জনস্বার্থকে প্রাধান্য দিতে সেনাবাহিনীর প্রতি রাষ্ট্রপতির আহ্বান

জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সাথে সাথে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
মঙ্গলবার সকালে যশোর সেনানিবাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিগন্যাল কোরের ষষ্ঠ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক। রাষ্ট্র ও সরকারের সকল কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় জনগণের কল্যাণে। তাই দায়িত্ব পালনকালে সেনাবাহিনীকে জনস্বার্থ ও জনকল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।
“মনে রাখতে হবে জনগণের কষ্টার্জিত টাকায়ই দেশের উন্নয়ন এবং রাষ্ট্রের যাবতীয় ব্যয় মেটানো হয়। তাই জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি জনগণের সুখ, দুঃখে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।”
সিগন্যাল কোরের সদস্যরা সেনাবাহিনীর গৌরবময় ঐতিহ্যের অংশীদার মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি বলেন, “স্বাধীনতার পর দেশ গঠন এবং দেশ মাতৃকার সেবায় এই কোরের সদস্যরা নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরে যে কোন দুর্যোগময় মুহুর্তে সাধারণ মানুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সেবামূলক কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনীর অংশ হিসেবে সিগন্যাল কোরের সদস্যদের অবদান প্রশংসনীয়।”

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে এবং কুয়েত পুনর্বাসন মিশনে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে সিগন্যাল কোর আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রশংসা অর্জনে সক্ষম হয়েছে বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি হামিদ।
সেনাবাহিনীর সার্বিক ধারাবাহিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, সম্প্রতি সারাদেশে দুটি সিগন্যাল ব্যাটালিয়ন, বরিশাল, সিলেট ও রামুতে তিনটি স্ট্যাটিক সিগন্যাল কোম্পানি ও চারটি ব্রিগেড সিগন্যাল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তির আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আওতায় সেনাবাহিনীতে সাইবার ওয়ারফেয়ার গ্রুপ, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার ইউনিট, স্যাকটম ইউনিট ও স্ট্রাটেজিক ট্রান্সমিশন ইউনিট ইত্যাদি অন্তর্ভুক্তির পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। যা সামগ্রিকভাবে সেনাবাহিনীর সমরশক্তি ও যোগাযোগ সক্ষমতা আরও সুসংহত করবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধ ‘অমর প্রাণ’ এ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া, যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) ডা. নাসির উদ্দিন।
এছাড়াও উর্ধ্বতন সামরিক ও আধা সামরিক কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন দেশের প্রতিরক্ষা ও সামরিক এটাশেগণ এবং সিগন্যাল কোরের বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত অফিসার, জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার ও অন্যান্য পদবীর সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।