সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় নির্বিঘ্ন ঈদযাত্রা, কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে স্বস্তি যাত্রীদের
রমজান মাসের শেষ হয়ে আসতেই– বাংলাদেশের প্রায় সব মুসলমান ঈদুল ফিতর পালনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। ঈদটা প্রিয়জনদের সাথে করারই তাগিদ থাকে অধিকাংশ মানুষের। তবু ফিবছর ঈদযাত্রা হয়ে ওঠে দুর্ভোগের কারণ। এবার কিন্তু তার ব্যতিক্রমই হয়েছে। বিশেষত, রাজধানী ঢাকা ও এর আশেপাশে এলাকাগুলো থেকে বিভিন্ন পেশার মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যেই নিজ নিজ গ্রামের বাড়ি ফিরতে পেরেছেন বলে জানা গেছে।
এজন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও জনপথ বিভাগ, সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), বাংলাদেশ রেলওয়ে, স্থানীয় প্রশাসনগুলো থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের। তাদের প্রচেষ্টায় মহাসড়কগুলো ভারি যানজট মুক্ত ছিল এবার। ফলে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে ফিরতে পেরেছেন প্রিয়জনের কাছে।
এবছর ঈদের ছুটি আরো একদিন বাড়ানোর সরকারি সিদ্ধান্ত – বাড়িমুখো মানুষকে; বিশেষত বিপুল সংখ্যক পোশাক শ্রমিককে – পরিকল্পিতভাবে ও পর্যায়ক্রমে ঢাকা ছাড়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
এছাড়া, ঈদের ছুটিতে যাত্রার ট্রেন টিকিট এবার সম্পূর্ণরূপে অনলাইনে বিক্রি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কঠোর নজরদারি ছিল রেলওয়ে মন্ত্রণালয় এবং রেলওয়ে পুলিশের। এই প্রচেষ্টার সুফলই হিসেবেই অধিকাংশ ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছাড়তে পেরেছে, প্লাটফর্মও ছিল ভিড়মুক্ত।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, লঞ্চযাত্রীদের এবার দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়নি, দিতে হয়নি অতিরিক্ত ভাড়া। ট্রেনের সময়সূচিও ব্যাহত হয়নি, স্টেশনে কোনোপ্রকারে হয়রানির শিকারও হননি যাত্রীরা। তবে বাসযাত্রীদের অভিযোগ, বরাবরের মতোন এবারও তাদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ বিষয়ে আজ সকালে সাংবাদিকদের বলেন, ঈদের পর ফেরার সময়ও যেন এই যাত্রা শান্তিপূর্ণ থাকে সে বিষয়ে সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এবছর বাস, ট্রেন, লঞ্চ কোথাও ভোগান্তি নেই।
এদিকে মুন্সিগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে বাড়ি ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের ২৪ জেলার মানুষ। বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) থেকে পদ্মা সেতুতে মোটরবাইকের চলাচল উন্মুক্ত করেছে সরকার।
সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় মোটরবাইকের ভিড় দেখা গেলেও, দীর্ঘ সাড়ি তৈরি হওয়ার মতো কোনো ঘটনা জানা যায়নি। ট্রাফিক বিধি মেনেই পদ্মা সেতু পাড়ি দিচ্ছেন বাইকাররা। এছাড়া, গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়িতেও বাড়ি ফিরছে মানুষ।
মুন্সিগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক স ম জিয়াউল হাসান বলেন, 'কোনো গাড়ি যাতে পথ আটকে যানজট তৈরি না করে, সেজন্য ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ অবস্থান করছে'।
'এর পাশাপাশি মোটরবাইকের জন্য পৃথক দুটি বুথসহ সেতুর সাতটি টোল বুথ চালু রয়েছে। ফলে সব ধরনের যানবাহন অনায়সে যাতায়াত করতে পারছে'।
একই চিত্র দেশের উত্তরাঞ্চলের। এবছর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের যানজট কমাতে বিশেষ পদক্ষেপ নেয় পুলিশসহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষ।
ঈদের ছুটিতে সাধারণত এই পথে ৪০-৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়, কিন্তু এই বছর মাত্র ৭ কিলোমিটার যানজট হয়েছে, তাও মাত্র আধাঘণ্টার জন্য।
যানজট এড়াতে বাইপাস ব্যবহার করে মহাসড়কের দুই লেনকে ওয়ানওয়ে করা হয়। এছাড়া, অন্যান্য কিছু উদ্যোগ এবছর উত্তরবঙ্গ যাত্রীদের ঈদ যাত্রাকে নির্বিঘ্ন করেছে।
