মাশরাফি-সাকিবকে নিয়ে করা প্রশ্নে ক্ষেপে গেলেন নাজমুল আবেদীন

প্রশ্নটা শেষই হতে দিলেন না, এর আগেই নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলে উঠলেন, 'এই প্রশ্নটা কি করতেই হবে?' পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়ার সময় বিসিবির এই পরিচালকের চোখে-মুখে তখন বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট। সোমবার জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিসিবির কর্তা, যেখানে ছিলেন না মাশরাফি মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তর দেননি নাজমুল আবেদীন, উল্টো রেগে যান।
এই বৈঠকে ছিলেন না রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দেশে না ফেরা আরেক সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। তার অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে আরও রেগে যান নাজমুল আবেদীন, স্পষ্টত রাগান্বিত প্রতিক্রিয়া দেখান বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান। এবারও তিনি উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দেন। সাংবাদিকের উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন, 'সাকিবকে নিয়ে আরও কোনো প্রশ্ন?'
সোমবার বিসিবি কার্যালয়ে সাবেক অধিনায়কদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ও বোর্ডের শীর্ষ কর্তারা। বিপিএলকে আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু ধরে দেশের সার্বিক ক্রিকেট নিয়ে সাবেক অধিনায়কদের মতামত শোনেন বিসিবির কর্তারা। এই বৈঠকে গাজী আশরাফ হোসেন লিপু, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, শাহরিয়ার নাফিস, মুমিনুল হক, লিটন কুমার দাসসহ ৯ জন সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন খালেদ মাসুদ পাইলট।
এই বৈঠকে সশরীরে কিংবা অনলাইনে যোগ দেননি দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সফল দুই অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দেশে ফিরতে পারেননি সাকিব, ইচ্ছা প্রকাশ করেও দেশের মাটিতে খেলতে পারেননি বিদায়ী টেস্ট। মাশরাফি দেশে থাকলেও ক্রিকেটসহ সবকিছুরই আড়ালে আছেন। সাবেক এই দুই অধিনায়কই পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সংসদ সদস্য ছিলেন।
কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটে তাদের অবদান বিবেচনায় বিসিবি সভাপতির সঙ্গে সাবেক অধিনায়কদের বৈঠকে এ দুজন থাকতেই পারতেন। মাশরাফি-সাকিবকে বৈঠকে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল কি না বা তারা অনলাইনে যোগ দিয়েছিলেন কিনা, এমন প্রশ্ন অযৌক্তিক হওয়ার কথা নয়। কিন্তু বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তর দেওয়ার বদলে রেগে যান নাজমুল আবেদীন।
বিসিবির এই কর্তার কাছে প্রশ্ন ছিল, 'আপনারা আজ দেশের সব অধিনায়ককে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা, তাকে আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল কি না অথবা অনলাইনে যুক্ত হয়েছিলেন কি না?' প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই নাজমুল আবেদীন বলতে শুরু করেন, ''ডু ইউ হ্যাভ টু... এটা কি করতেই হবে? না… এই প্রশ্নটা কি করতেই হবে…!'
উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করা নাজমুল আবেদীন নিজে থেকেই বলে ওঠেন, 'পরের প্রশ্ন।' প্রশ্নোত্তর পর্বের শেষ দিকে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, যারা সশরীরে আসতে পারেননি, তারা অনলাইনে যুক্ত ছিলেন কিনা। বিসিবির এই পরিচালক এক শব্দের উত্তরে বলেন, 'ছিল।' এরপরই তাকে প্রশ্ন করা হয়, অনলাইনে সাকিব যুক্ত ছিলেন কিনা। এবারও একইভাবে উত্তর দেন তিনি, 'না'। এই প্রশ্নে তিনি যে রেগে যান, সেটা তার চোখে-মুখে স্পষ্ট ছিল। রাগান্বিত নাজমুল আবেদীন আঙুল উঠিয়ে প্রশ্ন করা সাংবাদিকের উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন, 'এনি মোর কোশ্চেন? সাকিবের সম্পর্কে?'
এর আগে সাবেক অধিনায়কদের আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ইনচার্জ ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক শাহরিয়ার নাফিস। তিনি বলেন, '(অধিনায়কদের) সবাই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। অনেকে খেলার কারণে দেশের বাইরে আছেন বা কাজের জন্য ব্যস্ত ছিলেন। তবে সবাই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। যারা আসতে পারেননি, তারাও যে আসতে পারছেন না, সেটা জানিয়েছেন। অনেকেই ছিলেন, অনেকে হয়তো ছিলেন না। তবে সবাই এটাকে গ্রহণ করেছেন।'