বড়দের বিশ্বকাপে বড় চ্যালেঞ্জ দেখছেন ‘ছোট্ট’ শামীম

ছোটদের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম কান্ডারি তিনি। যুব বিশ্বকাপ জিতে দলের সঙ্গে বীরের বেশে দেশে ফেরা শামীম হোসেন পাটোয়ারীর পরের সময়টা কেটেছে স্বপ্নের মতো। হাই পারফরম্যান্স ইউনিট (এইচপি), ঘরোয়া ক্রিকেট হয়ে দেড় বছরের মধ্যেই জাতীয় দলে তরুণ এই ক্রিকেটার। জিম্বাবুয়ে সফরে অভিষেকেই ঝড় তুলে বার্তা দিয়েছিলেন- শাসন করতে আসছেন তিনি।
পরের ম্যাচে মেলে সেটার প্রমাণ, ৩১ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে দলের জয়ে রাখেন বড় অবদান। এরপর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভালো সময় যায়নি শামীমের, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি। কিন্তু শামীমের ব্যাটিংয়ের বারুদ, ফিল্ডিংয়ের ক্ষিপ্ততা আর বোলিং সামর্থ্য তো প্রমাণিতই। তাই কিছু না ভেবেই তাকে নিয়ে নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে।
বিশ্বকাপের মতো আসরে খেলার জন্য ডাক পাওয়ায় রোমাঞ্চিত ২১ বছর বয়সী শামীম। দ্রুত জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়ার স্বপ্ন পূরণ করে বিশ্বজয়ী এই তরুণ এবার বড়দের আসরে খেলার অপেক্ষায়। এই আসরে অন্যান্য দলে কারা খেলবেন, তা জানা আছে তার। এ কারণে বড় চ্যালেঞ্জ দেখছেন সম্ভাবনাময় এই অলরাউন্ডার।
আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বড় বড় ক্রিকেটারদের সঙ্গে টক্কর দিয়ে দলকে এগিয়ে নিতে হবে; এতে ভরকে যাচ্ছেন না শামীম। ব্যাপারটা তার কাছে রোমাঞ্চকর, চ্যালেঞ্জের। বৃহস্পতিবার দল ঘোষণার পর তিনি বলেন, 'বিশ্বকাপে যারা অন্যান্য দলে খেলবে, বড় বড় খেলোয়াড়দের সাথে খেলব। ওদের সাথে খেলাটা আমার জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করবে।'
বয়সভিত্তিক আর জাতীয় দলের পার্থক্য এরই মধ্যে বুঝে ফেলেছেন শামীম। তার ভাষায়, 'অনূর্ধ্ব-১৯ দল আর জাতীয় দলের মধ্যে অনেক পার্থক্য। আমরা যখন যুব দলে খেলি, তখন প্রতিপক্ষের বোলাররা ১৩৫ কি.মি এর আসে পাশে বোলিং করতো। ১৪০ কি.মি. বেগে খুব কমই বোলিং করে। জাতীয় দলে যখন খেলি, তখন বেশিরভাগ সময় ১৪০ থেকে ১৪৫ কি.মি গতির বল খেলতে হয়। আবার ১৫০ কি.মি বেগের বলও খেলতে হয়। এখানে অনেক পরিবর্তন থাকে। দর্শক, ভক্ত সব কিছুই অনেক ভিন্ন মনে হয়।'
দ্রুত জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়ার লক্ষ্য পূরণ হওয়ার দুই মাসের মাথায়ই বিশ্বকাপ দলে ডাক পেলেন শামীম। এ নিয়ে উচ্ছ্বাসের শেষ নেই তার, 'যখন যুব বিশ্বকাপ খেলি, তখন জাতীয় দল অত মাথায় ছিল না। খেলাতেই ফোকাস ছিল। আর চিন্তা ছিল যে যতো তাড়াতাড়ি জাতীয় দলে আসা যায়। জাতীয় দলে ডাক পেয়েছি, অনেক আনন্দিত আমি।'
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে জায়গা হয়েছে যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের আরেক সদস্য শরিফুল ইসলামের। শামীমের বিশ্বাস, তাদের দল থেকে আরও অনেক ক্রিকেটার জাতীয় দলে জায়গা করে নেবেন। চাঁদপুরের টিভি টুর্নামেন্ট থেকে জাতীয় দলে উঠে আসা এই ক্রিকেটার বলেন, 'আমরা অনূর্ধ্ব-১৯ দলের দুই জন সদস্য আছি। শরিফুল এবং আমি আছি। এটা অনেক আনন্দের বিষয়। আশা করি আমাদের অনূর্ধ্ব-১৯ দলে থেকে আরও ক্রিকেটার জাতীয় দলে আসবে।'
দল দারুণ ছন্দে, এমন ছন্দে থাকা দল যেকোনো প্রতিপক্ষকে হারিয়ে দিতে পারে বলে বিশ্বাস শামীমের। তিনি বলেন, 'আমরা শেষ তিনটি সিরিজে অনেক ভালো করেছি। জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড; তিনটি সিরিজেই জেতার কারণ টিম স্পিরিট ভালো ছিল। সবার মধ্যে বন্ধনও ভালো ছিল। আমরা কেউ হাল ছাড়তে চাইনি। একটি দলের মধ্যে টিম স্পিরিটটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটা থাকলে যেকোনো দলকেই হারানো যায়।'