বাগমারায় আলোচিত মা-ছেলে হত্যাকাণ্ডে তিন জনের ফাঁসি

রাজশাহীর বাগমারার আলোচিত মা-ছেলেকে গলা কেটে হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেছে আদালত। রায়ে তিন জনের ফাঁসি এবং চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
একই সাথে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত চার আসামির প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড।
আজ বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এ রায় দেন বিচারক অনুপ কুমার।
রায় ঘোষণাকালে মামলার সব আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর আদালতের নির্দেশে তাদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
রায়ে ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আবুল হোসেন মাস্টার (৫২), হাবিবুর রহমান হাবিব (৪০) ও চাকরিচ্যুত বিজিবি সদস্য আবদুর রাজ্জাক (৩৫)।
এর মধ্যে আবুল হোসেন মাস্টার বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দেউলা রানী রিভারভিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। আর হাবিবুরের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার আলীপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আবুল কাশেম।
এছাড়া ফাঁসির আদেশ প্রাপ্ত চাকরিচ্যুত বিজিবি সদস্য আবদুর রাজ্জাক (৩৫) রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার দেবীপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ আল কাফি (২২), একই গ্রামের লবির উদ্দিনের ছেলে রুহুল আমিন (৩০), দুর্গাপুরের খিদ্রকাশিপুর গ্রামের ছাবের আলীর ছেলে রুস্তম আলী (২৬) এবং খিদ্রলক্ষ্মীপুর গ্রামের মনিরুল ইসলাম ওরফে মনির (২৩)।
রায়ের পর আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য এ বছরের এপ্রিলেই মামলাটি জেলা জজ আদালত থেকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
মামলাটিতে মোট ৫১ জন সাক্ষী ছিলেন। আদালত ৪৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। এরপর গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আজ বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে বাগমারার দেউলা গ্রামের নিজ বাড়িতে আকলিমা বেগম ও তার ছেলেকে গলা কেটে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় আকলিমার বড় ছেলে দুলাল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে বাগমারা থানায় হত্যা মামলা করেন। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় নানা মোড় নেয় এই জোড়া খুনের তদন্ত। তিন দফা বদল করা হয় তদন্ত কর্মকর্তা।
সর্বশেষ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটির তদন্ত করে। ২০১৮ সালের ৩১ মে আদালতে পিবিআইয়ের পরিদর্শক আলমগীর হোসেন এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়।