সফর বাতিলের সিদ্ধান্ত বদল বিসিবির, নিউজিল্যান্ডে টেস্ট খেলছে বাংলাদেশ

নিউজিল্যান্ড সফরে বর্তমানে আইসোলেশনে আছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দর। আগামী ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আইসোলেশনেই সময় কাটবে দলের। এর মাঝেই সফর বাতিলের শঙ্কা জেগেছিল। টেস্ট সিরিজ না খেলেই বাংলাদেশ দলকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ভাবছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বিসিবি। নিউজিল্যান্ডে টেস্ট সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডে থাকা বাংলাদেশ দলের এক সদস্য বিষয়টি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিশ্চিত করেছেন। বিসিবির পক্ষ থেকে দলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
অবশ্য কিছু যদি, কিন্তু রয়ে গেছে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন, আগামী ২১ ডিসেম্বরের করোনা পরীক্ষার ওপর সফরের ভাগ্য নির্ভর করছে। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডে দুই টেস্ট খেলবে কিনা, সেটা চূড়ান্ত হবে আগামী ২১ ডিসেম্বর। সেদিন বাংলাদেশ দলের কোভিড টেস্ট হবে। কোভিড টেস্টে সবাই নেগেটিভ হলে বাংলাদেশ সিরিজ চালিয়ে যাবে। যদি বাংলাদেশের কারও পজিটিভ আসে, তাহলে কোয়ারেন্টিন বাড়বে। সিরিজ খেলবে কিনা, তখন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।'
মূলত অপর্যাপ্ত অনুশীলনের কারণে সফর বাতিলের কথা ভাবছিল বিসিবি। আগামী ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আইসোলেশনে থাকলে প্রথম টেস্টের আগে ১০ দিন সময় মিলবে বাংলাদেশের। এর মধ্যে ভ্রমণ ও বড় দিনের ছুটির কারণে দুদিন মাঠে নামার সুযোগ নেই। ৮ দিনে সব প্রস্তুতি সারতে হবে। এ কারণেই টেস্ট সিরিজ না খেলেই দলকে দেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছিল বিসিবি।
জাতীয় দলের নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ এবং বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শনিবার বিসিবি কার্যালয়ে সভা ডাকা হয়। সভা শেষ হওয়ার আগেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট খেলার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গেছে এবং তা দলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুটি ম্যাচ খেলতে গত ৯ ডিসেম্বর নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দেয় বাংলাদেশ দল। পৌঁছে সরাসরি হোটেলে জৈব সুরক্ষা বলয়ে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। কয়েকদিন পর দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া জাতীয় দলের স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ করোনা আক্রান্ত হলে সফর নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়।
বিপত্তির আরও জায়গা ছিল। বাংলাদেশ দল যে ফ্লাইটে করে নিউজিল্যান্ডে যায়, সেই ফ্লাইটের একজন করোনা আক্রান্ত হন। করোনা আক্রান্ত সেই যাত্রীর আশেপাশে বসা বাংলাদেশের নয় জনের আইসোলেশনের সময় বাড়ে। ওই যাত্রীর সম্ভাব্য সংস্পর্শে ছিলেন টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, ফজলে মাহমুদ রাব্বি, ইয়াসির আলী, টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন, নির্বাচক আবদুর রাজ্জাক ও সাপোর্ট স্টাফের তিন সদস্য।
এই নয় জন বাদে বাকিরা মঙ্গলবার থেকে জিম শুরু করেন। শুক্রবার দলের পক্ষ থেকে জানানো হয় সর্বশেষ পরীক্ষায় হেরাথ ছাড়া সবাই করোনা নেগেটিভ হয়েছেন। তবে বেড়েছে আইসোলেশনের সময়, ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনুশীলনের সুযোগ মিলবে না। অনুশীলনের অনুমতি দেওয়ার এক দিন পরেই তা প্রত্যাহার করে নেয় নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এবারের সফরে সাত দিনের কোয়ারেন্টিন করার কথা ছিল বাংলাদেশ দলের। কোয়ারেন্টিনের মধ্যে থেকে আগের কয়েকদিন জিম করার অনুমতি ছিল যাদের, তারা মাঠে গিয়ে অনুশীলনের অনুমতি পেয়েছিলেন। যদিও বিরূপ আবহাওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার অনুশীলন না করেই মাঠ থেকে ফিরতে হয় তাদের। এরপর দিন জানানো হয়, অনুশীলনের সুযোগ মিলছে না। মাউন্ট মঙ্গানুইতে আগামী ১ জানুয়ারি মাঠে গড়াবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। ক্রাইস্টচার্চে ৯ জানুয়ারি শুরু হবে দ্বিতীয় টেস্ট।