ফিফার দ্বিবার্ষিক বিশ্বকাপের পরিকল্পনা নিয়ে উয়েফার উদ্বেগ প্রকাশ

দুই বছর পর পর বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে 'গভীর উদ্বেগ' প্রকাশ করেছেন উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্দার সেফেরিন । উয়েফা ও অন্যান্য ফুটবলীয় সংস্থার মতামত না নিয়েই এরকম পরিকল্পনা করায় ফিফার ক্ষুরধার সমালোচনাও করেছেন উয়েফা প্রধান।
দ্বিবার্ষিক বিশ্বকাপের পরিকল্পনা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই উয়েফা এবং এর অন্তর্ভুক্ত ক্লাব ও দেশগুলোর সাথে ফিফার রেষারেষি চলছে। ইউরোপীয় ফুটবলকে দমিয়ে নিজেরা দ্বিগুণ মুনাফা লুটতেই ফিফা এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
ফুটবল সাপোর্টার্স ইউরোপকে (এফএসই) লেখা এক চিঠিতে সেফেরিন বলেন, ফুটবলের সম্ভাব্য ক্ষতি সম্পর্কে "যথেষ্ট যৌক্তিক এবং গুরুত্বপূর্ণ" উদ্বেগ রয়েছে তাদের।
এফএসই'র নির্বাহী পরিচালক রনান ইভেইনকে সেফেরিন বলেন, "ফিফার পরিকল্পনা নিয়ে উয়েফা এবং এর অধীনস্থ জাতীয় সংস্থাগুলোর গুরুতর অভিযোগ এবং উদ্বেগ রয়েছে।" এ ব্যাপারে ফিফাকে 'চেপে ধরার এবং জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করার' আশ্বাসও দেন উয়েফা প্রধান।
সেফেরিন আরও বলেন, "আমি এটা বলে আশ্বস্ত করতে চাই যে, এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে উয়েফা আপনার এবং ভক্তদের পাশে আছে। আমাদের অবশ্যই ফুটবলের স্বার্থ রক্ষার জন্য কাজ করতে হবে এবং মূল অংশীদার হিসাবে ভক্তদের অবস্থানকে শক্তিশালী করতে হবে।"
দুই বছর পর বিশ্বকাপ আয়োজনের ধারণাটি প্রথম আসে সৌদি আরব থেকে, গত মে মাসে। সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠভাজন, ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো ইতোমধ্যে এই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন।
এখন মাইকেল ওয়েন এবং ইয়া ইয়া তোরের মতো সাবেক ফুটবলারদের ব্যবহার করে এই প্রকল্পের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করছে ফিফা। গত শুক্রবার, ফিফার গ্লোবাল ফুটবল ডেভেলপমেন্টের প্রধান আর্সেন ওয়েঙ্গার ফরাসি পত্রিকা লেকিপকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, তিনি আশা করছেন ডিসেম্বরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে অন্যান্য কোনো ফুটবলীয় সংস্থার পরামর্শ ও মতামত না নিয়ে ফিফা এরকম বড়সড় একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিকল্পনা করায় বেশ ক্ষিপ্ত উয়েফা প্রধান। ফিফা কিছু সাবেক খেলোয়াড় ও কোচদের দিয়ে প্রচারণা চালাতে থাকলেও এখনো কোনো ফেডারেশন, জাতীয় সংস্থা, লিগ ও ক্লাবের সাথে এই পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়নি বলে জানান সেফেরিন।
এর আগে ইভেইন উয়েফা প্রধানকে লেখা এক চিঠিতে জানিয়েছিলেন, ফুটবল ভক্তদের সংস্থাগুলো এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে স্থানীয়, ঘরোয়া, মহাদেশীয় ও আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতাগুলোর ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে বলে মনে করছেন তিনি। তখন ইউরো, আফকন, এশিয়ান কাপের মতো মহাদেশীয় প্রতিযোগিতাগুলোও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ইভেইন বলেন, সিংহভাগ সমর্থকই বিশ্বকাপ এতো পছন্দ করে, কারণ এটি চার বছর পর পর আবির্ভূত হয়। বর্তমান পরিকল্পনা বিশ্বকাপের ঐতিহ্যবাহী আবহকেও নষ্ট করে দিবে বলে মনে করেন তিনি।
- সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান