ঢাকা মেডিকেল কলেজের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ

ঢাকা মেডিকেল কলেজের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শনিবার (২১ জুন) কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
শিক্ষার্থীদের আগামীকাল দুপুর ১২ টার মধ্যে হোস্টেল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পেশাগত এমবিবিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী এবং বিদেশি শিক্ষার্থীরা এর আওতামুক্ত থাকবেন।
কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় আজ এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আবাসনের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এ ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো: কামরুল আলম টিবিএসকে বলেন, 'ছাত্ররা এখনই নতুন হোস্টেল চাচ্ছে। তারা ঝুঁকির মধ্যে আছে। কিন্তু এটা তো এখনই সাথে সাথে বানানো সম্ভব নয়।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত। আমরাও চাই ঢাকা মেডিকেল কলেজের নতুন হোস্টেল হোক। তারাও ঝুঁকির মধ্যে থাকুক তা আমরা চাই না। সেজন্য সব হল বন্ধ করে এবং নতুন অ্যালটমেন্ট অনুসারে তাদের হলে তোলা হবে।'
একইসাথে দ্রুতই মেডিকেল কলেজের শিক্ষা-কার্যক্রম শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।
তবে শিক্ষার্থীরা হল ছাড়ার নির্দেশ মানবেন না বলে জানিয়েছেন। কলেজের কে-৭৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল নোমান টিবিএসকে বলেন, 'আমরা মনে করি, আন্দোলন দমনের উদ্দেশ্যেই হল বন্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমরা হল ত্যাগ করব না। যতক্ষণ না পর্যন্ত দাবি আদায় হচ্ছে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।'
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের ফজলে রাব্বী হলের ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। দেয়াল-পিলারের অবস্থাও খারাপ। সেজন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরেই কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে নতুন হলের জন্য দাবি জানিয়ে আসছি। নতুন হল না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।'

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৮ মে ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিরাপদ ক্যাম্পাস ও আবাসনের ৫ দফা দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন ঢামেকের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে দাবি আদায়ে ৬ জুন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন তারা।
বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজের পুরোনো একাডেমিক ভবন, ডা. ফজলে রাব্বি ছাত্রাবাস এবং ডা. আলীম চৌধুরী ছাত্রীনিবাস বর্তমানে এতটাই জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে যে, সেখানে পাঠদান ও আবাসন শিক্ষার্থীদের জীবনের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে।
বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, 'চলমান এই পরিস্থিতিতে বিকল্প আবাসন ব্যবস্থা ও জরুরি পদক্ষেপ ছাড়া স্বাভাবিক একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়েই অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করছি।'
তারা পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে—
-
জরাজীর্ণ ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস নির্মাণে দ্রুত বাজেট পাস,
-
নতুন আবাসন নির্মাণের আগ পর্যন্ত বিকল্প আবাসনের ব্যবস্থা,
-
বিকল্প আবাসনের জন্য পৃথক বাজেট ও দ্রুত বাস্তবায়ন,
-
ঝুঁকিপূর্ণ একাডেমিক ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা ও ক্লাস কার্যক্রম অন্যত্র স্থানান্তর,
-
নতুন ভবন নির্মাণে বাজেট পাস ও কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা।