Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Saturday
July 19, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SATURDAY, JULY 19, 2025
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বালির তৈরি ব্যাটারি!  

ফিচার

টিবিএস ডেস্ক
06 November, 2022, 05:20 pm
Last modified: 06 November, 2022, 05:24 pm

Related News

  • এই গ্রীষ্মে বাড়তে চলেছে পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি; কেন?
  • বাজেট ২০২৫-২৬: জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ
  • বিছারা ‘দখল করে নিচ্ছে’ ব্রাজিলের শহরগুলো, হুল ফোটানো বেড়েছে ২৫০% পর্যন্ত
  • প্রজাপতিবিহীন পৃথিবী: যেভাবে হারিয়ে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রজাতি
  • ২০২৪ সালে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছাবে

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বালির তৈরি ব্যাটারি!  

পূর্ণ অবস্থায় ব্যাটারিটি আট মেগাওয়াট তাপশক্তি সঞ্চয় করে রাখতে পারে। চাহিদা বাড়লে এটি তাপ বিনিময়কারী পাইপের মাধ্যমে ২০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ নিঃসরণ করতে পারে- যা পাওয়ার গ্রিডে উৎপাদিত বিদ্যুতের পাশাপাশি কানকানপার মতোন শহরে ১০০টি বাড়িতে এবং একটি পাবলিক সুইমিং পুলে তাপ ও উষ্ণ পানি সরবরাহের পক্ষে যথেষ্ট। এছাড়া বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকলে, ব্যাটারিটি রাতারাতি পূর্ণ চার্জ নিতে পারে।
টিবিএস ডেস্ক
06 November, 2022, 05:20 pm
Last modified: 06 November, 2022, 05:24 pm
ছবি-বিবিসি

বৈশ্বিক উষ্ণতা কমাতে ও টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নের একইসাথে 'সহজ ও কঠিন' সমাধান হলো- গ্রিন এনার্জি বা নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার। কঠিন সমাধান বলা হচ্ছে এ কারণেই যে, গ্রিন এনার্জি উৎপাদন, বন্টন তথা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে রয়েছে- অনেক বড় বড় চ্যালেঞ্জ। তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো- বছরজুড়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা। বিভিন্ন ঋতুতে বিচিত্র আবহাওয়া থাকায় একই নবায়নযোগ্য উৎস থেকে সারাবছর শক্তি উৎপাদন করা বড় একটি সমস্যা।

তবে শোনা যাচ্ছে আশার বাণী। ফিনল্যান্ডের চার তরুণ প্রকৌশলী বিশ্বাস করেন, তারা গ্রিন এনার্জির এই অন্যতম কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সম্ভাব্য সমাধান খুঁজে পেয়েছেন। বলা হচ্ছে, ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকি থেকে ২৭০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ভাতাজানকোস্কি পাওয়ার প্ল্যান্ট-এ আবিষ্কৃত এ সমাধান উল্লেখযোগ্যভাবে সরল, প্রতুল এবং সুলভ। আশা জাগানিয়া এই সমাধানটি হলো 'বালি'। বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য। 

ভাতাজানকোস্কি পাওয়ার প্ল্যান্ট-এ রয়েছে বিশ্বের প্রথম বাণিজ্যিক স্কেলের বালির ব্যাটারি (স্যান্ড ব্যাটারি)। একটি সাত মিটার (২৩ ফুট) উঁচু স্টিলের কন্টেইনারে ঘেরা ব্যাটারিটি ১০০ টন লো-গ্রেড বিল্ডার্স বালি, দুটি ডিস্ট্রিক্ট হিটিং পাইপ এবং একটি পাখা দিয়ে গঠিত। বায়ু ঘূর্ণযন্ত্র (টারবাইন) ও সৌর প্যানেলের মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে বালি ৬০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপ দিলে তা ব্যাটারিতে রূপান্তরিত হয়।

বায়ু ঘূর্ণযন্ত্র (টারবাইন) ও সৌর প্যানেল স্থাপন করেছিলেন পাওয়ার প্ল্যান্টটির মালিক ভাতাজানকোস্কি। এই নবায়নযোগ্য শক্তি একটি প্রতিরোধী হিটারকে (রেজিস্ট্যান্স হিটার) চালিত করে, যা বালির ভেতরকার বায়ুকে উত্তপ্ত করে। তাপ বিনিময়কারী পাইপের মাধ্যমে ব্যাটারির অভ্যন্তরীণ উষ্ণ বায়ুকে বালির চারপাশে একটি পাখা দ্বারা সঞ্চালন করা হয়।

বালির চারদিকে রয়েছে পুরু অন্তরণ, যা ব্যাটারির তাপমাত্রাকে ৬০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে (১,১২ ফারেনহাইট) রাখে। এমনকি বাইরে ঠান্ডা বা তুষারপাত হলেই এই উষ্ণতা বজায় রাখে অন্তরণটি।

অনলাইনে ব্যাটারিটির কর্মক্ষমতা পর্যবেক্ষণ করেন পোলার নাইট এনার্জির প্রধান বিজ্ঞানী ভিলে কিভিওজা। তিনি বলেন, 'আমরা কোনো তাপ হারাতে চাই না। কানকানপাতে (যেখানে পাওয়ার প্ল্যান্টটি অবস্থিত) শীতকালে গড় তাপমাত্রা থাকে শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের (৩২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) নিচে।'

পূর্ণ অবস্থায় ব্যাটারিটি আট মেগাওয়াট তাপশক্তি সঞ্চয় করে রাখতে পারে। চাহিদা বাড়লে, এটি তাপ বিনিময়কারী পাইপের মাধ্যমে ২০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ নিঃসরণ করতে পারে, যা পাওয়ার গ্রিডে উৎপাদিত বিদ্যুতের পাশাপাশি কানকানপার মতো শহরে ১০০টি বাড়িতে এবং একটি পাবলিক সুইমিং পুলে তাপ ও উষ্ণ পানি সরবরাহের পক্ষে যথেষ্ট। এছাড়া বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকলে ব্যাটারিটি রাতারাতি পূর্ণ চার্জ নিতে পারে।

কিভিওজা বলেন, 'এটি লো-মেইন্টেনেন্স সিস্টেম। নির্মাণকাজে ব্যবহৃত উঁচু মানের বালির বিপুল পরিমাণে ব্যবহার বিশ্বকে সংকটের দিকে ধাবিত করে। তাই এর পরিবর্তে কোম্পানি সুলভ এবং নিম্নমানের বালি ব্যবহার করে যা সাধারণত নির্মাণকারীরা বাতিল করে দেয়। ব্যবহৃত পাইপ এবং বালি অপচয়ের ঝামেলা নেই। পাখাটাই এর ব্যাটারিটির একমাত্র চলমান যন্ত্রাংশ এবং প্রয়োজনমতো এর প্রতিস্থাপন বেশ সহজ।'

দীর্ঘসময় ধরে তাপ ধরে রাখার একটি অত্যন্ত কার্যকর মাধ্যম হলো বালি; যা এক সময়ে কয়েক মাসের জন্য শক্তি সঞ্চয় করে রাখতে পারে। তবে এটিই বালির একমাত্র সুবিধা নয়।

কিভিওজা জানান, 'বালির জীবনকাল দীর্ঘ হয়; যথেচ্ছ বার উষ্ণ ও শীতল করা যায়। ঘন হয়ে আসলে বালি অল্প জায়গা দখল করে। ফলে আমরা তখন আরও বালি যোগ করতে পারি।'

স্যান্ড ব্যাটারি উদ্ভাবনের গল্প

এই স্যান্ড ব্যাটারি উদ্ভাবনের কৃতিত্ব চার তরুণ ফিনিশীয় প্রকৌশলীর; টমি এরোনেন, মার্কু ইলোনেন, লিসা নাসকালি এবং ভিলে কিভিওজা। তাদের গল্পের শুরু সেই শৈশবে। ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি বিশেষ ঝোঁক ছিল তাদের। কৈশোরে এই চারজন বিজ্ঞানী স্প্রিন্টার, সাইক্লিস্ট, ট্রিপল জাম্পার এবং চাকতি নিক্ষেপকারী হিসেবে ফিনল্যান্ডের দক্ষিণের শহর টাম্পেরের একই ক্লাবের সদস্য ছিলেন।

বিশে পদার্পণের পর তাদের ক্রীড়ার মনোযোগ গেল বিজ্ঞানজগতে। একসময় বৈশ্বিক উষ্ণতার দরুণ সৃষ্ট দেশের তুলনামূলক সংক্ষিপ্ত ও উষ্ণতর শীতকাল তাদেরকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করার অনুপ্রেরণা জোগায়।

টমি এরোনেন বলেন, 'ছোটবেলায় আমরা নাসিয়ার্ভি লেকের বরফে স্কেটিং করতাম। বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে বরফ গলে যাওয়ায় স্কেটিং এর সময় সংক্ষিপ্ত হয়ে আসছে। জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের চোখের সামনেই ঘটছে।'

২০১৬ সালে এরোনেন প্রকৌশলে স্নাতকোত্তর অধ্যয়নরত অবস্থায়- তার গবেষণার অংশ হিসেবে নবায়নযোগ্য শক্তির জলভিত্তিক স্টোরেজ সিস্টেমের অনুসন্ধান করছিলেন। একদিন পাথর এবং বালির তৈরি গতানুগতিক ফিনিশীয় ফায়ারপ্লেস নিয়ে একটি প্রবন্ধ পেয়ে পান। এতেই যেন তিনি রত্ন-সমতূল্য উদ্ভাবনী আইডিয়া পেয়ে যান।

সে মুহুর্তটির বর্ণনা করে এরোনেন বলেন, 'এটি আমাকে ভাবিয়ে তুলেছিল যে সৌর ও বায়ু শক্তি সঞ্চয়ে পানির চেয়ে কঠিন পদার্থ বেশি উপযুক্ত হতে পারে।'

এরপর মার্কু ইলোনেনের সাথে মিলে তিনি স্যান্ড ব্যাটারির একটি প্রোটোটাইপ তৈরির চেষ্টা শুরু করেন। তৈরি হয়ে গেলে, তারা টাম্পেরের কাছে থাকা এরোনেনের দাদার বাগানে পাইলট ব্যাটারিটির পরীক্ষা করেন। এতে সফল হলে, তারা তাদের ক্লাবের সেই বাকি দুই শৈশবকালের বন্ধুদের সাথে নিয়ে পোলার নাইট এনার্জি নামে এক কোম্পানি গঠন করেন।

চলতি বছরের জুলাই মাসে তারা কানকানপার ভাতাজানকোস্কি পাওয়ার প্ল্যান্টে প্রথম বাণিজ্যিক স্যান্ড ব্যাটারি স্থাপন করেন।

গ্রিন এনার্জি সংরক্ষণ

বিশ্বজুড়ে তাদের এই উদ্ভাবন আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এরোনেন বলেন, 'আমার ফোনে সবসময় কল আসে এবং আমার এখনো বহু অপঠিত মেইল আছে।' 

নতুন শক্তি সঞ্চয় (এনার্জি স্টোরেজ) সিস্টেমের একটি ছোট বাণিজ্যিক প্রয়োগ খুব একটা আলোড়িত বিষয় না হলেও, অপার সম্ভাবনাময় স্যান্ড ব্যাটারি বেশ বড়সরভাবেই মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। বলা হচ্ছে এই ব্যাটারি অন্যান্য নবায়নযোগ্য শক্তিকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রাখে।

নর্ডিক দেশগুলোতে শীতের সময় প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পড়ে এবং গ্রীষ্মে দীর্ঘ সময় ধরে  সূর্যালোক থাকে। এর ফলে বাড়িঘর উষ্ণ রাখাসহ অন্যান্য কাজে উভয় ঋতুতে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। কিন্তু বছরে দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যের দেখা না মেলার কারণে সৌর ও বায়ুশক্তির মাধ্যমে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা অসম্ভব।

ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) নবায়নযোগ্য শক্তিকেন্দ্র বাড়াতে আহ্বান করছে ফিনল্যান্ড। সেপ্টেম্বরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী সানা মেরিন বলেছেন, 'এনার্জি সংকট থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হলো নবায়নযোগ্য এবং কার্বনমুক্ত শক্তি উৎপাদনে প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করা।' 
স্যান্ড ব্যাটারি ঠিক এখানেই সমাধান হিসেবে কাজ করবে বলে আশা রাখেন চার তরুণ উদ্ভাবক।

ফিনল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অভ ওউলু-এর পানি, শক্তি এবং পরিবেশগত প্রকৌশল গবেষণা ইউনিটের ভাইস-হেড ইভা পংগ্রেস উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, "এই উদ্ভাবন নিয়ে প্রথম যখন শুনি আমার মনে হয়েহিল 'কেন আমি এটি নিয়ে ভাবিনি!' এত সরল, নতুন এবং উদ্ভাবনী একটি আইডিয়া।"

"এটি কি আমাদের গ্রিন এনার্জির অবিচ্ছিন্ন সরবরাহের সমাধান হতে পারে? আমার মনে হয় না এখানে কেবল একটি সমাধান রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি স্যান্ড ব্যাটারি পুরো সমাধান নয়, বরং সমাধানের একটি অংশ", যোগ করেন তিনি।

কিন্তু কর্মক্ষমতার বিচারে এই স্যান্ড ব্যাটারি কেমন? প্রচলিত নানা ব্যাটারি যেমন এর বৈদ্যুতিক পরিপূরক লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির তুলনায় কি এটি টেকসই?

ল্যাপটপ, মুঠোফোন কিংবা বৈদ্যুতিক গাড়িতে আমরা লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার করি। এই ব্যাটারির একটি বড় সমস্যা হলো ব্যবহার করতে তো হয় বটে, না করলেও এগুলোর অবচয় হয়। অন্যদিকে স্যান্ড ব্যাটারির কোনো রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া না থাকায় এভাবে তাদের অবচয় হয় না।

যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম সেন্টার ফর এনার্জি স্টোরেজ-এর পরিচালক ইউলং ডিং বলেন, 'দাহ্যতার কারণে লিথিয়াম ব্যাটারি বড় স্কেলে শক্তি সঞ্চয়ের জন্য উপযুক্ত নয়।'

শুধু তা-ই নয়, লিথিয়াম ব্যাটারি পরিবেশের ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলে। ইভা পংগ্রেস বলেন, "পরিবেশের ওপর বালির চেয়ে লিথিয়ামের প্রভাবটা বেশি।নিষ্কাশনের ওপর নির্ভর করে প্রতি টন পরিশোধিত লিথিয়াম উৎপাদনের জন্য প্রায় তিন থেকে নয় টন কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়।"

সবকিছু মিলিয়ে অন্য যেকোনো ব্যাটারির চেয়ে স্যান্ড ব্যাটারি উত্তম।

তবে পোলার নাইট এনার্জি টিমের সামনে কিছু বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য তারা কি প্রয়োজনীয় প্রাযুক্তিক উন্নয়ন সাধন করতে পারবে? অথবা প্রাযুক্তিক ব্যবহারকে কাজে লাগিয়ে তারা কি ব্যাপক হারে অর্থাৎ পর্যাপ্ত পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে?

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন এই প্রজেক্টটির অবশ্যই কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অভ শেফিল্ড-এর ইলেক্ট্রনিক অ্যান্ড ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড্যান গ্ল্যাডউইন বলেন, "গতানুগতিক রাসায়নিক ব্যাটারির চেয়ে একটি স্যান্ড ব্যাটারি পাঁচ থেকে দশগুণ কম এনার্জি সঞ্চয় করে রাখে।"

এই সীমাবদ্ধতা স্বীকার করলেও পোলার নাইট এনার্জি টিমের দাবি সমাধান হিসেবে স্যান্ড ব্যাটারি অনেক বেশি সাশ্রয়ী। তাদের হিসাব অনুযায়ী, লিথিয়াম ব্যাটারির চেয়ে তাদের তৈরি একই পরিমাণ শক্তি সঞ্চয় করতে সক্ষম স্যান্ড ব্যাটারি ১০ গুণ সুলভ। স্যান্ড ব্যাটারি ব্যবহার করে আট মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে খরচ হয় প্রায় দুই লাখ মার্কিন ডলার। অন্যদিকে সমপরিমাণ বিদ্যুৎ সংরক্ষণে সক্ষম এমন লিথিয়াম ব্যাটারি ব্যবহার করলে খরচ হয় অন্তত ১৬ লাখ মার্কিন ডলার।

ঠাণ্ডা জলবায়ুর দেশের বাড়িঘর উষ্ণ রাখতে স্যান্ড ব্যাটারি উত্তম বলে মনে করেন ড্যান গ্ল্যাডউইন। কিন্তু বিদ্যুৎ গ্রিডে পাওয়ার ফেরত পাঠাতে (বাইডিরেকশনাল চার্জিং) ব্যবহার করলে এ ব্যাটারির কার্যক্ষমতা কমে যায়।

তিনি সংযোজন করেন, "স্যান্ড ব্যাটারিকে আরও ব্যাপকভাবে ব্যবহারযোগ্য করতে হলে তাদের উচিত হবে এমন একটি উপায় উদ্ভাবন করা যাতে করে ব্যাটারির তাপ ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ কার্যকারিতায় বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করা যায়। তবেই এই ব্যাটারি একটি 'গেইম চেঞ্জার' হবে।"

এরোনেন বলেন, "এখন যে প্রযুক্তি সহজলভ্য আছে তা দিয়ে তাপশক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরের প্রক্রিয়ার কার্যকারিতা এখন মাত্র ৩০ শতাংশ।"

তবে তার মতে এটি বড় কোনো সমস্যা নয়। তিনি জানান, "ফিনল্যান্ডের মতো ঠাণ্ডা জলবায়ুর দেশে সর্বদা তাপ সরবরাহের চাহিদা আছে এমন ডিস্ট্রিক্ট হিটিং নেটওয়ার্কগুলোতে রূপান্তরিত করার পরে বাকি তাপের ৭০ শতাংশ আমরা খালাস করি।"

বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যাটারির কার্যক্ষমতা বাড়াতে পরবর্তী ধাপ হলো একটি ঘূর্ণযন্ত্র (টারবাইন) যুক্ত করা যাতে করে গ্রিডে তাপ ফেরত পাঠানো যায়।

"কয়েক বছরের মধ্যে কেবল এটি করার জন্যই আমাদের গোটা একটি ওয়ার্কিং সিস্টেম থাকবে", দাবি এরোনেনের।

দ্বিতীয় স্যান্ড ব্যাটারি নির্মাণের জন্য ফিনল্যান্ডের আরেক ডিস্ট্রিক্ট হিটিং কোম্পানির সাথে পোলার নাইট এনার্জি টিমের চুক্তি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এ ব্যাপারে এরোনেন জানান, "এই সিস্টেমটি উল্লেখযোগ্যভাবে বড়। এর হিটিং পাওয়ার হবে দুই মেগাওয়াট এবং সংরক্ষণ ক্ষমতা (স্টোরেজ ক্যাপাসিটি) ৫০০ মেগাওয়াট যা কানকানপায়ের (তাদের প্রথম স্যান্ড ব্যাটারি) ব্যাটারিটির চেয়ে ১০ গুণ বড়।"

পংগ্রেস বলে, "বর্তমানে স্যান্ড ব্যাটারিটি একটি নর্ডিক সমাধান। আমাদের ফিনল্যান্ডের মতো দেশে যেখানে শীতকালে তীব্র ঠাণ্ডা পড়ে এবং বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট) নিচে থাকার কারণে সেপ্টেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত হিটিং সিস্টেমের প্রয়োজন, এই ব্যাটারি খুবই কার্যকর। তাছাড়া এদেশের মোট সাড়ে পঞ্চাশ লাখ জনসংখ্যার প্রত্যেকেই ডিস্ট্রিক্ট হিটিং নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত।"

তাত্ত্বিকভাবে ডিস্ট্রিক্ট হিটিং অবকাঠামো আছে বিশ্বের এমন যেকোনো জায়গায় (যেমন নিউইয়র্ক, স্যান ফ্রান্সিসকো, কোপেনহেগেন) এনার্জি সংরক্ষণের এই সমাধানের প্রতিলিপি স্থাপন করা যাবে।

পোলার নাইট এনার্জি কোম্পানির প্রজেক্ট ম্যানেজার লিসা নাসকালি বলেন, 'ঘরবাড়ি উষ্ণ রাখার বাইরেও এ ব্যাটারির অনেক সম্ভাবনা আছে। কার্যক্ষমতা বাড়ানো হলে এটি সব ধরণের শিল্পজাত প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা যাবে। উদাহরণস্বরূপ, উচ্চ তাপ প্রয়োজন এমন শিল্প যেমন, বেকারি, লন্ড্রি এবং স্টিলের কারখানা।'

এরোনেন জানান, ২০২৩ নাগাদ একটি সত্যিকারের বৈশ্বিক কোম্পানিতে রূপান্তরিত হওয়ার লক্ষ্য পোলার নাইট এনার্জির যা সমগ্র বিশ্বজুড়ে স্যান্ড ব্যাটারি নির্মাণ করবে। ২০২৫ সাল নাগাদ বায়ুশক্তি ফিনল্যান্ডের বিদ্যুতের চাহিদার ২৫ শতাংশ পূরণ করবে। সমুদ্রতীরবর্তী বায়ুশক্তি এটি অর্জনে সাহায্য করবে।

"তবে আমাদের এখনো অনেক কাজ বাকি। উৎপাদনের ওঠানামার ভারসাম্য ধরে রাখতে প্রয়োজন বিশাল সংরক্ষণ সক্ষমতা বা স্টোরেজ ক্যাপাসিটি", বলেন তিনি।

আন্তর্জাতিক ব্যাপ্তি লাভের জন্য বালির বিকল্প খুঁজছে পোলার নাইট এনার্জি। বিশ্বের যে অঞ্চলে বালির স্বল্পতা রয়েছে সেখানে বিকল্প হিসেবে অন্যান্য কণিকাকার ও অদাহ্য উপাদানের কথা ভাবছে তারা।

এরোনেন জানান, "আমরা স্থানীয়ভাবে পাওয়া যায় এমন উপযুক্ত উপাদান খুঁজছি। যেমন, আমরা শিল্পকারখানার প্রক্রিয়ার উপজাত দ্রব্য ব্যবহার করা যায় কি না তা পরীক্ষা করে দেখতে পারি।"

তবে কোম্পানিটির আন্তর্জাতিকভাবে প্রসার লাভ করার ক্ষেত্রে এসবের কোনোটাই বড় সমস্যা নয়। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো, অনেক কোম্পানি এবং পৌরপ্রতিষ্ঠান নতুন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করতে অনাগ্রহী।

লিসা নাসকালি বলেন, "ফিনল্যান্ডে ডিস্ট্রিক্ট হিটিং কোম্পানিগুলোর বিদ্যুৎ সরবরাহের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এমনকি এই দায়িত্ব পূরণে ব্যর্থ হলে তাদের শাস্তিরও ব্যবস্থা রয়েছে। তাই একটি নতুন প্রযুক্তিতে বড়সড় বিনিয়োগ অনুমোদন করার আগে তারা সতর্কতা অবলম্বন করে।"

ফিনিশীয় এনার্জি কোম্পানি ভাতাজানকস্কি এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। লিসার মতোই ভাতাজানকস্কির ব্যবস্থাপনা পরিচালক পেক্কা প্যাসি বিশ্বাস করেন যে, শিল্প খাতে ব্যবহারে স্যান্ড ব্যাটারির অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, "আমরা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার উপায় বের করতে চাই। আমরা এমন প্রযুক্তির খোঁজ করছিলাম যেটির মাধ্যমে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার না করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। পরে পোলার নাইট এনার্জির স্যান্ড ব্যাটারির কথা জানলাম যা সম্ভাবনাময় একটি প্রযুক্তি।"

তিনি আরও বলেন, "কিছু শিল্পে অনেক বেশি উষ্ণ বায়ুর প্রয়োজন হয়। যেমন কোনো কিছু শুকানোর ক্ষেত্রে ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন হতে পারে। আমরা এখন কানকানপায়ের শিল্প কোম্পানিগুলোর সাথে, যাদের তাপ উৎপাদনে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়, কাজ করার চেষ্টা করছি। রাতারাতি চার্জ গ্রহণে সক্ষম এমন স্যান্ড ব্যাটারি তাদের কাজে নমনীয়তা আনবে এবং সাথে দাম ওঠানামা থেকে রক্ষা করবে।" 

অতিরিক্ত তাপমাত্রা, খরা এবং বিশ্বকে গ্রাস করা দাবানলের কথা বিবেচনা করে পোলার নাইট এনার্জির চার তরুণ প্রকৌশলী মনে করেন, আমাদের নতুন প্রযুক্তিতে পরিবর্তন করার মতো বিলাসিতার আর সময় নেই।

বৈশ্বিক উষ্ণতার এমন কঠিন সময়ে তাদের কাজ করার অনুপ্রেরণা নিয়ে জানান উদ্যমী এই বিজ্ঞানীরা।

কিভিওজা বলেন, "জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় আমাদের এখনই সাহসী পদক্ষেপ নিতে হবে। বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলী হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমাদের ওপর অনেক চাপ রয়েছে। এই চাপকে আমি অনুপ্রেরণা হিসেবে বিবেচনা করি, কিশোরকালে চাকতি নিক্ষেপ খেলায় ঠিক যেমনটি করেছিলাম। পরবর্তী নিক্ষেপের জন্য যখন মাঠে নামবেন তখন চাপের মাঝে নিশ্চল হয়ে থাকলে চলবে না। এখন আমার কাজেও ঠিক এই দৃষ্টিভঙ্গিটাই কাজে লাগাই।"

ক্রীড়াপ্রেমী এরোনেন বলেন, "একটি কোম্পানি শুরু করা, খেলায় প্রতিযোগিতা করার মতোই; আপনি অবশ্যই জিততে চাইবেন।"     
 

Related Topics

টপ নিউজ

জলবায়ু পরিবর্তন / বৈশ্বিক উষ্ণতা / বালির ব্যাটারি

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ক্লিক, অপেক্ষা, আবার ক্লিক: প্রতিশ্রুত স্বস্তি দিতে হিমশিম খাচ্ছে ডিজিটাল ভূমি সেবা
  • যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণকারীদের জন্য ২৫০ ডলারের নতুন ‘ভিসা ইন্টেগ্রিটি ফি’ চালু, নেই মওকুফের সুযোগ
  • গোপালগঞ্জে সহিংসতায় নিহতরা কারা ছিলেন?
  • বাংলাদেশে চালু হচ্ছে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের মিশন, চুক্তি সই
  • ৫০ বছর আগের ভীতিকর স্মৃতি: ভারত সরকার ৮০ লাখ পুরুষকে জোরপূর্বক বন্ধ্যাকরণ করায়
  • ‘তারা হয় পরকীয়া করছেন নাহলে লাজুক?’: কোল্ডপ্লে-র কনসার্টে ‘সহকর্মীকে’ আলিঙ্গনের ভিডিও ভাইরাল, ছুটিতে সেই সিইও

Related News

  • এই গ্রীষ্মে বাড়তে চলেছে পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি; কেন?
  • বাজেট ২০২৫-২৬: জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ
  • বিছারা ‘দখল করে নিচ্ছে’ ব্রাজিলের শহরগুলো, হুল ফোটানো বেড়েছে ২৫০% পর্যন্ত
  • প্রজাপতিবিহীন পৃথিবী: যেভাবে হারিয়ে যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রজাতি
  • ২০২৪ সালে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছাবে

Most Read

1
বাংলাদেশ

ক্লিক, অপেক্ষা, আবার ক্লিক: প্রতিশ্রুত স্বস্তি দিতে হিমশিম খাচ্ছে ডিজিটাল ভূমি সেবা

2
আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণকারীদের জন্য ২৫০ ডলারের নতুন ‘ভিসা ইন্টেগ্রিটি ফি’ চালু, নেই মওকুফের সুযোগ

3
বাংলাদেশ

গোপালগঞ্জে সহিংসতায় নিহতরা কারা ছিলেন?

4
বাংলাদেশ

বাংলাদেশে চালু হচ্ছে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের মিশন, চুক্তি সই

5
আন্তর্জাতিক

৫০ বছর আগের ভীতিকর স্মৃতি: ভারত সরকার ৮০ লাখ পুরুষকে জোরপূর্বক বন্ধ্যাকরণ করায়

6
আন্তর্জাতিক

‘তারা হয় পরকীয়া করছেন নাহলে লাজুক?’: কোল্ডপ্লে-র কনসার্টে ‘সহকর্মীকে’ আলিঙ্গনের ভিডিও ভাইরাল, ছুটিতে সেই সিইও

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net