Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Saturday
June 14, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SATURDAY, JUNE 14, 2025
মাটি, কাগজ, কাপড়, লোহা, রঙ আর ঢঙের এক বিরাট মেলা বসেছিল!

ফিচার

সালেহ শফিক
12 September, 2022, 06:40 pm
Last modified: 12 September, 2022, 07:16 pm

Related News

  • ‘নিরাপত্তাঝুঁকিতে’ টাঙ্গাইলে ‘তাণ্ডব’ সিনেমার প্রদর্শনী বন্ধ
  • যে কারণে ভ্যান গখ এক পোস্টম্যান ও তার পরিবারের ২৬টি প্রতিকৃতি এঁকেছিলেন
  • আর্ট কিউরেটর: শিল্পের যত্ন নেন, শিল্পীকে হারিয়ে যেতে দেন না
  • বিখ্যাত ভারতীয় চিত্রশিল্পী এমএফ হুসেনের ‘বিতর্কিত’ ২ চিত্রকর্ম জব্দের নির্দেশ আদালতের
  • নিউইয়র্কে কাল্পনিক বইয়ের ব্যতিক্রমী প্রদর্শনী: বাস্তবে অস্তিত্ব নেই, তবে যদি সত্যিকারে থাকত!

মাটি, কাগজ, কাপড়, লোহা, রঙ আর ঢঙের এক বিরাট মেলা বসেছিল!

করোনাকালে বাবা কাজ হারালেন। দীর্ঘকাল ক্লাস, পরীক্ষা সব বন্ধ। বন্ধু-স্বজনের সঙ্গে দেখা নেই। কোনো কাজ এগুচ্ছে না। মনে হচ্ছে কোনো এক মহাশক্তি পিছু টেনে ধরেছে। কোনো এক ভয়াল অন্ধকার অতল কোনো গহ্বরে ফেলে দিতে চাইছে আমাকে। এ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় খুজতে গিয়েই ভাস্কর্যটির ভাবনা এলো মনে...
সালেহ শফিক
12 September, 2022, 06:40 pm
Last modified: 12 September, 2022, 07:16 pm
ছবি: কিউরেটর রাশেদ সুখনের ফেসবুক পেইজ থেকে

তিনশ ছাপ্পান্ন জন শিল্পীর ৪২২টি শিল্পকর্ম নিয়ে বিশাল আয়োজন ২৩তম নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী-২০২২। শিল্পের এ বিশাল যজ্ঞ চলেছেও এক মাসের বেশি। সারা দেশের মূলত শিক্ষার্থী শিল্পীরা এতে অংশ নিয়েছে। বয়স তাদের ত্রিশের আশপাশে। নতুন নতুন ভাবনা সৃষ্টির চেষ্টায় তারা সদাব্যস্ত।  তাই এমন একটি প্রদর্শনী বেশ নতুন নতুন রসের সঞ্চার করে দর্শক মনে। চিত্রকলা, ছাপচিত্র, ভাস্কর্য,  প্রাচ্যকলা, কারুশিল্প, মৃৎশিল্প, গ্রাফিক ডিজাইন, আলোকচিত্র, স্থাপনা শিল্প, পারফরমেন্স আর্ট, নিউ মিডিয়া আর্ট ইত্যাদি শাখায় শিল্পকর্ম জমা পড়েছে আর প্রতি শাখা থেকে সেরা একজনকে পুরস্কৃতও করা হয়েছে। 

এবারের প্রদর্শনীর একটি বিশেষ সংযোজন ছিল কিউরেটেড আর্ট। এতে ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, খুলনা, কবি নজরুল, রাজশাহী, শান্ত-মরিয়ম, ইউডা, চট্টগ্রামসহ ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দলবেধে নির্দিষ্ট থিমের ওপর একজন কিউরেটরের তত্ত্বাবধানের গুচ্ছ শিল্প প্রদর্শন করেছে। এর একটি নজির খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'দক্ষিণ বাংলার লৌকিক সংস্কৃতি ও অসাম্প্রদায়িক মানসপট'। এর একটি উপকরণ শ্বাসমূল যা মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে; আরেকটি উপকরণ মাছ ধরার জাল যা ওপর থেকে দেয়ালের মাঝ বরাবর নেমে এসেছে। দেয়ালে বনবিবির পালার বিভিন্ন অংশ খণ্ড খণ্ড চিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপিত হয়েছে। 

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিউরেটেড আর্ট। ছবি: আব্দুল্লাহ ইউসুফ

এখানে শিল্পীরা বলতে চাইছেন, দক্ষিণবঙ্গের লোকায়ত জীবন, জীবিকা ও ধর্মীয় বিশ্বাস যে অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির জন্ম দিয়েছে তা বিশ্বে বিরল। জীবনযুদ্ধের নানা ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করার একটি উপায় হিসাবে যে কাহিনীগুলো মানুষের মুখে মুখে ফিরেছে তা দিয়েই সৃষ্টি হয়েছে লোকধর্মের। আর বিশ্ব সংস্কৃতিতে এটা যোগান দিয়েছে নতুন সংস্কৃতি। প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের লড়াই এক করে দিয়েছে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির মানুষের বিশ্বাস ও চেতনা।

তাইতো দেখা যায় বনদুর্গা হয়ে উঠেছে বনবিবি। নোনাভূমি, সুন্দরবন, মানুষ, জীববৈচিত্র্য, সংগ্রাম ও আত্মবিশ্বাসের খণ্ডচিত্র নিয়ে এই উপস্থাপনা। শিল্পী পলাশ বরণ বিশ্বাস ছিলেন এর কিউরেটর। 

প্রদর্শনীর একাংশ। ছবি: আব্দুল্লাহ ইউসুফ

শিল্পী সুশান্ত কুমার অধিকারীর কিউরেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গুচ্ছ উপস্থাপনার নাম ভাবনার রূপান্তর। এতে শিল্পীরা লোক পরম্পরায় চলে আসা শিল্প ধারা ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে প্রাপ্ত শিল্পধারার আন্তঃসম্পর্ক বোঝার চেষ্টা করেছেন। তাই গোবর মাটিতে লেপা একটি দেয়ালে আলপনা আর লোকজ নকশা দেখা গেল, তার ওপরে আবার ক্লাসরুমে শেখা শিল্পকর্মও স্থান পেয়েছে। শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্বসুরী যেমন জয়নুল আবেদীন, কামরুল হাসানের শিল্পকর্মের সঙ্গে চলতি সময়ের প্রযুক্তি ও উন্নয়নকে গেঁথে দিয়ে এক চমকানো নমুনা উপস্থাপন করেছে। ফলশ্রুতিতে ইরতিজা কাগজীর একটি ছবিতে আমরা কামরুল হাসানের উঁকি ছবির নারী চরিত্রটিকে বাঁশ বেড়ার ফোঁকর দিয়ে পদ্মা সেতু দেখতে দেখি। আবার জয়নুলের পাইন্যার মা'র সামনের টেবিলে দেখি ল্যাপটপ।

শিল্পী ইরতিজা কাগজী। ছবি: আব্দুল্লাহ ইউসুফ

স্থাপনা শিল্প শাখায় মারুফ আদনানের ২১টি পাখির বাসা দিয়ে তৈরি অস্তিত্বের অনুরণন নামের শিল্পকর্মটি দারুণ চিন্তার যোগান দেয়। বাসাগুলোর কোনোটিতে দেখলাম ব্যাটম্যান, কোনোটায় একে-৪৭ রাইফেল, কোনোটায় মুখোশ। শিল্পী বুঝি বোঝাতে চাইছেন, এখনকার এই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের আমলে তো ঘরে ঘরে সুপারম্যানরাই ফুটে বেরুচ্ছে। এর ভালো মন্দ বিচারে যাননি শিল্পী বরং পরিস্থিতিটা পরিস্কার করেছেন। সৈয়দা তামান্না আফরোজের 'ভিতরের গল্প' শিরোনামের স্থাপনাশিল্পটিও আকর্ষনীয়। তিনি পাটা-পুতাকে আশ্রয় করে গড়ে তুলেছেন তাঁর শিল্প। দেখা যাচ্ছে পাটার এক প্রান্ত থেকে ঘষতে ঘষতে পুতা অন্য প্রান্তে গেলেই ফুটে ওঠে মানুষের মুখ। 

গ্রাফিক ডিজাইন শাখায়  মাহ্ফুজুর রহমান ডিজিটাল মাধ্যমে নয়টি খণ্ডচিত্রে প্রাত্যহিক জীবনের যে দৃশ্য ফুটিয়ে তুলেছেন তা দৃষ্টিনন্দন। 'আমার চোখে কামরুল' নামে সৈয়দা তাসনিম বিনতে মাসুদ কালি ও কলমে নাইয়র, বাউল, পটুয়া, তিনকন্যা ইত্যাদির যে কোলাজ করেছেন তাও দৃষ্টি আকর্ষন করে।

দ্য ব্লু জার্নি- শিল্পী বুবলী বর্ণা। ছবি: আব্দুল্লাহ ইউসুফ

গভীর ভাবনায় ফেলে দেয়, মনোজ কান্তি পালের মৃৎশিল্প 'মানবসভ্যতা'। তিনি শত শত বাদামী, মেটে ও কালো রঙের ছোট ছোট বুড়ো আঙুল মেঝেতে বসিয়ে এ শিল্পকর্ম তৈরি করেছেন। মো. আনিসুল হকের 'মাটির প্রত্যাশা অন্বেষণ' নামের মৃৎশিল্পটি নজর কাড়ে তার সূক্ষ্মতা ও ডিটেইলিংয়ের জন্য। মেহেদী হাসানের 'অপেক্ষা' নামের একটি শিল্পকর্ম বুনেছেন ট্যাপেস্ট্রিতে। এতে শিশুকোলে এক নারীকে সমুদ্রের ধারে অপেক্ষমাণ দেখা যায় যা জয়নুল আবেদীনের নদীর ধারে 'ফেরীর জন্য অপেক্ষমাণ' পিতা ও পুত্রের কথা মনে করিয়ে দেয়।

প্রদর্শনীর একাংশ। ছবি: আব্দুল্লাহ ইউসুফ

সবচেয়ে বেশি ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে চিত্রকলা বা পেইন্টিং শাখায়। এর কয়েকটি ছবি মাছ নিয়ে। শাকের আহমদ এবং রুবাইয়াত ইবনে নবীর মাছ-২ ও মাছ-১ এতো বাস্তবানুগ যে পাংগাস আর তেলাপিয়া বলে সহজেই চিনে নেওয়া যায়। হাসান কবীরের মৃগেল মাছ নামের ছবিটিতে মাছটির সকল বৈশিষ্ট্যই ধরা পড়েছে আর উপস্থাপনাও দৃষ্টিনন্দন। ব্যতিক্রমী চিন্তায় অনন্য তামজীদ নওরীনের দ্য ক্যাপ্টিভেটেড ড্রিম -১ ছবিটি। এখানে শিল্পী একটি মুখাবয়বকে টেলিভিশনের খাঁচায় বন্দি দেখিয়েছেন। তামান্না তাসনিম সুপ্তির 'স্টাডি অব মেকানিক্যাল পার্টস' সিরিজের তিনটি ছবিই প্রাণবন্ত। 

ক্যাক (পাথর)- শিল্পী খিং সাই মং। ছবি: আব্দুল্লাহ ইউসুফ

জঞ্জালপূর্ণ জীবনের ধাপে ধাপে মনের যে অবস্থা হয় তা নিয়ে কয়েকজন শিল্পী কয়েকটি আলাদা আলাদা ছবি প্রদর্শনীতে দিয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম তাসফিয়া তানজিম আহমেদের 'এক ঝাঁক গ্রেগর সামসার আবদ্ধ মিছিল', ফারিয়া খানম তুলির 'প্রতিবিম্ব-০৫', খিং সাই মংয়ের 'ক্যাক বা পাথর', রোমানা ইসলাম রুপার 'নো সিগনাল', সাব্বির হোসাইনের 'আবদ্ধ জীবন-১', নওশীন তাবাসসুমের 'অস্থির', সাফিয়া শরীফের 'মাইনকার চিপা', সীমান্ত ঘোষের 'সত্ত্বা-২', সঞ্জীব সেনের 'বিচ্যুতি', জান্নাতুল ফেরদৌস জ্যোতির 'মুখচ্ছবি' ইত্যাদি।

দুর্দম্য ও উত্থিতি। ছবি: আব্দুল্লাহ ইউসুফ

এবারের প্রদর্শনীর ভাস্কর্যগুলো বিষয়বৈচিত্র্যে যেমন চিন্তার বৈচিত্র্যেও অভিনব। বাঁশকাঠি দিয়ে করা দেবব্রত বিশ্বাসের উত্থিতি বা দ্য রাইজিং নামের ভাস্কর্যটি যেমন প্রথম দর্শনেই নজর কাড়ে। এখানে আমরা ফাউন্ড অবজেক্ট বা ফেলনা বিষয় দিয়ে তৈরি কয়েকটি ভাস্কর্য নিয়ে শিল্পীর ভাবনা শুনেছি। তাঁদের জবানীতেই সেগুলোর বর্ননা দেওয়া হলো।  

দুর্দম্য, মিলন কুমার দাস: 

করোনাকালে বাবা কাজ হারালেন। দীর্ঘকাল ক্লাস, পরীক্ষা সব বন্ধ। বন্ধু-স্বজনের সঙ্গে দেখা নেই। কোনো কাজ এগুচ্ছে না। মনে হচ্ছে কোনো এক মহাশক্তি পিছু টেনে ধরেছে। কোনো এক ভয়াল অন্ধকার অতল কোনো গহ্বরে ফেলে দিতে চাইছে আমাকে। এ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় খুজতে গিয়েই ভাস্কর্যটির ভাবনা এলো মনে। আমার মনে পড়ল, বিভিন্ন সময়ে বিদেশী দখলদারেরা বাঙালির অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিতে চেয়েছে। কিন্তু, আমাদের দমিয়ে রাখা যায়নি। করোনাকাল শেষ হলে ক্যাম্পাসে ফিরে শিল্পী হামিদুজ্জামান খানের একাত্তরের ভাস্কর্যগুলো (সংশপ্তক ইত্যাদি) মনোযোগ দিয়ে দেখতে থাকি। আলোকচিত্রে একাত্তরের রিফ্যিউজি মিছিলের ছবিও দেখলাম বারবার। প্রথম ভেবেছিলাম সিমেন্ট দিয়ে গড়ব এ ভাস্কর্য। আমার শিক্ষক আব্দুস সালাম স্যারকে (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ) ভাবনাটি বললাম, অশুভ শক্তির পিছুটান ছাড়িয়ে এগিয়ে যেতে চাওয়া এক মানুষের ভাস্কর্য গড়তে চাই সিমেন্টে। স্যার বললেন, টায়ারে করলে কেমন হয়?

দুর্দম্য, শিল্পী- মিলন কুমার দাস। ছবি: আব্দুল্লাহ ইউসুফ

স্যারের কথা আমার খুব মনে ধরল। বিদেশে টায়ারে গড়া কিছু ভাস্কর্য দেখেছি কিন্তু আমাদের দেশে সেরকমভাবে হয়নি। আমি রিকশা গ্যারেজে গেলাম। বেশ কিছু পরিত্যক্ত টায়ার কিনলাম। ব্লেড দিয়ে তা পাতলা করে ছিলতে বসলাম। আমার ছোট বোন এবং তার বন্ধু-বান্ধবীরাও হাত লাগাল। দিন কয় পর পর আরো আরো টায়ার জোগাড় করতাম আর ছিলতে বসতাম। হাত কেটে রক্তারক্তি অবস্থা। জয়নুল আবেদীনের গুণটানা ছবিটা আমাকে বেশ প্রেরণা দিল। ওই ছবির চরিত্রগুলোর বাঁক, ভঙ্গি আর গতি কাজটায় ধরতে চাইলাম। সিমেন্ট, জিআই তার আর নেট দিয়ে কাঠামোটি অ্যাডজাস্ট করলাম। সবমিলিয়ে ১০০টি টায়ার লেগেছিল। টায়ারের ছিলকাগুলো জোড়া দিতে গেলে আঠায় হাত মাখামাখি হয়ে যেত। যখন শেষ হলো তখন সকলেই দেখে প্রশংসা করল। ৫-৬ জন পর পর একইভঙ্গিতে দাড়িয়ে ছবি তুলে ফেসবুকে কভার ফটো বানাল। মা বললেন, মিলন তুই তো বেশ ভালো করেছিস কাজটা। মায়ের এই কথাটা আমাকে দারুণ প্রেরণা দিল।

রিসকা, সুস্মিতা মুখার্জ্জী মিষ্টি:  

ভাস্কর্যটির ভাবনা প্রথম আমার মনে আসে ২০১৯ সালে। চারপাশের উপকরণ থেকেই আমি ভাবনা পাই। পুরান ঢাকার বাসিন্দা বলে রিকশা আমাদের নিত্যকার বাহন। পুরান ঢাকার বেশিরভাগ লোক বাহনটিকে ডাকে রিসকা, তাই ভাস্কর্যের নামও দিয়েছি 'রিসকা'। আমি ভাবি প্রতিটি উপকরণেরই একটা আবেদন আছে, বিশেষ করে যেগুলো ফেলনা। আমরা অনেক কিছুই ব্যবহার করে ফেলে দিই, কিন্তু সেগুলো তো রয়েই যায় মানে একেবারে গায়েব হয়ে যায় না। আমি ভাস্কর্য বানাই ওই ফেলনা উপকরণ দিয়েই। ভাঙারির দোকান ঘুরতে যাই মাঝে মধ্যে, গুলিস্তানের ফুটপাত থেকে উল কিনি তারপর সেগুলো জুড়তে থাকি একের সঙ্গে আরেককে। আমার ভাস্কর্য এভাবেই তৈরি হয়। রিসকা সিরিজের ভাস্কর্যগুলো অনেকটা মিনিমালিস্ট ঢংয়ে তৈরি, ফাউন্ড অবজেক্ট দিয়ে বানানো। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৯ সালে এমএফএ সম্পন্ন করেছি। 

রিসকা। ছবি: আব্দুল্লাহ ইউসুফ

সন্ধান, আফিয়া ফারজানা: আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃৎ ও ভাস্কর্য শিল্প বিভাগে পঞ্চম বর্ষের ছাত্র। আব্দুস সালাম স্যার একদিন আমাদেরকে একটা খোলা মাঠে ছেড়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ইচ্ছামতো ড্রয়িং করো। আমি খাবারের সন্ধানে কিছু গরুকে এদিক-সেদিক চড়ে বেড়াতে দেখি আর তা খাতায় তুলে নিই। আমি ভাবি 'সন্ধান' বিষয়কে উপজীব্য করে ভাস্কর্য গড়ব ফাউন্ড (ফেলনা) অবজেক্ট দিয়ে। তারপর রাজশাহীর ভদ্রার মোড়ের ভাঙারির দোকানে যাই। খুঁজে খুঁজে স্ট্যান্ডফ্যানের ঝাঁকা খুঁজে বের করি বেশ কয়েকটি। ঝাঁকাগুলো দিয়ে আমি বন্য গরুর শরীরের মধ্যভাগ গড়ার কথা ভাবি। মাথা গড়তে গাড়ির গিয়ার নেই, পায়ের জন্য মোটর সাইকেলের স্প্রিং আর ঝাকাগুলো পরস্পরের সঙ্গে জুড়তে টিনের পাত ব্যবহার করি। সবই আমি ভাঙ্গারির দোকান থেকে কেজি দরে কিনেছিলাম। এগুলো জোড়া দিয়েছিলাম ঝালাই বা ওয়েল্ডিং পদ্ধতিতে। এই কাজটির পর আমি একই উপকরণ ব্যবহার করে বেশ কিছু মুরগী গড়েছি আর এখন গড়ছি একটি ঘোড়া।

সন্ধান। ছবি: আব্দুল্লাহ ইউসুফ

এবারের নবীন চারুকলা প্রদর্শনীতে করোনাকালের দুঃখ নিয়ে আঁকা আরেকটি ছবি ছাপচিত্র বিভাগে সেরা পুরস্কার জিতেছে। তার শিল্পীর নাম রুমানা আহমেদ আর ছবির নাম 'শহর জীবন একটি কঠোর বাস্তবতা'। রুমানা বলছিলেন, করোনাকাল নিম্নবিত্ত তো বটেই মধ্যবিত্তের জীবনেও বিরাট ঝড় তুলেছিল। আমি তখন প্রায়ই দেখতাম লোকে লোটা-বাটি ট্রাকে চাপিয়ে বাড়ির পথ ধরছে। কোনোভাবেই তারা টিকতে পারছে না শহরে আর সেটা আমাকে বিষন্ন করে রাখত। পরে ভাবলাম একটা ছবি এঁকে এ থেকে রেহাই নিই। তারই ফলশ্রুতিতে ওই ছবি তৈরি হয়েছিল।'

প্রদর্শনীর একাংশ। ছবি: আব্দুল্লাহ ইউসুফ

করোনা ও তার পরের বিশ্ব পরিস্থিতি আরেকটি ভাস্কর্য তৈরির অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। ব্রোঞ্জে তৈরি রাজেশ ধরের  এ ভাস্কর্যের নাম স্বপ্ন। রাজেশ বেড়ে উঠেছেন কক্সবাজারের রামুতে। তাঁর পিতা স্বর্ণকার। রামুতে অনেক বৌদ্ধ মন্দির। মন্দিরগুলোর ভাস্কর্য আর দেয়ালচিত্র দেখে রাজেশ ভাস্কর হওয়ার প্রেরণা পেয়েছেন। রাজেশ বলছিলেন, করোনার কষ্ট কাটিয়ে না উঠতেই বিশ্বের মানুষ হানাহানিতে লিপ্ত হয় কখনো ফিলিস্তিনে, কখনো ইয়েমেনে কখনোবা আফ্রিকায়। ইউক্রেনের যুদ্ধ তো সারা পৃথিবীতেই ক্ষত তৈরি করেছে। যুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত মানুষগুলোর কথা ভেবেই আমার এ ভাস্কর্য। আমি আরো বলতে চাইছি, আহত, ভূমিহীন, ক্ষতবিক্ষত মানুষও স্বপ্ন দেখে, তা নইলে বাঁচার উপায় থাকে না।'

দ্য ক্যাপ্টিভেটেড ড্রিম-১/ শিল্পী- তামজীদ নওরীন। ছবি: আব্দুল্লাহ ইউসুফ

উল্লেখ্য বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের আয়োজনে ২৩ তম নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী শুরু হয়েছিল ২৭ জুলাই। শেষ হয়েছে ১০ সেপ্টেম্বর। মাসাধিককালব্যাপী এ প্রদর্শনী নবীন শিল্পীদের ভাবনার প্রকাশ ঘটানোর সুযোগ যেমন এনে দিয়েছিল; তেমনি দর্শকদের নতুন নতুন ভাবনায় যুক্ত হওয়াকেও সহজ করেছে। সেরা কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ১২ জনকে পুরস্কৃতও করা হয়েছে। এবার নবীন শিল্পী চারুকলা পুরস্কার পেয়েছেন সাজিয়া সন্ধ্যা, মৃৎশিল্পে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছেন হালিমা আক্তার, গ্রাফিক ডিজাইনে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছেন মাহাতাব রশীদ, নিউ মিডিয়া আর্টে জুয়েল চাকমা শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছেন। ভাস্কর্যে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছেন সুস্মিতা মুখার্জ্জী মিষ্টি। তিনি বলছিলেন, পুরস্কার পেলে উৎসাহ তৈরি হয়, এর বেশি কিছু নয়। একজন প্রকৃত শিল্পী পুরস্কারের জন্য কাজ করেন না, কাজ না করে তাঁর আসলে উপায় থাকে না।' 

 

Related Topics

টপ নিউজ

প্রদর্শনী / নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী-২০২২

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ‘সরকারকে শত্রু মনে করে মানুষ’: দ্য গার্ডিয়ান-এর সঙ্গে সাক্ষৎকারে প্রধান উপদেষ্টা
  • ইসরায়েলে ইরানের পাল্টা হামলা, নিহত অন্তত ৩, আহত কয়েক ডজন; ইরানেও চলছে হামলা
  • বাংলাদেশ থেকে ঝুট কাপড় সরবরাহ বন্ধে বিপাকে ভারতের পানিপথের টেক্সটাইল রিসাইক্লিং শিল্প
  • ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ ৫ জনের মৃত্যু, ৪ জনই বরগুনার
  • আলীকদমে পর্যটক মৃত্যুর ঘটনায় ‘ট্যুর এক্সপার্ট’ অ্যাডমিন বর্ষা ইসলাম গ্রেপ্তার
  • ইরান হামলার আগে গোপনে ইসরায়েলকে শতাধিক হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র

Related News

  • ‘নিরাপত্তাঝুঁকিতে’ টাঙ্গাইলে ‘তাণ্ডব’ সিনেমার প্রদর্শনী বন্ধ
  • যে কারণে ভ্যান গখ এক পোস্টম্যান ও তার পরিবারের ২৬টি প্রতিকৃতি এঁকেছিলেন
  • আর্ট কিউরেটর: শিল্পের যত্ন নেন, শিল্পীকে হারিয়ে যেতে দেন না
  • বিখ্যাত ভারতীয় চিত্রশিল্পী এমএফ হুসেনের ‘বিতর্কিত’ ২ চিত্রকর্ম জব্দের নির্দেশ আদালতের
  • নিউইয়র্কে কাল্পনিক বইয়ের ব্যতিক্রমী প্রদর্শনী: বাস্তবে অস্তিত্ব নেই, তবে যদি সত্যিকারে থাকত!

Most Read

1
বাংলাদেশ

‘সরকারকে শত্রু মনে করে মানুষ’: দ্য গার্ডিয়ান-এর সঙ্গে সাক্ষৎকারে প্রধান উপদেষ্টা

2
আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলে ইরানের পাল্টা হামলা, নিহত অন্তত ৩, আহত কয়েক ডজন; ইরানেও চলছে হামলা

3
আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ থেকে ঝুট কাপড় সরবরাহ বন্ধে বিপাকে ভারতের পানিপথের টেক্সটাইল রিসাইক্লিং শিল্প

4
বাংলাদেশ

ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ ৫ জনের মৃত্যু, ৪ জনই বরগুনার

5
বাংলাদেশ

আলীকদমে পর্যটক মৃত্যুর ঘটনায় ‘ট্যুর এক্সপার্ট’ অ্যাডমিন বর্ষা ইসলাম গ্রেপ্তার

6
আন্তর্জাতিক

ইরান হামলার আগে গোপনে ইসরায়েলকে শতাধিক হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net