নাটকীয় ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদের ড্র

যে সমীকরণ ছিল, তাতে শিরোপা জয়ের পথে এগিয়ে যেতে জয়ের বিকল্প ছিল না রিয়াল মাদ্রিদের। লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের চারে থাকা সেভিয়াও অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছিল। শুরু থেকেই চললো জমজমাট লড়াই। মাঝে আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ আর নাটকীয়তা, শেষটা হলো চরম রোমাঞ্চকর। কিন্তু জয়ের দেখা পেলো না রিয়াল।
রোববার রাতে ঘরের মাঠ এস্টেডিও ডি স্টেফানো স্টেডিয়ামে সেভিয়ার বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। রিয়ালের হয়ে গোল করেন মার্কো অ্যাসেনসিও। বাকি গোলটি সেভিয়ার দিয়েগো কার্লোসের ভুলে পায় রিয়াল। টনি ক্রুসের নেওয়া শট কার্লোসের পায়ে লেগে বল জালে জড়ায়। সেভিয়ার পক্ষে গোল করেন ফার্নান্দো ও ইভান রাকিটিচ।
লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ওঠার সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারলো না রিয়াল। ৩৫ ম্যাচে ৭৭ পয়েন্ট নিয়ে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদই শীর্ষে থেকে গেল। সমান ম্যাচে ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে যথাক্রমে তালিকার দুই ও তিন নম্বরে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা। ৭১ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে সেভিয়া।
২২তম মিনিটে এগিয়ে যায় সেভিয়া। ডান দিক থেকে সতীর্থের ক্রসে ইভান রাকিটিসের হেড জটলার মধ্যে খুঁজে নেয় ফার্নান্দোকে। ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে দারুণ শটে বল জালে জড়ান ব্রাজিলিয়ান এই মিডফিল্ডার। ৩২তম মিনিটে সমতায় ফিরতে পারতো রিয়াল। ডি-বক্সের বাইরে থেকে আচমকা বাঁ পায়ে শট নেন করিম বেনজেমা। লাফিয়ে ফিস্ট করে কর্নারের বিনিময়ে দলকে বিপদমুক্ত করেন সেভিয়ার গোলরক্ষক ইয়াসিনে বোনো।
দ্বিতীয়ার্ধে অন্য রিয়াল মাদ্রিদের দেখা মেলে। এই অর্ধে জিনেদিন জিদানের শিষ্যদের অনেক বেশি তেজদ্দীপ্ত দেখিয়েছে। একের পর এক আক্রমণে সেভিয়ার রক্ষণভাগ কাঁপিয়ে দিতে থাকে তারা। ৬৫তম মিনিটে দারুণ একটি আক্রমণ সাজায় স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ডি-বক্সের মাঝে বল পেয়ে ভিনিসিউসের দিকে বাড়ান টনি ক্রুস। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেননি।
এক মিনিট পরই স্বস্তি ফেরে রিয়াল শিবিরে। নেপথ্য কারিগর টনি ক্রুস। ডি-বক্সের বাইরে থেকে লম্বা করে বল বাড়ান জার্মান এই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার। তৈরি হয়ে আসা বলে প্লেসিং শটে বল সেভিয়ার জালে জড়ান স্প্যানিশ উইঙ্গার মার্কো অ্যাসেনসিও।
গোল হজম করে গতি বাড়ায় সেভিয়া। ম্যাচের ৭২তম মিনিটে প্রথম কর্নার পায় তারা। জটলার মধ্যে সুযোগ তৈরি হলেও গোল আদায় করতে পারেনি দলটি। পাল্টা আক্রমণে বল নিয়ে সোজা সেভিয়ার ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন বেনজেমা। তার সামনে ছিল কেবল সেভিয়ার গোলরক্ষক বোনো।
দলকে বাঁচাতে বেনেজমাকে ফাউল করে বসেন বোনো, পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। এ সময় তৈরি হয় নাটকীয়তা। বেনজেমা যখন বল হাতে নিয়ে পেনাল্টি নেওয়ার অপেক্ষায়, সেভিয়া তখন উল্টো পেনাল্টির দাবিতে। ভিডিও অ্যাসিসটেন্ট রেফারির (ভিএআর) সাহায্য নিয়ে সেভিয়ার পক্ষে পেনাল্টি দেন রেফারি।
টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় সেভিয়ার নেওয়া কর্নার ফেরানোর চেষ্টায় থাকা রিয়ালের ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার এদের মিলিতাওয়ের হাতে বল লেগেছে। সুযোগ পেয়ে মিস করেনি সেভিয়া। স্পট কিক থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন ইভান রাকিটিচ।
ফের পিছিয়ে পড়ে রিয়াল। এতে যেন আরও গতি বাড়ে লা লিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। সমতায় ফিরতে বারবার সেভিয়ার রক্ষণে হানা দিতে থাকে তারা। কিন্তু গোলের দেখা মিলছিলো না। যোগ করা সময়ে (৯৪তম মিনিট) গিয়ে সমতাসূচক গোলটি পায় রিয়াল।
টনি ক্রুসের নেওয়া শট সেভিয়ার দিয়েগো কার্লোসের পায়ে লেগে বল জড়িয়ে যায়। শেষ বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তে সম্ভাবনা জেগেছিল রিয়ালের। কিন্তু কাসেমিরোর নেওয়া দ্রুত গতির শট গোলবার ঘেষে বেরিয়ে যায়।