Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Saturday
July 05, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SATURDAY, JULY 05, 2025
অজানা এক দার্শনিক আর পড়ুয়া ব্রুস লি!

ফিচার

জন ব্লেক
24 July, 2020, 04:30 pm
Last modified: 24 July, 2020, 05:19 pm

Related News

  • মারা গেছেন ‘কিল বিল’ অভিনেতা মাইকেল ম্যাডসেন 
  • আগাথার একই উপন্যাস থেকে শোয়ার্জনেগার ও স্ট্যালনের অ্যাকশন সিনেমা—দুটোই ফ্লপ
  • বিদেশি সিনেমার ওপর ১০০% শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প
  • পরবর্তী জেমস বন্ড ব্রিটিশ হওয়া উচিত: সাবেক তারকা পিয়ার্স ব্রসনান 
  • ‘ভিলেন’ যখন বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা; আয় করেছিলেন নায়কদের ১২ গুণ

অজানা এক দার্শনিক আর পড়ুয়া ব্রুস লি!

'আস্থার চেয়েও বড়, লক্ষ্যের চেয়েও বিশাল, আত্মবিশ্বাসের চেয়েও অতিকায় এই তুখোড় সৃজনশীল ও আধ্যাত্মিক শক্তি নিজের ভেতর টের পাই আমি...।'
জন ব্লেক
24 July, 2020, 04:30 pm
Last modified: 24 July, 2020, 05:19 pm
ব্রুস লি

ব্রুস লি। মার্শাল আর্ট আইকন। হংকংয়ের এক টকশোতে উপস্থাপক যখন জিজ্ঞেস করেছিলেন, নিজেকে তিনি চীনা নাকি আমেরিকান ভাবেন, জবাবে বলেছিলেন, 'দুটোর কোনোটিই নয়। নিজেকে স্রেফ একজন মানুষ হিসেবে দেখি।' 

১৯৭৩ সালের জুলাইয়ে আকস্মিক মৃত্যুর এতগুলো বছর পরেও ব্রুস লির ভেতর অন্যতর সত্তার খোঁজ করে মানুষ: তাকে তার শরীরের মতোই নমনীয় মানসিকতার একজন চিন্তাবিদ ভাবে।

১৯৫০-এর দশকের শেষদিকে, মা ও ভাই-বোনদের সঙ্গে ব্রুস লি (সবার ডানে)

কথাটা শুনতে হয়তো সেকেলে লাগছে! লি ফাইটার ছিলেন, দার্শনিক নন- এমনটাই ধরা হয় তাকে। 'এন্টার দ্য ড্রাগন' ও 'দ্য চাইনিজ কানেকশন'-এর মতো সিনেমাগুলোতে নিজের সবচেয়ে প্রাণবন্ত ফাইটিং দৃশ্যের কতগুলো তিনি আমাদের জন্য রেখে গেছেন।

তবে মার্শাল আর্ট ও প্রাচ্যীয় দর্শনের ওপর লেখা একটি বৈপ্লবিক বইয়েও তার উত্তরাধিকার রয়ে গেছে; তাওবাদ, কোয়ান্টাম ফিজিকস, সাইকোথেরাপি এবং ইতিবাচক ভাবনার শক্তি- সব বিষয় নিয়ে ৭ খণ্ডের সেই বই।

লির মৃত্যুর পর তার লেখাজোঁখা নিয়ে  ঘাটাঘাটি করা জন লিটন বলেছেন, প্রথমবার এই মহাতারকার লাইব্রেরিতে ঢুকে তিনি হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে অন্তত ১৭০০ বই পেয়েছেন, যেগুলোতে প্রচুর পরিমানে ফুটনোট লিখে রেখেছিলেন লি। তখনই লিটন বুঝে যান, শরীরের মতো মনও তাগড়া ছিল লির।

'দ্য ওয়ারিয়র উইদিন: দ্য ফিলোসফিস অব ব্রুস লি'র লেখক জন লিটল বলেন, 'লির দর্শন তার মার্শাল আর্টের চেয়েও দাপুটে। লির ভেতর যা কিছুর বিচ্ছুরণ ঘটেছিল, সবই এসেছে তার মন ও ভাবনা থেকে।' আরও এসেছে চীনা হিসেবে নিজ ঐতিহ্যের প্রতি তার গর্ববোধ থেকে।

পাশ্চাত্যের শ্রোতাদের কাছে প্রাচ্যের ভাবনাজগত পরিচয় করিয়ে দেওয়া বিংশ শতকের ব্রিটিশ দার্শনিক অ্যালান ওয়াটসের অনুরাগী ছিলেন লি। ওয়াটসের বয়ান টেপ রেকর্ডারে ধারণ করে ক্লাসে নিজের মার্শাল আর্টস শিক্ষার্থীদের তিনি শোনাতেন।

অল্প বয়সে টেলিভিশন নাটকে ব্রুস লি

নিজেকেও তিনি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে একটি সেঁতু হিসেবে দেখতেন। চীনা দর্শনের সৌন্দর্য এবং চীনের সংস্কৃতি আমেরিকানদের সামনে হাজির করতে চাইতেন লি, এমনটাই বলছেন তার বন্ধু-বান্ধব ও জীবনীকারেরা।

তার অন্যতম ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও ট্রেনিং পার্টনার ড্যান ইনোসান্তো বলেন, 'আমাকে সে বলেছিল, বইয়ের চেয়ে বরং সিনেমার মাধ্যমে প্রাচ্য সম্পর্কে মানুষকে শিক্ষিত করা তার পক্ষে সম্ভব হবে।' 'গেম অব ডেথ' সিনেমার একটি উন্মত্ত রোমাঞ্চকর ফাইট দৃশ্যে লির সঙ্গে ক্যামেরাবন্দী হয়েছেন ইনোসান্তো, যেখানে লির সিগন্যাচার উয়েপন ব্যবহার করে দুজন দুজনের বিরুদ্ধে মারামারিতে লিপ্ত হন। নানচাকুস নামের ওই উয়েপনটি ছোট শেকলে বাঁধা দুটি ছড়ির।

তপ্ত মার্বেলের মতো পেশী

লি যখন বেঁচে ছিলেন, সিনেমার মাধ্যমে পাচ্যীয় নিগূঢ় শিক্ষা তার পক্ষে দেওয়া যে খুব একটা সম্ভব হয়নি, বলাই বাহুল্য। (হলিউডের লোকেরা) তাকে দিয়ে প্রতিপক্ষের পশ্চাতে লাথি মারা দেখতেই চাইত।

লি তা-ই করতেন। আর এভাবে ১৯৭০-এর দশকের শুরুতে আমেরিকার সিনেমার পর্দায় যেন এক সুনামি এনে দিয়েছিলেন তিনি।

১৯৭০ সালে, লসঅ্যাঞ্জেলেসে মা ও পুত্র ব্র্যান্ডনের সঙ্গে ব্রুস লি

মারামারির সময় উদ্ভট ও তারস্বরে চিৎকার, পানির মতো তরল মুভমেন্ট, বিড়ালের মতো ক্ষিপ্রতা- তার মতো কোনো অ্যাকশন তারকার দেখা আমেরিকান দর্শক এর আগে পায়নি। তার সিনেমা পর্দায় চলাকালে দর্শক রোমাঞ্চিত হয়ে এমন চিৎকার করত, যে, ঠিকমতো সংলাপ শুনতে পেত না তারা।

লি ছিলেন রেসিয়াল পায়নিয়ারও। তিনি ছিলেন একজন এশিয়ান পুরুষ- যাকে কোনো বাকটুথড বুফন কিংবা ফরচুন-কুকি-কোয়েটিং সাগা হিসেবে ফুটিয়ে তোলা হতো না। তিনি ছিলেন একজন অকুণ্ঠ সেক্স সিম্বল। তার ক্ষিপ্রগতির শরীরে মন্ত্রমুগ্ধ ছিল নারীরা। কেউ একজন বলেছেন, তার শক্ত পেশী স্পর্শ করলে মনে হতো সেগুলো যেন 'উত্তপ্ত মার্বেল'।

কিন্তু লির মন- তার দর্শন উপলব্ধি ও ইচ্ছাশক্তি ছিল তার শারীরিক পরাক্রমের চালিকাশক্তি, বলেছেন 'ব্রুস লি: ফাইটিং ওয়ার্ডস'-এর লেখক ব্রুস থমাস।

থমাস আরও বলেন, 'দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত সাধারণ স্পৃহার বাইরের স্পৃহা ছিল লির বর্ম। তার কাছে মার্শাল আর্ট ছিল জীবনযাপনের একটি তরিকা, একটি নিখাঁদ রাস্তা; মনস্তাত্ত্বিক বিকাশ ও আত্মিক বিকাশের এক তাৎপর্য।'

লির দর্শন

লিকে স্পৃহা জোগানো আরেক দার্শনিক, ভারতে জন্ম নেওয়া জিদ্যু কৃষ্ণমূর্তির শিক্ষা হলো- কোনো ধর্মীয় রেওয়াজ কিংবা মতবাদের ভেতর সত্যের দেখা পাওয়া যায় না। তিনি লিখেছেন, 'আপনি যদি পৃথিবীর সঙ্গে সম্পৃক্ত হন, আর পৃথিবীকে দেখার ও শেখার চোখ থাকে আপনার, তাহলে দরজা ও চাবির দেখবেন নিজের হাতেই রয়েছে।'

মাত্র ১৫০ পাউন্ড ওজন, তবু তার কিক ছিল মারাত্মক

স্বনির্ভরতার ওপর জোরদান এবং ঐতিহ্যকে নির্বোধের মতো অনুসরণ না করার যে শিক্ষা কৃষ্ণমূর্তি ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, সেই আলোকেই মার্শাল আর্টকে গণ্য করেছেন লি।

তার জীবিতকালে মার্শাল আর্টের জগত বিভিন্ন ফাইটিং স্টাইলে বিভক্ত ছিল। তিনি সবগুলোকে আক্ষরিক অর্থেই এক সুতোয় বেঁধে নাম দিয়েছিলেন 'জিত কুনে দো'। নিজের ওই বৈপ্লবিক ফাইটিং স্টাইল নিয়ে পরে তিনি বইও লিখেছেন।

'কোনো একটা নয়, বরং সব স্টাইল'কে জড়ো করার স্বপ্রণোদিত উদ্যোগের কারণে আজকের দুনিয়া লিকে ডাকে এমএমএ বা মিক্সড মার্শাল আর্টের জনক।

থমাস বলেন, 'লির কাছে কৃষ্ণমূর্তি ছিলেন পথ দেখানো চিন্তক। মানুষের আসলে আচারনিষ্ঠতা কিংবা মতবাদ আঁকড়ে নয়, বরং বর্তমান দেখে চলা উচিত, এই শিক্ষা তার কাছ থেকে পেয়েছিলেন লি। ধর্ম প্রসঙ্গে যা কিছু কৃষ্ণমূর্তি বলেছেন, লি তার সবটারই প্রয়োগ করে গেছেন মার্শাল আর্টে।'

লির মানসিকতা যেভাবে হয়ে ওঠত সংকটে সহায়ক

দর্শনের প্রতি লির ভক্তি ছিল স্রেফ একটি বিমূর্ত সাধনা। তবে এটি ছিল তার শারীরিক গতি ও শক্তির চাবিকাঠিও। জনৈক মার্শাল আর্টিস্ট বলেছেন, একেবারের স্থির অবস্থা থেকে মুহূর্তেই 'আতশবাজির মতো বিস্ফোরিত হওয়া'র সক্ষমতা ছিল লির।

তিনি এমনটা করতে পারার কারণ, 'চি' নামে পরিচিত প্রাচীন চীনা দার্শনিকদের প্রতি আস্থা ছিল তার।

লিটল তার 'দ্য ওয়ারিয়র উইদিন' বইয়ে চি'র বর্ণনা দিয়েছেন, সব মানুষের ভিড়ে এক 'স্বতঃস্ফূর্ত স্পৃহার প্রকাণ্ড আধার' হিসেবে, যেটি- 'যখন আমাদের মাংশপেশীর ভেতর প্রবাহিত হয়, তখন প্রচুর শক্তি জোগায়, আর যখন মস্তিস্কে প্রবাহিত হয়, তখন আমাদের অসাধারণ অন্তর্দৃষ্টি ও বোঝাপড়া এনে দেয়।'

তার সিগনেচার উয়েপন

লি দার্শনিক চিন্তন ও শারীরিক প্রশিক্ষণের দিনগুলোর চূড়ান্ত অবস্থানে চি'র এই বৈশিষ্ট্যই ফিরিয়ে এনেছিলেন- এমনটাই দাবি তার জীবনীকার ও ছাত্রদের।

নিজের ভেতর আত্মস্ত করা ওইসব স্পৃহার কথা বলতে গিয়ে লি একবার বলেছিলেন, 'আস্থার চেয়েও বড়, লক্ষ্যের চেয়েও বিশাল, আত্মবিশ্বাসের চেয়েও অতিকায় এই তুখোড় সৃজনশীল ও আধ্যাত্মিক শক্তি নিজের ভেতর টের পাই আমি...। এটি ঐশ্বরিক কি না, জানি না; তবে এই বিরাট শক্তি, এই প্রবাহমান ক্ষমতা, এই চিরগতিশীল সত্তা আমার ভেতর রয়েছে।'

এইসব স্পৃহা তিনি ইতিবাচক চিন্তার ভেতর ছড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি ছিলেন নরম্যান ভিনসেন্ট পিলের অনুরাগী; পড়েছেন জেমস অ্যালেনের 'অ্যাজ অ্যা ম্যান থিংকেথ'সহ এ রকম বইপত্র। সময় পেলেই নিজ দেশি দর্শন আওড়াতে ছাড়তেন না; যেমন, 'নৈরাশ্যবাদ আপনার সাফল্যের হাতিয়ারগুলো ভোঁতা করে দেবে।'

লির দর্শনগত বিশ্বাসগুলো বইয়ের পাতায় হয়তো আটকে রাখা সম্ভব, কিন্তু যাপিত জীবনে তিনি সেগুলোর পরিস্থিতি অনুসারে পরিশোধন করে ব্যবহার করেছেন- যেন মানুষের কষ্ট লাঘব করা যায়।

প্রথমত, বর্ণবাদের সঙ্গে বোঝাপড়া তাকে করতেই হয়েছে, সেটি দুদিক থেকেই। তিনি জন্মেছেন স্যান ফ্র্যান্সিস্কোতে, কিন্তু বেড়ে ওঠেছেন হংকংয়ে, এক সম্পদশালী পরিবারে। তার বাবা ছিলেন অপেরা তারকা; শিশু অভিনেতা হিসেবে অন্তত ২০টি চীনা সিনেমায় অভিনয় করেছেন লি। ১৩ বছর বয়সে তিনি মার্শাল আর্ট শিখতে শুরু করেন; তবে মা শেতাঙ্গ- এ কথা জানার পর তার প্রশিক্ষক তাকে ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষাদান করা থামিয়ে দিয়েছিলেন- এমনটাই বলছেন লির জীবনীকারেরা।

আর এ অভিজ্ঞতাই, ১৮ বছর বয়সে আমেরিকায় পাড়ি জমানোর পর পশ্চিমাদের মার্শাল আর্ট শেখানোর সিদ্ধান্ত নিতে তাকে প্রেরণা জুগিয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। সে সময়ে পশ্চিমাদের মার্শাল আর্ট শেখানো একটা ট্যাবু ছিল; তবু সেটি পাত্তা দেননি ব্রুস লি, বললেন আমেরিকায় তার প্রথম শিক্ষার্থীদের অন্যতম- ডগ পালমার।

হলিউড থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে হংকং ফিরে সিনেমার তারকা হয়ে ওঠেন ব্রুস লি; তেমনই একটি সিনেমা 'ফিস্ট অব ফিউরি'তে তিনি

'আমার ধারণা, নিজের ভেতরে থাকা শেতাঙ্গ অংশটিই তাকে এ কাজ করতে প্রণোদনা জুগিয়েছে,' পশ্চিমাদের পাঠ দেওয়ার ব্যাপারে লির সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রসঙ্গে বলেন পালমার, 'নিজের শেতাঙ্গ অংশটির কারণে হংকংয়ে সম্মুখীন হওয়া বাধাবিঘ্ন তাকে পেরিয়ে আসতেই হতো।'

লি যখন হলিউডে বর্ণবাদের শিকার

মার্শাল আর্ট নিয়ে একটা টিভি নাটকে অভিনয়ের আইডিয়া নিয়েই হলিউডে পা রেখেছিলেন লি। সিরিজটির আইডিয়া গ্রহণ করা হলেও লিকে প্রত্যাশিত চরিত্র দেওয়া হয়নি; কেননা, টিভি কর্তৃপক্ষ ভেবেছিলেন, আমেরিকান দর্শকের কাছে তাকে বেশি রকমের চীনা দেখাবে। তারা তাকে একজন আমেরিকান অভিনেতা ও নৃত্যশিল্পীর চরিত্রে অভিনয় করান। 'কুংফু' নামের ওই নাটক ভীষণ জনপ্রিয়তা পায়।

একবার প্রশিক্ষণের সময় পিঠের মারাত্মক ইনজুরিতে পড়েন লি। চিকিৎসকরা বলে দিয়েছিলেন, মার্শাল আর্টের চর্চা দূরের কথা, তিনি আর কোনোদিনই ঠিকমতো হাঁটতে পারবেন না। তার জীবনের খুবই দুঃসময় ছিল সেটি। বিছানায় শুয়ে কাটত দিন। চলাফেরার জন্য স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানের সাহায্য নিতে হতো। এক পর্যায়ে ব্যাংকে তার ছিল মাত্র ৫০ ডলার বা সোয়া ৪ হাজার টাকা।

১৯৭৩, 'এন্টার দ্য ড্রাগন'-এর সেটে প্রডিউসারের সঙ্গে ব্রুস লি

এ সময়ে তার পক্ষে মারাত্মক হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক ছিল; কিন্তু তিনি ইতিবাচক মানসিকতার জোরে সেই ইনজুরি জয় করেছেন। এ সময়েই তিনি অতুলনীয় বই 'জিত কুনে দো' লিখেছেন বলে দাবি তার অন্যতম জীবনীকার থমাসের।

'নিজেই নিজেকে সুস্থ করে তুলেছেন লি,' বলেন থমাস।

ইতিবাচক চিন্তাভাবনায় তার আস্থা রাখার বিষয়টির ছাপ পাওয়া যায় জীবনের সেই কম্পমান সময়ে এক বন্ধুকে লেখা চিঠিতে। তিনি লিখেছেন: 

"বলি, আমার চেয়ে অনিশ্চিত কর্মজীবন আর কার আছে, বলো? কীসের ওপর বেঁচে আছি আমি? নিজের সক্ষমতার ওপর আমার যা আস্থা, তা আমাকেই তৈরি করে নিতে হবে। পিঠের ইনজুরি আমাকে এক বছরের মতো বিছানায় ফেলে রাখলেও, প্রতিটি দুর্দশাই আসলে আশীর্বাদ বয়ে আনে... ঝড়ো বৃষ্টি কেটে গেলে যেমন সবকিছু হয়ে ওঠে ঝলমল।'

আজকের দিনে লির উত্তরাধিকার

লি তারপর ব্রেকথ্রু পেয়েছিলেন। হংকং গিয়ে একগুচ্ছ সিনেমা বানিয়েছিলেন। সেগুলো নজর কেড়েছিল হলিউডের। তারপর হলিউডে ফিরেছিলেন 'এন্টার দ্য ড্রাগন' বানাতে। ব্যাপক হিট হয়েছিল ওই সিনেমা।

কিন্তু নিজের কাজের শীর্ষবিন্দু দেখার মতো আয়ু পাননি তিনি।

১৯৭৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে 'এন্টার দ্য ড্রাগন' মুক্তির মাত্র কয়েকদিন আগে, হংকংয়ে ব্যথানাশক ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মারা যান তিনি। বয়স হয়েছিল মাত্র ৩২ বছর। লির ছেলে ব্র্যান্ডনও বাবার পথ ধরে মার্শাল আর্ট ও সিনেমার জগতে পা রেখেছিলেন; কিন্তু এক সিনেমার সেটে, দুর্ঘটনাক্রমে প্রপ গানের গুলিতে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ যায় লি-পুত্রের।

লির বন্ধুরা এখনো তাকে মিস করেন। প্রিয় বন্ধুর ফাইটিং দক্ষতা ও ইয়ার্কি-মশকরার গল্প করেন এখনো তারা: তিনি খুব প্রশ্ন করতে ভালোবাসতেন, ছিলেন আশাবাদী, চমৎকার রসবোধ ছিল তার, ছিলেন এক বিশ্বস্ত বন্ধু।

পালমার, পেশাজীবনে এখন সিয়াটেলের একজন অ্যাটর্নি, বলেন, 'ক্যারিশমাটিক এক মানুষ ছিলেন লি। বেশির ভাগ পরিস্থিতিই নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে জানতেন। যেকোনো আলাপে বেশিরভাগ সময় তিনিই ঘোরাতেন ছড়ি।' 

ইনোসান্তোর ভাষ্য, মার্শাল আর্ট ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে লির প্রভাবের ভূমিকা রয়েছে। 'তার মৃত্যুর পর মিউজিশিয়ান থেকে শুরু করে স্কেটবোর্ডার- প্রায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছ থেকেই আমি চিঠি পেয়েছি। তারা লিখেছেন, লি তাদের অনুপ্রেরণার মানুষ ছিলেন', বলেন ইনোসান্তো।

লির বৈশ্বিক জনপ্রিয়তার সঙ্গে শুধু আর একজন মানুষের তুলনা টানা যায় বলে দাবি ইনোসান্তোর।

ব্রুস লি'কে শেষ বিদায়

তিনি বলেন, 'মোহাম্মদ আলী আর ব্রুস লি পৃথিবীর সবচেয়ে পরিচিত মুখ। তার সংস্পর্শ পাওয়া আমার জন্য ছিল বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার। তার সঙ্গে একটা মুহূর্তও নিরস কাটেনি।'

নতুন প্রজন্মের কাছে মার্শাল আর্ট পরিচিত করতে এখন কাজ করছে লির পরিবার।

লির 'শিল্প ও দর্শন' ছড়িয়ে দিতে 'ব্রুস লি ফাউন্ডেশন' গড়ে তুলেছেন তার বিধবা স্ত্রী লিন্ডা লি ক্যাডওয়েল ও কন্যা শ্যানন লি। মার্শাল আর্টের প্রতি লির প্যাশন ধারণ করে সুবিধাবঞ্চিত তরুণদের প্রশিক্ষণ দিতে যারা কাজ করেন, সেই শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয় এই ফাউন্ডেশন। 

আরেকভাবেও ছড়িয়ে পড়ছে লির উত্তরাধিকার। তার ফাইটিং দক্ষতা নয়, বরং ব্যক্তিস্বাতন্ত্র প্রকাশে ও জীবনের বাধা পেরিয়ে আসতে চাওয়া মানুষকে অনুপ্রাণিত করার দুর্নিবার এক উদাহরণ হিসেবে তাকে ফুটিয়ে তোলা নিয়েই এখন বেশি লিখছেন লেখকরা।

সিয়াটেলে লির কবরে, পাথরে খোদাই করে লেখা রয়েছে এপিটাফ: 'আপনার প্রেরণা ব্যক্তিগত মুক্তির পথ দেখাবে আমাদের।'

লির উত্তরাধিকার এখন তার মারা আগের থাবার চেয়ে আরও অনেক বড় থাবা মারছে।

  • লেখক: এন্টারপ্রাইজ রাইটার ও প্রডিউসার, সিএনএন
    সিএনএন থেকে অনুবাদ: রুদ্র আরিফ

Related Topics

টপ নিউজ / বিনোদন

ব্রুস লি / হংকং / মার্শাল আর্ট / হলিউড

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ভারতে আটকে থাকা ব্রিটিশ এফ-৩৫ ফাইটার জেটের রহস্য কী?
  • সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ: অসদাচরণের জন্য বরখাস্তের পরিবর্তে বাধ্যতামূলক অবসর
  • রীনা আর আমার বিয়ে বরবাদ করে দিয়েছিলেন পাকিস্তানি ক্রিকেটার জাভেদ মিয়াঁদাদ: আমির খান
  • স্থানীয় বাজার স্থিতিশীল থাকায় সবজি রপ্তানি তিনগুণ বেড়েছে
  • জীবদ্দশায় মাত্র একটি ছবি বিক্রি করতে পেরেছিলেন ভিনসেন্ট ভ্যান গখ!

Related News

  • মারা গেছেন ‘কিল বিল’ অভিনেতা মাইকেল ম্যাডসেন 
  • আগাথার একই উপন্যাস থেকে শোয়ার্জনেগার ও স্ট্যালনের অ্যাকশন সিনেমা—দুটোই ফ্লপ
  • বিদেশি সিনেমার ওপর ১০০% শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প
  • পরবর্তী জেমস বন্ড ব্রিটিশ হওয়া উচিত: সাবেক তারকা পিয়ার্স ব্রসনান 
  • ‘ভিলেন’ যখন বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেতা; আয় করেছিলেন নায়কদের ১২ গুণ

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

ভারতে আটকে থাকা ব্রিটিশ এফ-৩৫ ফাইটার জেটের রহস্য কী?

2
বাংলাদেশ

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ: অসদাচরণের জন্য বরখাস্তের পরিবর্তে বাধ্যতামূলক অবসর

3
বিনোদন

রীনা আর আমার বিয়ে বরবাদ করে দিয়েছিলেন পাকিস্তানি ক্রিকেটার জাভেদ মিয়াঁদাদ: আমির খান

4
বাংলাদেশ

স্থানীয় বাজার স্থিতিশীল থাকায় সবজি রপ্তানি তিনগুণ বেড়েছে

5
বিনোদন

জীবদ্দশায় মাত্র একটি ছবি বিক্রি করতে পেরেছিলেন ভিনসেন্ট ভ্যান গখ!

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net