অলিগলিতে ভ্রাম্যমাণ ‘ফ্রি সবজি বাজার’

সারি সারি ভ্যান। প্রত্যেকটি ভ্যান সবজিতে ভরা। টমেটো, বাঁধাকপি, লাউসহ নানা ধরনের সবজি রয়েছে এসব ভ্যানে। প্রতিদিনই ভ্যানগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছে নগরের অলিগলি। মানুষ এ সব ভ্যান থেকে কিনছেন সবজি। তবে টাকা দিয়ে নয়, বিনামূল্যে। করোনার কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবেলায় চট্টগ্রামে এই ভ্রাম্যমাণ ফ্রি সবজির বাজার চালু করেছে একদল তরুণ। গত ৪ এপ্রিল থেকে এই সবজির বাজার চালু হয়েছে।
উদ্যোক্তারার জানিয়েছেন, প্রতিদিন পাঁচটি ভ্যানে করে এ সব সবজি বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতিটি ভ্যানে ১০০ কেজি করে সবজি রাখা হয়। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই ধরনের সবজি এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পরিমাণমতো সবজি নিতে পারবেন।
উপকারভোগীরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান চাল, ডাল, তেলসহ বিভিন্ন সামগ্রী অনুদান দিয়ে যাচ্ছে। তবে কাঁচাবাজারের জন্য তাদেরকে ঘর থেকে বের হতে হয়। আগে যেসব ভ্রাম্যমাণ সবজি বিক্রেতা অলিগলিতে সবজি বিক্রি করতো তারা করোনাভাইরাসের কারণে ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। তাই ভ্রাম্যমাণ সবজি বাজারটি তাদের উপকারে আসছে।
নগরের চান্দগাঁও এলাকার বাসিন্দা ও উপকারভোগী আবদুস সালাম বলেন, গলিতে দেখার পর ভ্যান থেকে দুই ধরনের সবজি সংগ্রহ করি। এরপর বিক্রেতাদের টাকা দিতে চাইলে তারা জানায়, এগুলো বিনামূল্যে দেওয়া হয়। জোর করেও টাকা দিতে পারেনি তাদের।

উদ্যোক্তাদের একজন চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আরশাদুল আলম বাচ্চু।
তিনি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে মানুষকে ঘরে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে মানুষ বাজারের জন্য ঘর থেকে বের হচ্ছেন। তাতে করে কোনো লাভ হচ্ছে না। আবার আর্থিকভাবে অসচ্ছল মানুষগুলো প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী কিনতে পারছেন না। সামাজিক অসম্মানের ভয়ে মানুষের কাছে হাত পাততে পারছেন না তারা। আমরা সংকটে থাকা মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগটি নিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ত্রাণ হিসেবে চাল, ডাল, তেল, চিনি বিতরণ করা হলেও সবজির জন্য বাজারে যাচ্ছেন লোকজন আর তাতে করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য ঘরে ঘরে সবজি পৌঁছে দিতে ভ্রাম্যমাণ দোকান অলিগলিতে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রতিদিন ৫০০ কেজি সবজি বিতরণ করা হচ্ছে। এটি চলমান থাকবে এবং সবজির পরিমাণ আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দুই রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ ছাড়া আইসোলেশনে রয়েছেন পাঁচ জন রোগী। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সোমবার রাতে শহরের পাঁচটি প্রবেশমুখ বন্ধ করে দিয়ে নগরকে লকডাউন করে দিয়েছে। কার্যত ৬০ লাখ নগরবাসী এখন গৃহবন্দী। করোনার সংকট মোকাবেলায় সরকারি এবং বেসরকারিভাবে অনেক ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান হতদরিদ্র, নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছে।