Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

কৃত্রিম টার্ফ: মাঠে বা ছাদে, নকল ঘাসে

কৃত্রিম ঘাস সংবলিত মাঠকেই মূলত টার্ফ বলা হয়। বাংলাদেশে ২০১৫ সাল থেকে টার্ফের প্রচলন শুরু হয়।
কৃত্রিম টার্ফ: মাঠে বা ছাদে, নকল ঘাসে

ফিচার

ফাইয়াজ আহনাফ সামিন
15 November, 2024, 11:55 am
Last modified: 15 November, 2024, 11:59 am

Related News

  • মাঠ থেকে মোবাইল: হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলার জায়গায় যেভাবে অনলাইন গেমস
  • ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে ডলফিনরাও একে অপরকে ‘হাসি’ দেয়!
  • সোমালিয়ার এক খেলার মাঠ, ফুটবলের পাশাপাশি এখানে কার্যকর হয় মৃত্যুদণ্ডও
  • তাম্মাত বিল খয়ের: সাইকেলপাগল এক দস্যির গল্প
  • গাবতলীর একমাত্র খেলার মাঠটিও কি দখল হয়ে যাবে?

কৃত্রিম টার্ফ: মাঠে বা ছাদে, নকল ঘাসে

কৃত্রিম ঘাস সংবলিত মাঠকেই মূলত টার্ফ বলা হয়। বাংলাদেশে ২০১৫ সাল থেকে টার্ফের প্রচলন শুরু হয়।
ফাইয়াজ আহনাফ সামিন
15 November, 2024, 11:55 am
Last modified: 15 November, 2024, 11:59 am

টার্ফে খেলা হচ্ছে ক্রিকেট। ছবি: অরিন

'খেলতে যাবি? বিকেলে মাঠে আয়!'—এটি আমাদের শৈশবের অন্যতম প্রিয় আহ্বান। বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে পাড়ার মাঠে উদ্দাম ফুটবল বা শর্টপিচ ক্রিকেট খেলা ছিল আমাদের বেড়ে ওঠার সোনালি মুহূর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম। সবুজ ঘাস বা কাদামাটিতে গড়াগড়ি করে খেলার সুযোগ এখনকার নতুন প্রজন্ম খুব কমই পায়। 

পাবেই বা কীভাবে? শহরের মাঠগুলো দখল করে দালান নির্মাণের প্রথা আমাদের দেশে বহু আগে থেকেই শুরু হয়েছে। এখন শুধু শহরেই নয়, মফস্বল এবং গ্রামাঞ্চলের মাঠগুলোও হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।

নতুন প্রজন্মের শিশুদের দেখলেই মাঠের অভাবটা স্পষ্ট বোঝা যায়। সারাদিন মোবাইল আর ইন্টারনেটে বুঁদ হয়ে সময় পার করাটাই তাদের কাছে স্বাভাবিক। মাঠে খেলার চেয়ে মোবাইলে গেম খেলাই তাদের বেশি পছন্দ। যারা আগে বিকেল কাটাতো খেলার মাঠে, এখন তারা বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিস-আদালত বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে ব্যস্ত থাকে। তাই, মাঠের অভাবটা তারা ভালোভাবে টের পায়।

এ অভাব দূর করতে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য বড় বড় শহরে গড়ে উঠেছে কৃত্রিম খেলার মাঠ। কৃত্রিম ঘাস দিয়ে তৈরি এ মাঠগুলোকে বলা হয় টার্ফ। যেকোনো শক্ত ভিত্তির ওপর এগুলো বসানো সম্ভব। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে তৈরি এসব মাঠ যে কেউ চাইলে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কিছু সময়ের জন্য ভাড়া নিতে পারেন। ফুটবল বা ক্রিকেটের পাশাপাশি ব্যাডমিন্টনও খেলা যায় অনেক টার্ফে। 

কৃত্রিম টার্ফ নিয়ে আরও বিস্তারিত জানার জন্য দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড কথা বলে মিরপুরের জনপ্রিয় অ্যারো টার্ফের তিনজন মালিক—জব্বার সরকার, প্রয়াস আবেদ এবং আফসার জামিলের সঙ্গে।

টার্ফের অ আ ক খ

কৃত্রিম ঘাস সংবলিত মাঠকেই মূলত টার্ফ বলা হয়। বাংলাদেশে ২০১৫ সাল থেকে টার্ফের প্রচলন শুরু হয়। বাফুফে ভবনের পাশে বালুর মাঠে অনুশীলনের জন্য একটি টার্ফ বসানো হয়েছিল। এরপর ধীরে ধীরে ঢাকায় বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে টার্ফ তৈরি শুরু করেন উদ্যোক্তারা। টার্ফ শুধু ভবনের ছাদেই তৈরি হয়না; খোলা সমতল জমিতেও তৈরি হয়েছে অনেক টার্ফ।

অ্যাথলেটস হাব টার্ফ। ছবি: পলক

প্রাকৃতিক ঘাসের মাঠ বাদ দিয়ে খোলা জমিতে কৃত্রিম ঘাসের টার্ফ কেন তৈরি করা হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে অ্যারো টার্ফের প্রয়াস আবেদ বলেন, 'আমরা ছোটবেলা থেকেই ঘাসের মাঠে খেলে বড় হয়েছি। ঢাকা বা চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোয় এখন খেলার জায়গা খুব কম। অল্প কয়টা মাঠ যে আছে, তা কখনোই খালি পাওয়া যায় না। আমি বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে গেলে দেখি, মাঠে অন্য কেউ খেলছে বা অন্য কোনো কাজে দখল হয়ে আছে।'

তিনি বলেন, টার্ফের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এখানে রাতে খেলা যায়। এবং আমি একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে পুরো সময়টা নিজের জন্য ব্যবহার করতে পারবো।

টার্ফের মূল উপাদান হলো কৃত্রিম ঘাস। চীন থেকে আমদানি করা এ ধরনের ঘাসকে 'এফজি গ্রাস' বা ফিল্ড গ্রাস বলা হয়। এটি সিনথেটিক ফাইবার দিয়ে তৈরি, যা পলিইথিলিন বা পলিপ্রপেলিন উপাদান থেকে তৈরি হয়। 

এ ঘাস দেখতে অনেকটা প্রাকৃতিক ঘাসের মতো এবং অনুভূতিতেও তাই। অনেক বেশি ব্যবহার করা হলেও এর গঠনের (টেক্সচার) ক্ষতি হয় না। যেকোনো আবহাওয়ায় এ ঘাস টেকসই এবং পানি-প্রতিরোধী, ফলে মাঠে পানি জমে না।

এফজি গ্রাস বিভিন্ন মানের পাওয়া যায় এবং মানভেদে এর দামও আলাদা। আন্তর্জাতিক কেন্দ্রীয় ফুটবল সংস্থা ফিফার অনুমোদিত কিছু কোম্পানি চীনে এ ঘাস তৈরি করে। আমাদের দেশের অধিকাংশ টার্ফের ঘাসই চীন থেকে আমদানি করা হয়। 

অনুমোদিত কোম্পানি থেকে ঘাস আমদানি করলে ফিফা থেকে টার্ফের সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। অ্যারো টার্ফ-এর দাবি অনুযায়ী ফিফা-অনুমোদিত মানদণ্ড অনুযায়ী তারাই ঢাকার একমাত্র রুফটপ টার্ফ মাঠ।

জাফ অ্যারেনা। ছবি: সংগৃহীত

টার্ফ তৈরি করতে আরও কিছু উপাদান প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে আছে আঠা, গ্রানুলস এবং শক অ্যাবজর্বার প্যাড। এফজি গ্রাস সংযুক্ত করতে এক ধরনের প্লাস্টিক দ্রবণের আঠার ব্যবহার করা হয়। গ্রানুলস হলো ছোট ছোট প্লাস্টিকের দানা, যা ঘাসের নিচে খালি জায়গা পূরণের জন্য দেওয়া হয়। শক অ্যাবজর্বার প্যাড থাকে গ্রানুলসের নিচে, যাতে খেলোয়াড়েরা আঘাত না পান।

আঠা এবং গ্রানুলস দেশে পাওয়া গেলেও চীন থেকে কম দামে আনা যায়। শক অ্যাবজর্বার প্যাডসহ অন্যান্য অনুষঙ্গ, যেমন গোল পোস্ট ও রঙ, আমাদের দেশেই পাওয়া যায়।

টার্ফের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো এর ড্রেইনেজ সিস্টেম। প্রাকৃতিক ঘাসের মাঠে বৃষ্টি বা অন্যান্য কারণে পানি জমলে তা মাটি শুষে নেয়। কিন্তু টার্ফে তো সে সুযোগ নেই। তাই টার্ফে ভালো মানের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা রাখতে হয়। টার্ফের ফ্লোর তৈরি করার সময় ঢাল এমনভাবে রাখতে হয় যেন বৃষ্টি বা অন্য কোনো কারণে পানি জমতে না পারে।

ভালো মানের একটি টার্ফ তৈরি করতে ৬০ লাখ থেকে কয়েক কোটি টাকার ওপরে খরচ হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে টার্ফ তৈরি করা হয়। 

টার্ফের ব্যবসায় বিনিয়োগ করা বেশ লাভজনক। কারণ টার্ফের মাঠ পরিবেশবান্ধব। এতে পানির খরচ একেবারেই কম। কীটনাশক কিংবা সারের প্রয়োজনীয়তাও নেই এতে। সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারলে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ বছর টার্ফের মাঠে বড় খরচ নেই বলে জানান তিন উদ্যোক্তা।

কৃত্রিম ঘাস প্রাকৃতিক ঘাসের চেয়ে অনেক বেশি টেকসই। এটি সহজে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না এবং আবহাওয়া দ্বারাও প্রভাবিত হয় না। যদিও কৃত্রিম ঘাসের প্রতিস্থাপন খরচ প্রাকৃতিক ঘাসের তুলনায় কয়েকশ গুণ বেশি, তবে ব্যবহারের সুবিধার জন্য এটি দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে।

গ্রানুলস। ছবি: সংগৃহীত

টার্ফের শহর ঢাকা ও চট্টগ্রাম

বাংলাদেশের দুই মেগাসিটি ঢাকা ও চট্টগ্রাম। এ দুই শহরে খেলার মাঠের সংখ্যা দুই হাতের আঙ্গুলে গুণে শেষ করে ফেলা যাবে, যার ফলে এ দুই শহরে কৃত্রিম মাঠের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০১৫ সালে বাফুফে ভবনের সঙ্গে যে টার্ফ তৈরি করা হয়েছিল, তা ছিল শুধু অনুশীলনের জন্য। কমলাপুর স্টেডিয়ামেও সে সময়ে একটি টার্ফ তৈরি করা হয়েছিল। এরপর ২০১৮ সালে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ফুটবল টিম 'এনডিসি স্পোর্টস ফ্যাসিলিটি' নামক একটি কৃত্রিম মাঠ তৈরি করে শুধু তাদের নিজেদের ব্যবহারের জন্য। 

সে বছরের শেষেই বসুন্ধরায় ১৬ কাঠা জমিতে সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে 'জাফ অ্যারিন' নামের আরেকটি কৃত্রিম মাঠ চালু করা হয়। এরপর এনডিসি স্পোর্টস ফ্যাসিলিটি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মাঠ ভাড়া দেওয়া শুরু করে।

এখন ঢাকায় অনেকগুলো টার্ফ রয়েছে—মোহাম্মদপুরে আলফা স্পোর্টস; পিলখানা সড়কে ডিএসএফ; মাটিকাটার ক্লাব ভল্টা; পল্লবীতে অ্যারো টার্ফ, ডিবক্স স্পোর্টস কমপ্লেক্স, অফসাইড হোম অব ফুটবল; বসুন্ধরায় জাফ অ্যারিনা, চট্টোটার্ফ, দ্য স্টেডিয়াম এবং এনডিই; পূর্বাচলে মেট্রোপ্লেক্স স্পোর্টিং, কিক অব ফুটবল গ্রাউন্ড; উত্তরায় টার্ফ গ্রাউন্ড, এবং ১০০ ফিটে শেফস টেবল, ফলস ৯।

ঢাকার টার্ফগুলোয় এলাকাভিত্তিতেই ভোক্তাই বেশি। তবে কেউ যদি দূর থেকে আসতে চায় টার্ফে, তাহলে সবাই মিলে গাড়ি ভাড়া করে চলে আসে সারাদিনের জন্য। অনেক টার্ফে রেস্টুরেন্টও আছে।

২০২০ সালে চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকায় একটি টার্ফ কোর্ট তৈরি করা হয়েছিল ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য। ২০২১ সালে দুই নম্বর গেট এলাকায় চট্টোটার্ফ নামে বাণিজ্যিক টার্ফ চালু হয়।

কৃত্রিম ঘাসের নিচের অংশ। ছবি: সংগৃহীত

টার্ফের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে পরের বছর চট্টগ্রামে সিকো অ্যারিনা নামে আরেকটি টার্ফ চালু হয়। চাঁদগাও এলাকায় ২০২২ এর শুরুতে চালু করা হয় ফরচুন স্পোর্টস অ্যারিনা।

এছাড়া, চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় কেবি টার্ফ, কাতালগঞ্জে এসিএম টার্ফ, জিইসিতে ডাগআউট টার্ফ এবং মেরিন ড্রাইভে হালিশহর টার্ফসহ দুই ডজনের বেশি টার্ফ রয়েছে।

ঢাকা ও চট্টগ্রাম ছাড়াও দেশের বড় বড় জেলাগুলোতে টার্ফ গড়ে উঠছে। কুমিল্লা, সিলেট, খুলনা, রাজশাহীতে টার্ফ আছে। মাঠের আকার অনুযায়ী প্রতি দলে পাঁচ থেকে এগারো জন করে খেলা যায় টার্ফে।

এখন টার্ফ মানে শুধু একটি খেলার মাঠ না, বরং রীতিমতো স্পোর্টস কমপ্লেক্স গড়ে উঠছে। কয়েক ধরনের খেলার জন্য কোর্ট তৈরি করা হচ্ছে টার্ফের সঙ্গে, যেমন: ক্রিকেট, টেনিস, ব্যাডমিন্টন, বাস্কেটবল কোর্ট। এছাড়া, অনেক আধুনিক টার্ফে সুইমিং পুলও রয়েছে। টার্ফে খেলোয়াড়দের জন্য থাকে ড্রেসিং রুম, ওয়াশরুম এবং হালকা খাবারের জন্য ক্যান্টিন।

যাদের জন্য টার্ফ

টার্ফের ব্যবহারকারী কেবল তরুণ প্রজন্ম নয়। তরুণেরা অবশ্যই আসেন, তবে তাদের সংখ্যা বৃহত্তর নয়। টার্ফে বেশি আসেন চাকরিজীবীরা। সন্ধ্যার পরে অফিস শেষে একঘেয়েমি কাটানোর জন্য অনেকেই টার্ফে এক-দেড় ঘণ্টা ফুটবল খেলেন। 

অনেক টার্ফে ফুটবল সরবরাহ করা হয়, তাই অফিস থেকে এসেই মাঠে নেমে যান অনেকে। তরুণ শিক্ষার্থীরা অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে খেলার সুযোগ পান, কিন্তু চাকরিজীবীদের সে ব্যবস্থা নেই।

শরীর ঠিক রাখতে নিয়মিত খেলাধুলা করা প্রয়োজন। তাই মাঝেমাঝে অফিস শেষে সন্ধ্যায় টার্ফে ফুটবল খেলতে যান ফারহান আকিফ। ঢাকায় একটি আন্তর্জাতিক এনজিওতে চাকরি করেন তিনি। তিনি বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতেও প্রতিদিন খেলতাম। কিন্তু চাকরিতে ঢোকার পর যান্ত্রিক জীবনে শরীরের ফিটনেস একদম নাই হয়ে যাচ্ছিল। উত্তরায় একটা টার্ফের খোঁজ পেলাম তারপরে।

নানা মানের টার্ফের নমুনা। ছবি: সংগৃহীত

'অফিস শেষে নিয়মিত এলাকার বন্ধু ও কলিগদের সঙ্গে খেলা হয় এখন টার্ফে। কিছু খরচ থাকলেও, সেটা শতভাগ উসুল হয়ে যায়।'

বিভিন্ন অফিস থেকে নানা সময় অনেক টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয় টার্ফে, সেগুলোতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন চাকরিজীবীরা। 

টার্ফে খেলার জন্য বয়সের কোনো বাধা নেই; ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সি সবাই মাঠ আর বল পেলে খেলার জন্য প্রস্তুত হয়ে যান। টার্ফ বুকিং দেওয়ার জন্য ফোনে যোগাযোগ করতে হয়।

আগের দিন বা ব্যস্ততা বেশি থাকলে কয়েকদিন আগে বুকিং দিতে হয়। বেশিরভাগ টার্ফের ফেসবুক পেজে নাম্বার ও সময়সূচি দেওয়া থাকে, যেখানে যোগাযোগ করে সহজেই সময় নির্ধারণ করা যায়। এছাড়া, ফেসবুকে টার্ফ সম্পর্কিত বিভিন্ন গ্রুপেও খেলোয়াড় চেয়ে পোস্ট করা যায়।

টার্ফের খরচ সম্পর্কে অ্যারো টার্ফের মালিক জব্বার সরকার বলেন, 'আমাদের টার্ফ সকাল ৭টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত খোলা থাকে। কর্মদিবসে দিনের বেলায় দেড় ঘণ্টার জন্য ভাড়া নিলে খরচ তিন হাজার টাকা, আর রাতে তা সাড়ে তিন হাজার টাকা।'

ছুটির দিনে চাপ বেশি হওয়ায় খরচ কিছুটা বাড়ে বলে জানান তিনি — দিনে সাড়ে তিন হাজার টাকা এবং রাতে সাড়ে চার হাজার টাকা। বড় দলের খেলোয়াড়রা খরচ ভাগ করে নেয়, তাই একসঙ্গে খেললে খরচ তুলনামূলকভাবে কম হয়। এছাড়াও, টুর্নামেন্টের জন্য অনেকেই সারাদিন বা কয়েকদিনের জন্য টার্ফ ভাড়া নেন, যা খরচে কমিয়ে আনে। এছাড়া অনেক সময় টার্ফে বিভিন্ন ডিসকাউন্টও দেওয়া হয়।

টার্ফে খেলা হচ্ছে ক্রিকেট। ছবি: অপর্ণা স্পোর্টস অ্যারেনা

খেলোয়াড়ের কাছে টার্ফ যেমন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবিয়াজ ইরতেসাম ঢাকায় বড় হয়েছেন এবং ছোটবেলা থেকেই খেলতে ভালোবাসেন। তিনি এখন নিয়মিত টার্ফে খেলে থাকেন। ঢাকার প্রায় সবগুলো টার্ফেই খেলা হয়েছে তার।

টার্ফে খেলার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, 'যখন ছোট ছিলাম, তখন আসল ঘাসের মাঠে খেলতাম। কিন্তু এখন ঢাকা শহরে সেরকম মাঠ খুঁজে পাওয়া কঠিন। মাঠে এখন মেলা বসে, কোরবানির হাট বসে, বা রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ হয়। এসব কারণে এখন আমরা কৃত্রিম ঘাসের মাঠে খেলি।'

তিনি আরও বলেন, 'টার্ফের বড় সুবিধা হলো এখানে পানি জমে না। বৃষ্টির দিনে ফুটবল খেলতে নামলে কাদার মধ্যে খেলতে হয়, কিন্তু টার্ফে এসব সমস্যা নেই। ঘাসের নিচে শক প্যাড থাকায় বলের নিয়ন্ত্রণ ভালো থাকে। আমাদের দেশের প্রাকৃতিক ঘাসের মাঠের রক্ষণাবেক্ষণও তেমন ভালো নয়। টার্ফের মাঠে এসব সমস্যা থাকে না।'

টার্ফে খেলার জন্য বিশেষ টার্ফ বুট কেনা যায়, তবে খালি পায়েও খেলা সম্ভব। কিন্তু সবাই পরামর্শ দেন টার্ফ বুট পড়ে খেলার জন্য। ফুটবল বুটের নিচে যেমন ধারালো স্পাইক (কাঁটা) থাকে, টার্ফ বুটে সেরকম কিছু থাকে না। তাই খেলার সময় আহত হওয়ার সম্ভাবনা কম।

আমাদের দেশে টার্ফ ব্যবসার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল বলেই মনে করা হচ্ছে। এটি তরুণ সমাজ এবং খেলোয়াড়দের জন্য আশার খবর। তবে এটি সামগ্রিকভাবে হতাশাব্যঞ্জক হতে পারে। যদি বেশি বেশি টার্ফ তৈরি হয়, তবে মানুষ ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক ঘাসের মাঠের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন।

প্রাকৃতিক ঘাসের মাঠের চাহিদা কমে গেলে মাঠগুলো ধীরে ধীরে দখল হয়ে যাবে। স্তিমিত হয়ে যাবে মাঠ বাঁচানোর আন্দোলন। কিন্তু, আমরা কেউই চাই না প্রাকৃতিক ঘাসের মাঠের চাহিদা শেষ হয়ে যাক। কারণ আমাদের দেশের সকল শ্রেণির মানুষের পক্ষে টার্ফ ভাড়া করে খেলার সামর্থ্য নেই।

Related Topics

টপ নিউজ

টার্ফকোর্ট / টার্ফ / কৃত্রিম মাঠ / খেলার মাঠ / মাঠ / খেলাধুলা / কৃত্রিম ঘাস

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ট্রাম্পের সঙ্গে বিরোধের মধ্যেই নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ইঙ্গিত দিলেন মাস্ক, জানালেন সম্ভাব্য নামও
  • ইলন মাস্কের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ: ট্রাম্প
  • ড. ইউনূসের লন্ডন সফরের সময় দেখা করতে চেয়ে অনুরোধ জানিয়েছেন টিউলিপ
  • গাজামুখী ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ ফিলিস্তিন জলসীমার কাছাকাছি
  • কিরগিজস্তানে ভেঙে ফেলা হলো মধ্য এশিয়ার সবচেয়ে উঁচু লেনিন ভাস্কর্য
  • পাকিস্তানের ব্যবহৃত পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র এড়াতে জ্যামিং হতে পারে প্রধান সহায়

Related News

  • মাঠ থেকে মোবাইল: হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলার জায়গায় যেভাবে অনলাইন গেমস
  • ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে ডলফিনরাও একে অপরকে ‘হাসি’ দেয়!
  • সোমালিয়ার এক খেলার মাঠ, ফুটবলের পাশাপাশি এখানে কার্যকর হয় মৃত্যুদণ্ডও
  • তাম্মাত বিল খয়ের: সাইকেলপাগল এক দস্যির গল্প
  • গাবতলীর একমাত্র খেলার মাঠটিও কি দখল হয়ে যাবে?

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পের সঙ্গে বিরোধের মধ্যেই নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ইঙ্গিত দিলেন মাস্ক, জানালেন সম্ভাব্য নামও

2
আন্তর্জাতিক

ইলন মাস্কের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ: ট্রাম্প

3
বাংলাদেশ

ড. ইউনূসের লন্ডন সফরের সময় দেখা করতে চেয়ে অনুরোধ জানিয়েছেন টিউলিপ

4
আন্তর্জাতিক

গাজামুখী ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ ফিলিস্তিন জলসীমার কাছাকাছি

5
আন্তর্জাতিক

কিরগিজস্তানে ভেঙে ফেলা হলো মধ্য এশিয়ার সবচেয়ে উঁচু লেনিন ভাস্কর্য

6
আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানের ব্যবহৃত পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র এড়াতে জ্যামিং হতে পারে প্রধান সহায়

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab