জুতায় এলো মায়ের অন্তিম বার্তা

বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান জুস কারখানায় আগুন লাগার পর শ্রমিক মোস্তাকিম (১৮) তার মায়ের খোঁজ পেতে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। তার মা ওই কারখানার চারতলায় কাজ করতেন।
মোস্তাকিমের যন্ত্রণাকাতর অপেক্ষার অবসান ঘটে তার মায়ের একপাটি জুতো পাওয়ার পর। জুতোটিতে লেখা ছিল: 'এখন আর কেউ আমাদের বাঁচাতে পারবে না। বিদায়।'
মোস্তাকিম বলেন, 'আমার মা আমাকে ফোন করে কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, আমাদের আর কখনো দেখা হবে না। এর আধঘণ্টা পরে একটা জুতায় মা তার শেষবার্তা পাঠান।'
মোস্তাকিম জানান, তার মায়ের দেহাবশেষ এখনো পাওয়া যায়নি।
কারখানার চতুর্থ তলায় মোস্তাকিমের মা ফাতেমা, তার সেকশন বস এবং অন্তত আরও ২০-২৫ জন আটকা পড়ে অন্তিম মুহূর্তের অপেক্ষা করছিলেন।

মোস্তাকিম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'চারতলার ওই অংশের দুটি সিঁড়িই তালাবদ্ধ ছিল, লিফটও বন্ধ ছিল। তারা যে বের হওয়ার চেষ্টা করবেন, তারও কোনো উপায় ছিল না।'আ
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে তারা নিচ থেকে আগুন উঠে আসতে দেখেন।
'আগুনটা আস্তে আস্তে ওপরে উঠেছে। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে তিনতলায় আগুন লাগে, চারতলায় আগুন ধরে বিকালের দিকে। প্রথমে অতিরিক্ত উত্তাপের কারণে দমকলকর্মীরা ভেতরে ঢুকতে পারেননি,' বলেন তিনি।
মোস্তাকিমকে উদ্ধার করার পর মায়ের মরদেহ শনাক্তের জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে যেতে বলা হয়।
১৪ বছর বয়সে ওই কারখানায় যোগ দেন মোস্তাকিম। গত চার বছর ধরে কোনো ফায়ার এক্সিট ও যথাযথ অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম ছাড়াই তিনি ওখানে কাজ করছিলেন।
তিনি বলেন, 'আমার মা ওখানে তিন বছর ধরে কাজ করছিলেন। প্রতি শিফটে কারখানায় প্রায় ১০০-১৫০ জন শ্রমিক কাজ করতেন।'
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ৫২ জন মারা গেছেন। নিখোঁজ আছেন আরও অনেকে।