দেশে কেটিএম মোটরসাইকেলের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু

আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করল ইউরোপের বিশ্বখ্যাত মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড কেটিএম। সোমবার আয়োজিত এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কেটিএম ১২৫ ডিউক এবং কেটিএম আরসি ১২৫ মডেলের মোটরসাইকেল উন্মোচন করে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড।
প্রিমিয়াম মডেলের বাইক দুটি এখন গ্রে মার্কেট ইমপোর্টারদের ধার্য করা দামের তুলনায় ১৫ শতাংশ কম মূল্যে পাওয়া যাবে।
গতকাল ময়মনসিংহের ভালুকায় রানার অটোমোবাইল কারখানা কমপ্লেক্সে জমকালো এক উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাইকপ্রেমীদের বহুল প্রতীক্ষিত মোটরসাইকেল দুটির উন্মোচন হয়।

ন্যাকেড ট্যুরার বাইক ডিউক এবং স্পোর্টস ট্যুরার বাইক আরসি বাংলাদেশের বাইকপ্রেমীদের মধ্যে দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। ১২৫ সিসির কেটিএম বাইক বাংলাদেশের জনপ্রিয় ১৫০ সিসির কিছু বাইকের চেয়েও অধিক কার্যকর বলে মন্তব্য করেন তারা।
অনুষ্ঠানে রানার অটোমোবাইলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল চৌধুরী বলেন, 'আজ আমরা প্রথমবারের মতো কেটিএমের মোটরসাইকেল উন্মোচন করতে পেরে ভীষণ আনন্দিত। একইসঙ্গে আমরা আত্মবিশ্বাসী, বাংলাদেশে প্রিমিয়াম এবং প্রথম শ্রেণির বাইকিং অভিজ্ঞতার পথে এই বাইক এক নতুন যাত্রার নেতৃত্ব দেবে।'
প্রতিষ্ঠানটি দেশে কেটিএমের অন্যান্য বাইক আনতেও আগ্রহী। একইসঙ্গে অস্ট্রিয়ার প্রতিষ্ঠানটি রাজি হলে স্থানীয়ভাবে দেশেই কেটিএমের উৎপাদন শুরু করতে চায় রানার।
রানারের অন্যান্য ব্র্যান্ডের বাইকের মধ্যে রয়েছে ইউএম, ভেসপা, এপ্রিলিয়া ও রানার। তবে এদের মধ্যে কেটিএম'কে সর্বাধিক প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড বলে গণ্য করা হয়।
রানার অটোমোবাইলের পরিচালক আমিদ সাকিফ খান বলেন, 'গত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে মোটরসাইকেল বাজার সমৃদ্ধ হচ্ছে। কেটিএম এই বাজারে আসতে পেরে ধন্য। গুণগত মানের নিশ্চয়তা এবং গ্রাহক সেবার মাধ্যমে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপনে প্রতিষ্ঠানটি আন্তরিকভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।'
ইতোমধ্যে রাজধানীতে রানার বিক্রয় কেন্দ্রে কেটিএম বাইক চলে এসেছে। শিগগিরই দেশের অন্যান্য আউটলেটে বাইকগুলো বিতরণে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
কেটিএম ১২৫ ডিউকের বাজারমূল্য এখন সাড়ে তিন লাখ টাকা। তবে অত্যাধুনিক ফিচার সমৃদ্ধ ইউরোপীয় সংস্করণের মূল্য পড়বে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
অন্যদিকে, ১২৫ আরসি বাইকটির মূল্য পড়বে ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
কয়েক বছর ধরেই দেশের ধূসর বাজারে ডিউক বাইকটি পাওয়া যাচ্ছে। ইউরোপীয় সংস্করণটির জন্য কেটিএম-প্রেমীরা গ্রে মার্কেটে ৬ লাখের বেশি মূল্য পরিশোধ করছে।

আমিদ সাকিফ খান আরও জানান, তার টেকনিক্যাল দল বিশেষায়িত যন্ত্রাংশগুলোর জন্য শ্রেষ্ঠ সার্ভিসিং নিশ্চিত করতে কেটিএমের সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সবগুলো মডেলেই রয়েছে লিকুইড কুলড, ফুয়েল ইঞ্জেকটেড উন্নতমানের ইঞ্জিন- যা গ্রাহকদের দেবে সর্বোত্তম অভিজ্ঞতা।
নিরাপদ ব্রেক নেওয়া নিশ্চিত করতে বাইকের ফ্রন্ট ও রিয়ার হুইলে প্রশস্ত ও উন্নতমানের গ্রিপ সমৃদ্ধ টায়ার রয়েছে, যেখানে থাকবে অ্যান্টিলক ব্রেকিং ব্যবস্থা।
মোটোজিপি চ্যাম্পিয়নশিপে পাল্লা দেওয়া কেটিএম আরসি ১৬-এর অনুকরণে কেটিএম আরসি ১২৫ তৈরি করা হয়েছে।
অস্ট্রিয়ান মোটরসাইকেল প্রতিষ্ঠান কেটিএম যাত্রা শুরু করে ১৯৩৪ সালে। কয়েক দশক ধরেই বাইকের বাজারে কেটিএম অন্যতম প্রধান এক ব্র্যান্ডের নাম। অত্যাধুনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিজাইন এবং টেকনোলজির ব্যবহারের জন্য প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।
কেটিএম ইউএসএ, কেটিএম ইউকে, কেটিএম ইন্ডিয়া, কেটিএম রাশিয়া, কেটিএম আফ্রিকা এবং কেটিএম এশিয়াসহ বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠানটিতে তিন হাজারের অধিক কর্মচারী কাজ করছেন।
পিয়েরের মোবিলিটি এজি এবং বাজাজ অটো বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির মূল শেয়ারহোল্ডার।
অফ রোড বা অসমতলে রেসিং প্রযুক্তিতে কেটিএম দীর্ঘদিন ধরেই আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। কেটিএম রাইডাররা বিশ্বজুড়ে অফ-রোড রেসিং-এ চ্যাম্পিয়নের স্থান নিশ্চিত করছেন।
কেটিএমের নিজস্ব গবেষণা ও ডেভেলপমেন্ট এবং রাইডিং একাডেমির মিলিত প্রচেষ্টা প্রতিষ্ঠানটিকে সমগ্র বিশ্বে এক প্রতিনিধিত্বশালী ব্র্যান্ডে পরিণত করেছে।