বেনাপোল বন্দর দিয়ে ২০১৯ সালেই ‘পালায়’ পিকে হালদার

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নয়, যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সড়ক পথে দেশত্যাগ করেছেন পিপলিস লিজিংসহ কয়েকাটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাত করে বিদেশে পাচার করা প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার।
সোমবার ইমিগ্রেশন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়কে একটি চিঠির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে আগামী ১৫ মার্চ এ বিষয়ে শুনানি হবে।
বিষয়টি ঢাকার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর দুদক ইমিগ্রেশন পুলিশকে চিঠি দেয় পি কে হালদারসহ আরও কয়েকজন যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারে। ওই চিঠি ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে পৌঁছায় ২৩ অক্টোবর বিকেল ৪টায়। তার ১৩ মিনিট আগেই (২৩ অক্টোবর বিকেল ৩টা ৪৭ মিনিটে) পি কে হালদার বেনাপোল দিয়ে দেশত্যাগ করেন। অর্থ্যাৎ পি কে হালদারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির চিঠি পাওয়ার আগেই তিনি দেশত্যাগ করেন।
ইমিগ্রেশন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানায়, দুদকের চিঠি পাওয়ার পরপরই বেশ কিছু ফাইল ঠিকঠাক করে বিকের ৫টা নাগাদ দেশের সকল বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে পিকে হালদারের দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা জারি করে নোটিশ করে।
এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও কীভাবে দেশত্যাগ করলেন তা জানতে চান হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে পিকে হালদার যেদিন দেশত্যাগ করেছিলেন, সেদিন বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনের দায়িত্বরতদের এবং দুদকের দায়িত্বে কে কে ছিলেন তার তালিকা দাখিল করতে বলেন। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের তিনটি বিভাগে ২০০৮ সাল থেকে কর্মরতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকার বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে তা জানাতে বলা হয়।
গত বছরের ১৮ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে 'পি কে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক' শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর তাকে বিদেশ থেকে ফেরাতে এবং গ্রেফতার করতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে স্বপ্রণোদিত আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ওই আদেশ দেন হাইকোর্ট।
পিকে হালদার এখন কানাডায় রয়েছেন বলে গত বছরের অক্টোবরে হাইকোর্টকে জানান তার আইনজীবীরা। গত ২০ অক্টোবর এক শুনানিতে পিকে হালদারের আইনজীবী আদালতকে জানান কানাডায় থাকা পিকে হালদার দুবাই থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ফিরতে চান। দেশে ফিরলে তাকে যেন গ্রেপ্তার করা না হয়, সে আবেদন জানানো হয়। কিন্তু হাইকোর্ট এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে দেশে ফিরলেই তাকে গ্রেপ্তার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন। এরপর আর ফেরেনি পিকে হালদার।