সাংবাদিক শিমুল হত্যার বিচার চলতে বাধা নেই

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল হত্যা মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে যে আদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট, তা স্থগিত করে চেম্বার আদালতের আদেশ বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
এই আদেশের ফলে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে শিমুল হত্যা মামলা চলতে আর কোনও বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। আসামিদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুল আলিম জুয়েল।
এর আগে, গত ২৮ ডিসেম্বর শিমুল হত্যা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সিরাজগঞ্জ আদালত থেকে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এই প্রজ্ঞাপন চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন হাবিবুল হক মিন্টুসহ আসামিরা।
এরপর গত ২৯ আগস্ট সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল মামলার কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে শিমুল হত্যা মামলা রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে হাইকোর্ট আদেশ দিলে গত ১৯ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত সেই আদেশ স্থগিত করে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শাহজাদপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি বিজয় মাহমুদকে মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৎকালীন পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরুর সমর্থকদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
ওই সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পৌর মেয়র মিরুর শটগানের গুলিতে সাংবাদিক শিমুল গুরুতর আহত হন। পরদিন তিনি মারা যান। শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার খাতুন বাদী হয়ে মিরুকে প্রধান আসামি করে ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২৫ আসামির বিরুদ্ধে শাহজাদপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে পুলিশ একই বছরের ২ মে হালিমুল হক মিরু, তার ভাই মিন্টুসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মিরু কারাগারে থাকলেও অপর ৩৭ জন আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন।
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি স্থানান্তরের জন্য গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কিন্তু অজানা কারণে দীর্ঘ প্রায় ৭ মাস পর গত ১৪ জুলাই প্রজ্ঞাপনটি সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পৌঁছে। এরপর বহুল আলোচিত মামলাটি রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পৌঁছে।
বর্তমানে শিমুল হত্যা মামলা রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন পর্যায়ে রয়েছে।