রিজওয়ান-চার্লস ঝড়ে কুমিল্লার রেকর্ড গড়া জয়

লক্ষ্য যা ছিল, তা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জন্য রীতিমতো পাহাড় টপকানোর মতো। চোখ ধাঁধানো ব্যাটিং করা তামিম ইকবাল ও শেই হোপের সেঞ্চুরি ছুঁইছুঁই ইনিংসে বিশাল সংগ্রহ গড়ে খুলনা টাইগার্স। কিন্তু রান পাহাড়ও জয়ের জন্য যথেষ্ট হলো না। মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সেঞ্চুরিয়ান জনসন চার্লসের ব্যাটিং তাণ্ডবে অসাধারণ জয় তুলে নিলো বিপিএলের তিনবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা, গড়লো সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডও।
মঙ্গলবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খুলনা টাইগার্সকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিওক্টোরিয়ান্স। বিপিএলের এটা তাদের ষষ্ঠ জয়। ৯ ম্যাচে ছয় জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফ নিশ্চিত করলো কুমিল্লা। সমান ১২ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফে উঠলো সাকিব আল হাসানের দল ফরচুন বরিশালও। সিলেট স্ট্রাইকার্স আগেই নিশ্চিত করায় প্লে-অফে ওঠা দলের সংখ্যা এখন তিন। বাকি জায়গার জন্য লড়াই হবে বাকি চার দলের মধ্যে।
আরেকটি হারে প্লে-অফের পথ প্রায় বন্ধ হয়ে গেল খুলনার জন্য। ৯ ম্যাচে ২ জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ দল তারা। পরের তিন ম্যাচে জিতলেও তা যথেষ্ট নাও হতে পারে। অন্য ম্যাচগুলোর সমীকরণের ওপর নির্ভর করবে অনেক কিছু। কারণ প্লে-অফের রেসে থাকা বাকি দলগুলোর মধ্যে রংপুর রাইডার্সের ঝুলিতে ইতোমধ্যে ১০ পয়েন্ট। এখনও তাদের ম্যাচ বাকি চারটি। কেবল তারা যদি সব ম্যাচ হারে, তাহলেই কেবল বাকি তিন দলের সম্ভাবনা বেঁচে থাকবে। রংপুর একটি ম্যাচ জিতলেই উঠবে প্লে-অফে। কারণ বাকি দলগুলোর মধ্যে কারোরই ১২ পয়েন্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে খুলনা টাইগার্স। তামিম ইকবালের ৯৫ ও শেই হোপের ৯১ রানের সুবাদে ২ উইকেটে ২১০ রান তোলে খুলনা। জবাবে রিজওয়ান ঝড়ের পর বিধ্বংসী হয়ে ওঠা ম্যাচসেরা চার্লস অনবদ্য সেঞ্চুরি করে ১০ বল হাতে রেখেই কুমিল্লাকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন। বিপিএলের ইতিহাসের এটাই সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড। আগের সফল রান তাড়া ছিল খুলনার। ২০২০ সালের আসরে ঢাকা প্লাটুনের করা ২০৫ রান তাড়া করে জেতে খুলনা।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় কুমিল্লা। প্রথম ওভারেই হাতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন লিটন কুমার দাস। দলীয় ২২ রানে বিদায় নেন অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। এরপরও দলকে চাপ বুঝতে দেননি রিজওয়ান ও চার্লস। তৃতীয় উইকেটে ১২২ রানের জুটি গড়েন তারা, এ সময় খুলনার বোলারদের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দেন তারা। বিশেষ করে রিজওয়ান ছিলেন খুনে মেজাজে।
পাকিস্তানের এই ওপেনার ৩৯ বলে ৮টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৭৩ রান করে আউট হন। এরপর সব দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেওয়া চার্লস তাণ্ডব চালিয়ে দেন সিলেট স্টেডিয়ামে। ছক্কার বৃষ্টিতে দরকে এগিয়ে নিতে থাকেন গন্তব্যের দিকে। অন্য প্রান্তে খুশদিল শাহ ছিলেন স্রেফ দর্শকের ভূমিকায়। ৫৩ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করা চার্লস শেষ পর্যন্ত ৫৬ বলে ৫টি চার ও ১১টি ছক্বায় ১০৭ রানে অপরাজিত থাকেন। খুলনার শফিকুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ ও আমাদ বাট একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাটিং করা খুলনার হয়ে ২২ গজে রাজত্ব করেন তামিম ইকবাল ও অধিনায়ক শেই হোপ। ১৩ রানেই প্রথম উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে ১৮৪ রানের বিশাল জুটি গড়েন তারা। তামিম ৬১ বলে ১১টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৯৫ রান করেন তামিম। হোপ ৫৫ বলে ৫টি চার ও ৭টি ছক্কায় ৯১ রানে অপরাজিত থাকেন। আজম খান অপরাজিত ১২ রান করেন। কুমিল্লার নাসিম শাহ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত একটি করে উইকেট পান।