ধর্ষণের শিকার নারীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ বাদ যাচ্ছে

সরকার ধর্ষণ মামলায় ধর্ষণের শিকার নারীর চরিত্র নিয়ে 'নেতিবাচক' মন্তব্য করার বিধান, বিদ্যমান সাক্ষ্য আইন থেকে বাদ দিয়ে সংশোধন করার কাজ চলছে যা সংসদের আগামী অধিবেশনে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল হক।
বুধবার জাতীয় সংসদে বিরোধীদলের সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন ছাঁটাই প্রস্তাবের জবাব দিতে গিয়ে এই তথ্য জানান আইনমন্ত্রী। এর আগে, ছাটাই প্রস্তাবের আলোচনায় বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা সাক্ষ্য আইনটিকে যুগোপযোগী করার প্রস্তাব তোলেন।
আনিসুল হক বলেন, "সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ ধরায়, ধর্ষণ মামলার ভিকটিমের চরিত্র নিয়ে কথা বলার একটা সাব সেকশন [(১৫৫(৪)] আছে। সেটা পরিবর্তন হচ্ছে। আশা করি পূর্ণাঙ্গভাবে সেপ্টেম্বর মাসে যে সংসদ অধিবেশন হবে, সেখানে নিয়ে আসতে পারবো।"
তিনি উল্লেখ করেন, সাক্ষ্য আইন যুগোপযোগী করার জন্য কাজ চলছে। বিশেষ করে এটা হবে ভার্চুয়াল।
এসময়, করোনার মধ্যে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, 'করোনার কারণে গত বছর ২৫ মার্চ থেকে মে পর্যন্ত আদালত বন্ধ ছিল। যে কারণে অনেক মামলা জমে যায়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মামলা পরিচালনার বিধান হয়। এ কারণে এক লাখ ৩৭ হাজার ৩৩০টি মামলা নিষ্পত্তি সম্ভব হয়েছে।
এদিকে, ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনার বিএনপির সংসসদ সদস্য হারুনুর রশীর বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর দাবি জানান।
এর জবাবে, বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে হলে রাষ্ট্রপতি অথবা সরকারের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, যে কেউ আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে আর না হলে সরকারের কাছে সেকশন ৪০১ অনুযায়ী ক্ষমা চাইতে পারেন। যদি তারা বিবেচনা করেন, তবে ক্ষমা করতে পারেন। কিন্তু ক্ষমা চাইতে গেলে অবশ্যই আসামির দোষ স্বীকার করতে হবে।
আনিসুল হক আরও বলেন, 'পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দুটি শর্তে মুক্তি দেয়া হয়। শর্তগুলো হল তিনি দেশে থাকবেন ও বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন। এটাকে ৪০১ ধারায় দরখাস্ত হিসেবে আমরা গ্রহণ করি এবং এটা কার্যকর।"
স্পিকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "একটা দরখাস্তে যখন কার্যকরী হয়ে যায় তখন সেই দরখাস্ত কি পুনর্বিবেচনা করা যায়? ওনারাতো এই দুটি শর্তে তাকে মুক্ত করে রেখেছেন। তারপর আবার এখন তারা বলছেন, তাকে বিদেশ পাঠাতে হবে। এটা কি এ রকম কথা? ওই দরখাস্ত তো শেষ। ওই দরখাস্তের ওপরে তো আর কেউ কিছু করতে পারবে না।"