Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Friday
September 26, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
FRIDAY, SEPTEMBER 26, 2025
স্কুলে রয়েছে গ্রন্থাগার, পাঠে কেন আগ্রহ নেই শিক্ষার্থীদের  

ফিচার

জুনায়েত রাসেল
04 June, 2023, 08:55 pm
Last modified: 04 June, 2023, 09:03 pm

Related News

  • ছোট হচ্ছে বেস্টসেলার বইয়ের বাক্য; কীভাবে বিশ্বব্যাপী কমে যাচ্ছে পড়ার অভ্যাস?
  • 'অশনিসংকেত': যুক্তরাষ্ট্রে শখের বশে বই পড়ার অভ্যাস কমেছে ৪০ শতাংশ
  • আলিয়া মাদ্রাসার গ্রন্থাগার, বকশিবাজারে লুকিয়ে থাকা এক রত্নভান্ডার!
  • দাদার নেওয়া লাইব্রেরির বই ৯৯ বছর পর ফেরত দিলেন নিউ জার্সির এক নারী
  • অনির্বাণ লাইব্রেরি: যেভাবে আলো দেখাচ্ছে দক্ষিণের প্রত্যন্ত গ্রামকে

স্কুলে রয়েছে গ্রন্থাগার, পাঠে কেন আগ্রহ নেই শিক্ষার্থীদের  

শুধু সাহিত্যের বই নয়, বাঁধাই করা পাঠ্যবইও নাকি অনেকে পড়ছে না এখন। তাহলে শিক্ষার্থীরা শিখছে কীভাবে? উত্তর, অনলাইনের বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে। ফেসবুক, ইউটিউবের মত প্লাটফর্ম বই পড়ার আকর্ষণ অনেকটাই কমিয়ে দিচ্ছে। শর্টস ভিডিও, ফেসবুকের রিলস দেখার কারণে মনোযোগ ধরে রাখতেও সমস্যা হচ্ছে অনেকের।
জুনায়েত রাসেল
04 June, 2023, 08:55 pm
Last modified: 04 June, 2023, 09:03 pm
ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল এন্ড কলেজের লাইব্রেরি থেকে তোলা; ছবি-টিবিএস

পৃথিবীর ইতিহাসে প্রাচীন সভ্যতাগুলোর একটি অ্যাসেরিও সভ্যতা। ৬৬৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এ সাম্রাজ্যের রাজা ছিলেন আশুরবানিপাল। তার সম্পর্কে বলা একটি উক্তির সন্ধান পাওয়া যায়। তাতে লেখা: "Assurbanipal was first of all a warrior, then an administrator, and finally a librarian"। শেষ অংশটি বলার কারণ, এই রাজা তার সাম্রাজ্যে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন একটি গ্রন্থাগার। সেখানে দেশ-বিদেশ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন অগণিত গ্রন্থ। অনেক গবেষক এটিকেই পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম গ্রন্থাগারের স্বীকৃতি দেন। ইতিহাসের কত রাজা-বাদশা হারিয়ে গেছেন কালেরগর্ভে। আশুরবানিপালের নাম এখনো উজ্জ্বল শুধু এই একটি কারণে- তার প্রতিষ্ঠিত লাইব্রেরি!

পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় নালন্দা'য়ও ছিলো তিনটি ভবন বিশিষ্ট সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার। সেই থেকে শুরু করে আজকের এই আধুনিক যুগে এসে গ্রন্থাগারের গুরুত্ব এতটুকুও ম্লান হয় নি। বৃটিশ শাসিত ভারতবর্ষে যে গ্রন্থাগার আন্দোলন শুরু হয়েছিলো এ অঞ্চলে, তার সর্বশেষ সংস্করণ স্কুল-কলেজ ভিত্তিক লাইব্রেরি। ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্কুল ঘুরলে অন্তত তাই মনে হয়। প্রায় সকল স্কুলেই রয়েছে গ্রন্থাগার। ফলে বইপড়ুয়া মানুষের সংখ্যাও দিনদিন বৃদ্ধির কথা ছিলো। কিন্তু নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা বই পাঠে আগ্রহ হারাচ্ছে বলে অভিযোগ করছে সমাজ সচেতন মানুষেরা। কিন্তু স্কুলগুলোতে এত এত গ্রন্থাগার থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা কেন বই বিমুখ হয়ে উঠছে? তাহলে কি ব্যর্থ হয়েছে গ্রন্থাগার কার্যক্রম?

উদয়ন উচ্চ বিদ্যালয় রাজধানীর সেরা স্কুলগুলোর একটি। স্কুলে রয়েছে সুসজ্জিত গ্রন্থাগার। সেখানে দায়িত্বরত রয়েছেন একজন লাইব্রেরিয়ান ও একজন সহকারী লাইব্রেরিয়ান। তাদের সহযোগিতার জন্য আছেন চতুর্থ শ্রেণীর একজন কর্মচারী। গ্রন্থাগারে সারি সারি আলমারিতে সাজানো রয়েছে নানা ধরনের বই। সংখ্যায় তা প্রায় ২ হাজার। সম্প্রতি কেনা হয়েছে ৫০০ নতুন বই। শিশু শ্রেণি থেকে শুরু করে মাধ্যমিক, বয়সভেদে সকল শিক্ষার্থীর জন্যই রয়েছে আলাদা ধরণের গ্রন্থ।

ছাত্রছাত্রীদের বইমুখী করতে নানা উদ্যোগের কথা জানালেন অধ্যক্ষ জহুরা বেগম। 'এটা শুধু আমার সময়ই না, এটা উদয়নেরই ত্রিশ-চল্লিশ বছর বা তারও বেশি সময়ের একটি সংস্কৃতি যে আমরা বই পড়তে উৎসাহিত করি। প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত আমাদের লাইব্রেরিতে বইগুলো সাজানো আছে।'

স্কুলটিতে সপ্তাহে একদিন পরিচালিত হয় 'লাইব্রেরি ক্লাস' নামে একটি বিশেষ ক্লাস, যে সময়টাতে শিক্ষার্থীরা বাধ্যতামূলকভাবে সময় কাটায় স্কুলের গ্রন্থাগারে। বাচ্চাদের জন্য রয়েছে আলাদা কক্ষ। কিন্তু গ্রন্থাগারে গিয়ে খুব বেশি কাউকে বই পড়তে দেখা গেলো না। যে দুজন পড়ছেন, তাদের সামনে পাঠ্যবই। একজন জানালেন, একাডেমিক পড়াশোনার জন্য বাইরের বই আর তেমন পড়া হয় না।

একই চিত্র দেখা যায় ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল এন্ড কলেজে। গ্রন্থাগারের দায়িত্বে আছেন সহকারী শিক্ষক লায়লা তাহমিনা। এখানেও সপ্তাহে একদিন নেয়া হয় 'লাইব্রেরি ক্লাস'। সারিবদ্ধভাবে শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষিকাকে অনুসরণ করে প্রবেশ করেন গ্রন্থাগারে। সেখানে প্রশস্ত কক্ষে বইয়ের আলমারি, তাতে রয়েছে প্রায় ৭ হাজার বই। বাংল-ইংরেজি সাহিত্য, বিজ্ঞান সহ রয়েছে বিষয়ভিত্তিক বই। দেয়ালে সারি করে টাঙানো মনীষীদের ছবি। শুরু হয় 'লাইব্রেরি ক্লাস'। শিক্ষার্থীরা যার যার মতো বই নিয়ে পড়তে থাকেন। এর মধ্যে চলে দুষ্টুমি, খুনসুটি। আপাতদৃষ্টিতে ফলপ্রসূ মনে হলেও কতটুকু অবদান রাখছে এই পদ্ধতি?

'বাচ্চারা নিয়মিত বই পড়ে। ওরা লাইব্রেরিতে যায়, ৪০ মিনিট ওরা লাইব্রেরিতে ব্যয় করে', জানালেন লায়লা তাহমিনা। কিন্তু এখানে শিক্ষার্থীরা বই পড়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই। ফলে আসল উদ্দেশ্য থেকে যায় অধরা।

সরকারি স্কুলগুলোর পরিস্থিতি অবশ্য এরকম নয়। নীলক্ষেত হাইস্কুলের এক শিক্ষার্থী যেমন জানেনই না, তাদের বিদ্যালয়ে গ্রন্থাগার রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মোঃ শরিফুল ইসলাম মোল্লা বললেন স্কুলের গ্রন্থাগারের কথা। স্বীকার করলেন, গ্রন্থাগারে নেই পর্যাপ্ত কার্যক্রম।

'আমাদের লাইব্রেরিয়ান আছেন। তবে বেশিরভাগ সময় তিনি শিক্ষকতার কাজেই ব্যস্ত থাকেন। আর লাইব্রেরিটাও এতটা সমৃদ্ধ বলা যায় না।' শিক্ষার্থীদের বই পড়া নিয়ে তার কণ্ঠে ঝরল হতাশা।

'ছাত্ররা সেভাবে বই পড়ে না। নজরুল শরৎচন্দ্রের লেখা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে কেউ বলতে পারে না। অনেক সময় যে বেসিক নলেজ, বাঙালি হিসেবে বা বাংলা ভাষাভাষী হিসেবে জানা উচিত, সেগুলো তাদের নলেজে থাকে না।'

কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় সব স্কুলেই গ্রন্থাগার রয়েছে। ঢাকার প্রথম বিদ্যালয় কলেজিয়েট স্কুল কিংবা ধানমন্ডির বিসিএসআইআর উচ্চ বিদ্যালয়, সবাই গুরুত্ব দিচ্ছে গ্রন্থাগার কার্যক্রমে। আর এসব স্কুল লাইব্রেরিতে বইয়ের সংখ্যাও অপ্রতুল নয়। তবে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের বই পাঠে আগ্রহী করতে তা কতটুকু ভূমিকা রাখছে, সে প্রশ্ন শিক্ষার্থীরাই তুলেছেন।

সেন্ট গ্রেগরি উচ্চ বিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীর ধারণা, বিদ্যালয় তাদের বই পড়ায় ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে না। যাদের ইচ্ছে, তারা নিজেরাই পড়ে নেয়। একই বক্তব্য শোনা যায় ইস্কাটন গার্ডেন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুরের কণ্ঠে। শিক্ষার্থীরা স্কুল লাইব্রেরি থেকে বই পড়ে কিনা জিজ্ঞস করাতে তিনি বলেন, যাদের উৎসাহ আছে তারা পড়ে, অন্যরা পড়ে না। পাঠাগার নিয়ে কারো নজর থাকে না। স্কুলে আগে লাইব্রেরি ক্লাস হতো, এখন আর হয় না।

শহিদুল ইসলাম নীলক্ষেতে বইয়ের দোকানদার। ১৫ বছর যাবত নতুন-পুরাতন সাহিত্যের বই বিক্রি করেন তিনি। দোকানের নাম 'বই বিলাস'। যখন শুরু করেছিলেন, বয়স ছিলো কম। তার শুরুর দিকে দোকানের মূল ক্রেতা ছিলো স্কুল-কলেজের কিশোর ও তরুণেরা। গল্প-কবিতার নতুন-পুরাতন বইয়ের খোঁজে ভিড় করে আসতো তারা। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হতো উপন্যাস। কিন্তু তার মতে, বর্তমান সময়ে এসে স্কুল কলেজের কিশোর-কিশোরী ক্রেতার সংখ্যা ৫ ভাগও নয়।

'নতুন গ্রাহকেরা নীলক্ষেতে আর আগের মতো আসে না। শুরুর দিকে অবশ্যই ভালো ছিলো। নাইন-টেনের ছেলেপেলেরা আসতো। এসে গল্পের বইটই নিতো, থ্রিলার, গোয়েন্দা, বিভিন্ন ধরণের বই নিতো। এখন এদের টোটাল বই কেনা পাঁচ পার্সেন্টের মতো আছে আরকি', বলছিলেন শহিদুল ইসলাম।

চলতি বছর মে মাসের মাঝামাঝি বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশে মৌলিক বইয়ের সেরা দোকানগুলোর অন্যতম জিনাত বুক স্টোর। অনেকটা নিরূপায় হয়েই দোকানটি উঠিয়ে দিতে হয়েছে কর্ণধার সৈয়দ আবু সালেহ মোহাম্মদ ফয়সালকে। এর পেছনে প্রধানত ভালো পাঠক কমে যাওয়াকেই দায়ী করছেন তিনি।

একসময় শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেট ছিলো ঢাকার শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও চিন্তা-চেতনার অন্যতম কেন্দ্রস্থল। এখানে যেমন আড্ডা দিতেন খ্যাতনামা শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, তেমনই এর প্রাঙ্গণ মুখরিত থাকতো তরুণদের পদচারণায়। এর অলিগলিতে ছিল সমৃদ্ধ সব বই ও প্রকাশনীর দোকান। এখন কালের পরিক্রমায় সেই আজিজ পরিণত হয়েছে কাপড়ের মার্কেটে। কিশোর-তরুণদের আনাগোনা এখনো রয়েছে, তবে তা আর বইয়ের জন্য নয়। ফলে খরচ ওঠাতে না পেরে, জিনাত বুক স্টোরের মত বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো অসংখ্য বইয়ের দোকান। 

তরুণদের বই কেনা নিয়ে হতাশার কথা বলছিলেন সাম্য আহমেদ। আজিজ মার্কেটে টিকে যাওয়া বইয়ের দোকানগুলোর একটি 'জনান্তিক' প্রকাশনীর কর্ণধার তিনি।

'তরুণ ক্রেতাদের সংখ্যাটা আগের তুলনায় কমে গেছে। গত দশ-বারো বছর আগে যেমন ছিলো, সংখ্যাটা অনেক কমে গেছে এবং দিন দিন কমছে। নতুন পাঠক কম তৈরি হচ্ছে', বলেন সাম্য আহমেদ।

'দোকানগুলো হয়তো টিকে যাবে। সংখ্যায় কমবে কিনা জানি না, তবে হয়তো স্ট্রাগল করতে হবে', যোগ করেন তিনি।

বইয়ের ক্রেতা হিসেবে নতুন প্রজন্মের এ অনুপস্থিতি আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। ঢাকার স্কুলগুলো পর্যাপ্ত ভূমিকা রাখতে পারছে না এ সমস্যা সমাধানে। স্কুলগুলো বই পড়া কার্যক্রম হিসেবে বেছে নিয়েছে লাইব্রেরি ক্লাসকে। এটিও হয় না অনেক স্কুলে। কোন বিদ্যালয় থেকেই এর বাইরে কোন কার্যক্রমের কথা জানা যায় নি। ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বইয়ের প্রতি আগ্রহ তৈরিতে স্কুলগুলো রাখতে পারছে না কোন ভূমিকা। বই পড়া কার্যক্রম ক্লাসের গন্ডিতে আবদ্ধ করায় সুখকর একটি কাজ পরিণত হয়েছে ভীতিতে।

কেন বই পাঠে আগ্রহ হারাচ্ছে শিক্ষার্থীরা?

খালেদ বিন খায়ের ও রনক মিয়া উদয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করছিলেন স্কুলের গ্রন্থাগারে। পাশে সারি সারি সাজানো বইয়ের আলমারি। কিন্তু তারা পড়ছিলেন পাঠ্যবই। জিজ্ঞেস করাতে খালেদ বললেন, শুধু সাহিত্যের বই নয়, বাঁধাই করা পাঠ্যবইও নাকি অনেকে পড়ছে না এখন। তাহলে শিখছে কীভাবে? তার উত্তর, অনলাইনের বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে।

'একাডেমিক বইগুলো একসময় পড়তাম, কিন্তু অনলাইনে বিভিন্ন প্লাটফর্ম আছে, এগুলোর জন্য এখন বইটা তেমন পড়া হয় না। অনলাইনে এনিমেশন থাকে, বিষয়গুলো বেশি এক্সপেরিয়েন্স করা যায়। আমার কাছে বইয়ের ভবিষ্যত মনে হয় অনলাইন', জানালেন খালেদ।

খালেদের মত অসংখ্য শিক্ষার্থী এখন ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। আবার এসব প্রযুক্তিই বইবিমুখ করে তুলছে তরুণ প্রজন্মকে।

বিসিএসআইআর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাহিদুর রহমান বিভিন্ন সময়ে চেষ্টা করেছেন পড়ার। কিন্তু ফেসবুক, ইউটিউবের মত প্লাটফর্ম বই পড়ার আকর্ষণ অনেকটাই কমিয়ে দিচ্ছে বলে তার ধারণা। শর্টস ভিডিও, ফেসবুকের রিলস দেখার কারণে মনোযোগ ধরে রাখতেও সমস্যা হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি। তবে কি প্রযুক্তির উৎকর্ষতা কেড়ে নিচ্ছে বই পড়ার অভ্যাস? তিক্ত হলেও এমন মতই পোষণ করেন অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিভিন্ন ধরনের গেমে আসক্তির ফলে তাদের মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে। একই সাথে তারা আগ্রহ হারাচ্ছে বই পাঠে।

তবে প্রযুক্তি নিয়ে এ গতানুগতিক ভাবনাকে সমর্থন করেন না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক। তার মতে, আধুনিক প্রযুক্তি বইবিমুখ করার পাশাপাশি বই পড়ারও সুযোগ করে দিয়েছে। তার মতে, অনেক দুর্লভ বই রয়েছে, যেগুলো আমরা ইন্টারনেটে সহজেই পেয়ে যাই। ফলে তা একটি বাড়তি সুযোগ। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সে সুযোগ নিতে পারছেন না অন্য কারণে- আসক্তি। এর ফলে আগ্রহ বাড়ার বদলে কমে যাচ্ছে।

জ্ঞানচর্চার পাশাপাশি একসময় বই পড়া ছিলো একটি বিনোদন। কিশোর-তরুণেরা বিনোদনের জন্য এখন খেলাধুলা কিংবা বই পড়ার জন্য হাতে থাকা মোবাইল ফোন কিংবা ঘরের কম্পিউটারটির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। হাতের মুঠোয় বিনোদনের অসংখ্য সুযোগ থাকায় স্বাভাবিকভাবেই হ্রাস পেয়েছে বই পড়ার অভ্যাস। একসময় বই পড়া ছিলো নান্দনিকতার অংশ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মাহফুজ মনে করেন, শুধু জ্ঞান লাভের আশা এ প্রজন্ম আর করে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার ঢাকার সবচেয়ে সমৃদ্ধ গ্রন্থাগারের একটি। প্রতিবছর ৮০-৮৫ লাখ টাকার গবেষণাপত্র ও বই কেনা হয় এখানে। প্রায় সমপরিমাণ টাকার অনলাইন রিসোর্স সংগ্রহ করা হয় শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য। কিন্তু জ্ঞান অর্জনের লক্ষ্যে এখানে খুব বেশি কেউ আসেন না। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী পড়তে আসেন চাকরির পড়াশোনা।

'আগে মানুষ জানার জন্য পড়তো। এখন সমাজ সবাইকে প্রতিযোগী বানিয়ে দিয়েছে। তাই সবাই বিসিএস বা চাকরির পড়া পড়ে। নতুন প্রজন্মও সেভাবে তৈরি হচ্ছে। ফলে শিল্প-সাহিত্যের বইয়ের দিকে কারো ঝোঁক নেই আর', যোগ করেন মোহাম্মদ মাহফুজ।

বইয়ের ভবিষ্যত কি তবে ডিজিটাল ডিভাইস?

নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই পাঠে এ আগ্রহ হারানোর পেছনে প্রায় সকলেই আধুনিক প্রযুক্তির হাত দেখেন। বিজ্ঞানের নানা আবিষ্কারের কল্যাণে তরুণ-বৃদ্ধ সকলের হাতেই কোন না কোন প্রযুক্তি। ফলে এ যুগে এসে যতটুকু পড়ার প্রয়োজন হচ্ছে, অন্য শত কাজের মত সেটিও সেরে নিচ্ছে ওই ডিজিটাল ডিভাইসেই। আবার শুধুমাত্র পড়ার উদ্দেশ্যে তৈরি হচ্ছে একাধিক ডিভাইস। এইতো সেদিন, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ই-বুক রিডার কিন্ডলের একটি নতুন সংস্করণ বাজারে এনেছে অ্যামাজন। নাম 'কিন্ডল স্ক্রাইব'। এখন শুধু বই পড়াই নয়, এটি ব্যবহার করে করা যাবে লেখালেখিও।

তাহলে এসব ডিজিটাল ডিভাইসই কি হতে চলেছে বইয়ের ভবিষ্যত?

অধ্যাপক সৈয়দ আজিজুল হক মনে করেন এখন সময় এসেছে আধুনিক প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার।

'আধুনিক প্রযুক্তির সাথে মানিয়ে নিতেই হবে। বড় বড় লাইব্রেরিগুলো অনলাইনে বই পড়ার সুযোগ দিচ্ছে। শুধু তরুণ প্রজন্ম কেন, কোন গবেষক চাইলেই চট করে গুগল করে কোন একটি তথ্য জেনে নিতে পারছেন। অনলাইন নির্ভরশীলতা বাড়ছে। এটি ইতিবাচক হিসেবেই নিতে হবে। নতুনের সাথে পুরনোকে সামঞ্জস্য করেই চলতে হয়।'

অধ্যাপক আজিজুল হকের সাথে একমত পোষণ না করে অনেকে বাঁধাই করা কাগজের বইয়ের গুরুত্ব দেখছেন। তাদের একজন উদয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ জহুরা বেগম। তার মতে, সময়ের চাহিদা আছে (ডিজিটাল মাধ্যমের) কিন্তু মৌলিক কিছু বই আছে যেগুলো শিক্ষার্থীদের হাতে থাকা উচিত।

'ছোট বেলায় আমরা নতুন বইয়ের গন্ধ শুঁকতাম। এই যে একটা ভালোবাসা তৈরি হয়, এটা আলাদা একটা আকর্ষণ।'

কাগজ তৈরিতে প্রতিবছর কেটে ফেলা হয় অগণিত গাছ। তা পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। আধুনিক প্রযুক্তি যদি বইয়ের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে, যেমনটি হয়েছে উন্নত বিশ্বে, তবে তা খুব খারাপ কিছু বয়ে আনবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

ছবিটি উদয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি থেকে তোলা

নতুন প্রজন্মকে বইমুখী করবে কে?

হোক তা কাগজের বই, বা কোন ডিভাইসের স্ক্রিন, বই পড়ার উপযোগিতা যে অতুলনীয়, তা যে কেউ স্বীকার করবে। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা কীভাবে ফিরে আসতে পারে বইয়ের দিকে?

অধ্যাপক আজিজুল হক মনে করেন, শুধু জ্ঞান কথা বলা নয়, শিক্ষার্থীদের দেখাতে হবে বইয়ের বিনোদনের অংশটুকুও। বই পড়ার আগ্রহ তৈরি করতে প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে শিক্ষকদের। শিক্ষকরাই পারেন প্রকৃত আগ্রহ সৃষ্টি করতে।

বই পড়া একটি অভ্যাসের বিষয়। কোভিডের সময় সে অভ্যাস অনেকের পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। আগে যে পরিমাণ শিক্ষার্থী স্কুল লাইব্রেরি থেকে বই ইস্যু করে বাড়ি নিয়ে যেত, তার সংখ্যা কমেছে। আবার সে অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে শিক্ষার্থীরা আগ্রহী হয়ে উঠবে বলে মনে করেন অধ্যক্ষ জহুরা বেগম। তবে সেক্ষেত্রে তিনি অভিভাবকদের ভূমিকা কম দেখছেন না।

'প্রথমে সামাজিকভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। রাষ্ট্র কতটা করবে? অভিভাবকদের নিজেদের সন্তানের জন্যই ভূমিকা রাখতে হবে। সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা যদি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার কথা ভাবেন যেখানে বাচ্চারা এসে পড়াশোনা করবে, তবেই সমাজটা পরিবর্তিত হবে।'

Related Topics

টপ নিউজ

লাইব্রেরি / অনলাইন লাইব্রেরি / ভবিষ্যতের লাইব্রেরি / বই পড়া / বই পড়ার অভ্যাস

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • সিনেমার একটি দৃশ্যে শাহরুখ খান। ছবি: সংগৃহীত
    বক্স অফিসে ব্যর্থ; চিরতরে অভিনয় ছাড়েন নায়িকা; ১৮ পুরস্কার জিতে শাহরুখের এ সিনেমা এখন কাল্ট ক্লাসিক
  • বছরে সর্বোচ্চ তিনটি উৎসাহ বোনাস পাবেন রাষ্ট্রায়ত্ত ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা
    বছরে সর্বোচ্চ তিনটি উৎসাহ বোনাস পাবেন রাষ্ট্রায়ত্ত ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা
  • অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন। ছবি: সংগৃহীত
    পরিচালক হওয়ার পর দেখলাম, আমি যেন ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার: ঢাবির বোস সেন্টার নিয়ে অধ্যাপক মামুন
  • সেলিম আল দীন। ছবি: সংগৃহীত
    নাট্যকার সেলিম আল দীনের পদক, পাণ্ডুলিপি ফেরত দিতে নাসির উদ্দিন ইউসুফসহ ৪ জনকে আইনি নোটিশ
  • যুবরাজ ছবিতে: সোহেল রানা ও রোজিনা। ছবি: সংগৃহীত
    রোজিনার বাড়ির লজিং মাস্টার, ‘রসের বাইদানি’ থেকে ‘তাণ্ডব’, ৩০০ ছবির পরিবেশক মাস্টার ভাই!

Related News

  • ছোট হচ্ছে বেস্টসেলার বইয়ের বাক্য; কীভাবে বিশ্বব্যাপী কমে যাচ্ছে পড়ার অভ্যাস?
  • 'অশনিসংকেত': যুক্তরাষ্ট্রে শখের বশে বই পড়ার অভ্যাস কমেছে ৪০ শতাংশ
  • আলিয়া মাদ্রাসার গ্রন্থাগার, বকশিবাজারে লুকিয়ে থাকা এক রত্নভান্ডার!
  • দাদার নেওয়া লাইব্রেরির বই ৯৯ বছর পর ফেরত দিলেন নিউ জার্সির এক নারী
  • অনির্বাণ লাইব্রেরি: যেভাবে আলো দেখাচ্ছে দক্ষিণের প্রত্যন্ত গ্রামকে

Most Read

1
সিনেমার একটি দৃশ্যে শাহরুখ খান। ছবি: সংগৃহীত
বিনোদন

বক্স অফিসে ব্যর্থ; চিরতরে অভিনয় ছাড়েন নায়িকা; ১৮ পুরস্কার জিতে শাহরুখের এ সিনেমা এখন কাল্ট ক্লাসিক

2
বছরে সর্বোচ্চ তিনটি উৎসাহ বোনাস পাবেন রাষ্ট্রায়ত্ত ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা
অর্থনীতি

বছরে সর্বোচ্চ তিনটি উৎসাহ বোনাস পাবেন রাষ্ট্রায়ত্ত ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা

3
অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন। ছবি: সংগৃহীত
মতামত

পরিচালক হওয়ার পর দেখলাম, আমি যেন ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার: ঢাবির বোস সেন্টার নিয়ে অধ্যাপক মামুন

4
সেলিম আল দীন। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ

নাট্যকার সেলিম আল দীনের পদক, পাণ্ডুলিপি ফেরত দিতে নাসির উদ্দিন ইউসুফসহ ৪ জনকে আইনি নোটিশ

5
যুবরাজ ছবিতে: সোহেল রানা ও রোজিনা। ছবি: সংগৃহীত
ফিচার

রোজিনার বাড়ির লজিং মাস্টার, ‘রসের বাইদানি’ থেকে ‘তাণ্ডব’, ৩০০ ছবির পরিবেশক মাস্টার ভাই!

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net