্দি, কাশি বা ব্যথা হলে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনো ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া যাবে না। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করবেন না। পরীক্ষায় ডেঙ্গু পজিটিভ আসলে, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রায় ৯০ শতাংশ রোগী বাড়িতেই চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারবেন।'
এবিএম আবদুল্লাহ আরও বলেন, 'কিন্তু আপনার যদি বমি হয়, খেতে না পারেন বা আপনার রক্তচাপ কমে যায়, তাহলে আপনাকে হাসপাতালে যেতে হবে। ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি, বয়স্ক ব্যক্তি, শিশু এবং গর্ভবতী নারীদের ডেঙ্গু হলে হাসপাতালে যেতে হবে।'
দেশে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ২৮১ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৯ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। গত বছর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ৬২ হাজার ৪২৩ জনের ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার তথ্য নথিভুক্ত করে। তার মধ্যে সেপ্টেম্বরে ১০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হন।