সাকিবকে মিস করার প্রশ্নে ‘বিরক্ত’ শান্ত

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে অনেকটা অতীত অধ্যায়ের মতো হয়ে উঠেছেন সাকিব আল হাসান। টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিলেও এখনও টেস্ট এবং ওয়ানডেকে বিদায় বলেননি অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। দল থেকে বাদ পড়েছেন এমনও নয়, এরপরও পাঁচ মাস ধরে বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলা হয়নি তার। কবে খেলবেন, আদৌ দলে ফেরা হবে কিনা তার; আপাতত এই প্রশ্নের উত্তর নেই কারও কাছে।
দেশের ইতিহাসের সেরা ক্রিকেটার লম্বা সময় ধরে দলের বাইরে, স্বভাবতই ঘুরেফিরে বিষয়টি সামনে চলে আসে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগেও আলোচনায় সাকিব। আইসিসির এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ সাকিবকে মিস করবে কিনা, অনেক ক্রিকেটারকেই এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মিশনে যাওয়ার আগে আজ আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনেও থাকলো প্রশ্নটি। আর তাতে কিছুটা বিরক্তই হলেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
বাংলাদেশ অধিনায়ক এই প্রশ্নের যৌক্তিকতা খুঁজে পান না। প্রশ্নটি আগে অনেকবার হয়েছে, সেটা মনে করিয়ে শান্ত জানালেন, টুর্নামেন্টের আগে এই আলোচনাটা করা ঠিক হবে না। কিছুটা বিরক্তি নিয়েই তিনি বলেন, 'সাকিব ভাইকে অবশ্যই মিস করব। এই প্রশ্ন কেন করলেন আমি জানি না। সবাই জানি এই উত্তর অনেক খেলোয়াড় দিয়েছে, অবশ্যই সাকিব ভাইকে মিস করবো, থাকলে ভালো হতো। অনেকবার উত্তর পেয়েছেন। আমার মনে হয় না এক টুর্নামেন্টে যাওয়ার আগে এই প্রসঙ্গে বলা যৌক্তিক হবে।'
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে ব্যাটে-বলে নেতৃত্ব দেওয়া সাকিব হন ম্যাচ সেরা। ১০ ওভারে ৫৭ রানে ২ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে করেন ৮২ রান। সাকিবের অবর্তমানে এভাবে তার ভূমিকা কে পালন করবেন? ওই ম্যাচে ৯০ রানের ইনিংস খেলা শান্ত বলেন, 'ওই ম্যাচে অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন। দলকে জেতাতে অনেক সহায়তা করেছেন। যে দায়িত্ব পাবে, সে-ই সাকিব ভাইয়ের রোল প্লে করবে।'
দলে কে নেই, সেটা নিয়ে না ভেবে স্কোয়াডের ওপর ভরসা রাখছেন শান্ত। দলে থাকা সবাইকে নিয়েই আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ অধিনায়ক। তিনি মনে করেন, একাই ম্যাচ জেতানোর মতো সামর্থবান ক্রিকেটার তার দলে আছে। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের ভাষায়, ' যে ১৫ জন স্কোয়াডে আছে, সবাইকে নিয়ে খুবই খুশি ও আত্মবিশ্বাসী। যে-ই খেলবে একা হাতে ম্যাচ জেতাতে পারে, এই সামর্থ্য সবার আছে।'
২০২৩ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলা ওই ম্যাচটিই জাতীয় দলের জার্সিতে সাকিবের শেষ ওয়ানডে। দেশসেরা এই অলরাউন্ডার সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভারত সফরেই। ওই সফরেই টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। এরপর দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট খেলে এই ফরম্যাটকে বিদায় জানানোর কথা বললেও রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সেটা সম্ভব হয়নি।
টি-টোয়েন্টি অবসরের ঘোষণার সময়ই সাকিব জানান, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে যাবেন। কিন্তু নানা বাস্তবতায় এই টুর্নামেন্টেও তার খেলা নিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা। এর মাঝেই কাউন্টি খেলতে গিয়ে ত্রুটিপূর্ণ বোলিংয়ের অভিযোগ ওঠে সাকিবের বিরুদ্ধে। ইংল্যান্ডে বোলিং পরীক্ষা দিয়ে উতরাতে না পারায় নিষিদ্ধ হন বোলার সাকিব। এরপর চেন্নাইয়ে পরীক্ষা দিয়েও অভিযোগমুক্ত হতে পারেননি বাঁহাতি এই স্পিনার। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তাকে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলাতে হতো বাংলাদেশকে। কিন্তু এই বিবেচনায় তাকে যোগ্য মনে করেনি বিসিবি।